Salam

সালামুন আলাইকুম কিভাবে “আসসালামু আলাইকুম হলো?!!
আসুন দেখি অভিবাদন (সালাম প্রদান) সর্ম্পকে আল্লাহ্ কুরআনে কি বলেছেন। সূরা ফুরকান ২৫:৬৩- “রাহমানের বান্দা তাহারাই,যাহারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাহাদেরকে যখন অজ্ঞ (কুরআনের জ্ঞান যাদের নাই) ব্যক্তিরা সম্বোধন করে,তখন তাহারা বলে ‘সালাম’;” আরও দেখুন সূরা কাসাস ২৮:৫৫- “উহারা (মু’মিনগণ) যখন অসার বাক্য (লাওয়াল হাদিস) শ্রবণ করে তখন উহারা তাহা উপেক্ষা করিয়া চলে এবং বলে, আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য; তোমাদের প্রতি ‘সালাম’ (সালামুন আলাইকুম)। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাহি না।‌ আরও দেখুন সূরা যারিয়াত ৫১:২৪,২৫- “তোমার নিকট ইবরাহীমের সন্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত আসিয়াছে কি? যখন উহারা (ফিরিশতারা) তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বলিল, ‘সালাম’। উত্তরে সে (ইবরাহীম) বলিল, ‘সালাম’।ইহারা তো অপরিচিত লোক।‌”আল্লাহ্ তার অভিমুখী বান্দাদের সম্ভাষণ করেছেন শুধু মাত্র ‘সালাম’ বলে এবং আদেশ করেছেন উহার অনুরূপ অথবা উহা অপেক্ষা উত্তম প্রত্যাভিবাদন করতে তা যদি কুরআন থেকে পাওয়া যায়। উপরোক্ত আয়াত মালা থেকে জানলাম যাদের কুরআনের জ্ঞান নাই ও যারা অপরিচিত অর্থাৎ ভিন্ন ধর্ম বা ইসলাম ধর্মের ভিন্ন মতবাদে (?) বিশ্বাসীদেরকে এবং যাদেরকে আমরা চিনিনা তাদেরকে অভিবাদন করতে হবে ‘সালাম’ বলে। বহুবচনের ক্ষেত্রে হবে ‘সালামুন আলাইকুম’। আমাদের ধর্মকে বিভিন্ন মতবাদে বিভক্ত করে যারা কুরআনের আয়াতকে ব্যর্থ করতে চায় তাদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। আল্লাহ্ বলেছেন সূরা সাবা ৩৪:০৫- “যাহারা আমার আয়াতকে ব্যর্থ করিবার চেষ্টা করে তাহাদের জন্য রহিয়াছে ভংয়কর মর্মন্তুদ শাস্তি।‌”কুরআন দ্বারা আল্লাহ্ সত্য শিক্ষা দেন আর এই অভিবাদন করা উত্তম দোয়া (সাল্লি/দুরূদ)।দেখুন ইবরাহীম তার পিতাকে মূর্তি পূজা বর্জন করতে বলে যখন ব্যর্থ হলো তখন বিদায় কালে কি বলে দোয়া (অভিবাদন) করেছিল,সূরা মারইয়াম ১৯:৪৭- “ইবরাহীম বলিল, ‘তোমার প্রতি সালাম’ (সালামুন আলাইকা)।‌আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিব,নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।‌”ইসলামী ফাউন্ডেশন কতৃর্ক ১০০৫ নং টিকায় কাশশাফ,জালালায়ন,কুরতবী নামের ব্যক্তিদের করা হাদিস উল্লেখ্য করে বলা হয়েছে ‘সালামুন আলাইকা’ এর অর্থ অভিবাদন না ‘বিদায় গ্রহণ’।কিন্তু সালাম শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে শান্তি।দেখুন সূরা নাহল ১৬:৩২- “ফিরিশতাগণ যাহাদের মৃত্যু ঘটায় পবিত্র থাকা অবস্থায়।ফিরিশতাগণ বলিবে, ‘তোমাদের প্রতি শান্তি’ (সালামুন আলাইকুম)।তোমরা যাহা করিতে তাহার ফলে জান্নাতে প্রবেশ কর।‌” এরপরও কি বলা যায় কতিপয় ব্যক্তিগণের করা ব্যাখ্যা সঠিক ?আল্লাহ্ বলেছেন সূরা কিয়ামা: ৭৫:১৭,১৮,১৯- “ইহা (কুরআন) সংরক্ষণ ও পাঠ করাইবার দায়িত্ব আমারই। সুতারাং যখন আমি উহা পাঠ করি তুমি সেই পাঠের অনুসরণ কর,অত:পর ইহার (কুরআনের) বিশদ ব্যাখ্যার (তাফসিরের) দায়িত্ব আমারই (আল্লাহরই)।
উপরক্ত আয়াতগুলো থেকে জানলাম কুরআন সংরক্ষণ করার দায়িত্ব যেমন আল্লাহর তেমনি কুরআনের ব্যাখ্যা করার দায়িত্বও আল্লাহর।এক কথাই বলা যায় কুরআন নিজেই নিজের ব্যাখ্যা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ এক কিতাব।কুরআনের এক আয়াতের ব্যাখ্যা অনুরূপ আনেক আয়াত যা একই জায়গায় নেই।এজন্য কুরআন সঠীকভাবে বুঝতে হলে গভীর মনোনিবেশের সাথে সন্ধানী হৃদয় দ্বারা ইহা পাঠ করতে হবে।কুরআন বুঝতে অন্য বইয়ের সাহায্য নেওয়া অর্থাৎ কুরআনকে ঐ বইয়ের কাছে ছোট করা। অতএব আল্লাহর বিধানে পাওয়া সালাম ব্যবস্থাই সঠিক। দেখুন সূরা মুজাদালা ৫৮:০৮- “তুমি কি তাহাদেরকে লক্ষ্য কর না,যাহাদেরকে গোপন পরামর্শ করিতে নিষেধ করা হইয়াছিল ? অত:পর উহারা যাহা নিষিদ্ধ তাহারই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচরণ,সীমালংঘণ ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণের জন্য কানাকানি করে। উহারা যখন তোমার (মুহাম্মদের) নিকট আসে তখন উহারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন করে যদ্বারা আল্লাহ্ তোমাকে অভিবাদন করেন নাই।উহারা মনে মনে বলে,আমরা যাহা বলি তাহার জন্য আল্লাহ্ আমাদেরকে শাস্তি দেন না কেন ? জাহান্নামই উহাদের জন্য যথেষ্ঠ,যেখানে উহারা প্রবেশ করিবে,কত নিকৃষ্ট সেই আবাস !”উক্ত আয়াতে বুঝা যায় যারা মুহাম্মদ (সা:) এর বিরুদ্ধাচরণে কানাকানি করতো তারাই আমাদের অজ্ঞতাবসত সঠিক সালাম ব্যবস্থাকে বিকৃত করে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু ওয়া মাগফিরাতুহু ওয়া জান্নাতুহু’ বানিয়েছে।অথচ আল্লাহ্ বলেছেন সূরা হুদ ১১:১১২,১১৩- “সুতরাং তুমি (মুহাম্মদ) যেভাবে আদিষ্ঠ হইয়াছ তাহাতে স্থির থাক এবং তোমার সহিত যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারাও স্থির থাকুক; এবং সীমালংঘন করিও না।তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই তিনি তাঁহার সম্যক দ্রষ্টা।যাহারা সীমালংঘন করিয়াছে তোমরা তাহাদের প্রতি ঝুঁকিয়া পড়িও না; পড়িলে অগ্নি তোমাদিগকে স্পর্শ করিবে।এই অবস্থায় আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক (আউলিয়া) থাকিবে না এবং তোমাদের সাহায্য করা হইবে না।‌”আমরা উল্লেখ্য ২৫:২৩ > ৫১:২৫ > ১৯:৪৭ > ৬:৫৪ >১৬:৩২ আয়াতগুলো থেকে জানলাম অপরিচিত ও অজ্ঞদের ক্ষেত্রে শুধু ‘সালাম’।যারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাসী ও পরিচিত মু’মিনদের ক্ষেত্রে একজন হলে ‘সালামুন আলাইকা’ এবং অনেককে একত্রে ‘সালামুন আলাইকুম’ বলতে হবে।
আরবী ব্যাকারণ লক্ষ্য করলে দেখা যায় ‘কা’ শব্দটি একবচন এবং ‘কুম’ শব্দটি বহুবচনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে।কিন্তু আমরা একজন হোক অথবা অনেকজন হোক ‘কুম’ শব্দটা ব্যবহার করে থাকি।এবং আল্লাহর শিক্ষা দেওয়া ‘সালাম’ শব্দের পূর্বে ‘আস’ যোগ করে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলি।উপরে উল্লে্যখীত ১১:১১২ নং আয়াতে আল্লাহ্ যেভাবে আদেশ করেছেন তাতে স্থির থাকতে বলা হয়েছে।অথচ আমরা বিকৃত শব্দটা বিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করে থাকি।কারণ বিকৃত শব্দটা ছোট্ট ক্ষত থেকে ক্যন্সারের মতো আজকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছে।মিথ্যা বারবার প্রচার হওয়ার কারণে তা আজ সত্যে পরিণত হয়েছে।আমাদের ধর্মের যারা শত্রু তারা পয়যনের মতো বিকৃত শব্দটাকে তিল তিল করে আমাদের ধর্মে ঢুকিয়ে দিয়েছে।যা আজকে মহামারি রূপ নিয়েছে।এখন সত্যই যেন মিথ্যা !!সত্য হারায়নি,সে তো কুরআনে আছে।কিন্তু আমরা কুরআন সমন্ধে অজ্ঞ। আসুন নিজ মাতৃভাষায় কুরআন পড়ি সত্য জানি। সালাম সর্ম্পকিত আয়াতগুলো মিলিয়ে নিন। (৭:৪৬) (১০:১০) (১১:৬৯) (১৩:২৪) (১৪:২৩) (১৫:৫১,৫২) (১৯:৬২) (২৪:৬১) (২৭:৫৯) (৩৩:৪৪) (৩৭:৭৯,১০৯,১২০,১৩০,১৮১) (৩৯:৭৩) (৪৩:৮৮,৮৯) (৫৬:২৫,২৬,৯০,৯১)। আমরা মিলাদ পাঠের সময় বলি ‘ইয়া নবী সালামু আলাইকা’ অথচ একে অপরের সাক্ষাতে বলি ‘আসসালামু আলাইকুম’ যদিও একজনকে দিয়ে থাকি।(মিলাদ পাঠ আরও একটি বিদ’আত)সূরা বাকারা ২:৪২- “তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া-শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।‌”আমরা প্রচলিত কথায় শুনতে পায় প্রথম যে সালাম দিবে সে নাকি ৯০ (নব্বইটি) নেকি পাবে এবং সালামের উত্তর দিলে ১০ (দশটি) নেকি পাবে।কিন্তু বিকৃত করা শব্দ ব্যবহার করে সালাম দিলে নেকি পাওয়া যাবে কি ?যদিও নেকির পরিমান করা মানুষের মনগড়া কাল্পনিক ধারণা মাত্র।সম্ভাসন বা সালাম দেওয়া সামাজিকতা ,দোয়া ও একটি সৎকাজ।কুরআনে পাওয়া যায় কেউ একটি সৎকাজ করলে তাকে দশগুন নেকি দেওয়া হবে। বিশেষভাবে সালামের জন্য আল্লাহ্ কতটুকু নেকি দিবেন তা কুরআনের কোন যায়গায় উল্লেখ্য নাই।যা কুরআনে নাই তার কোন ভিত্তি নাই।সুতরাং কুরআন পড়ে অসত্য ও বিকৃত করা বিষয়দি বর্জন করি।সূরা নিছা ৪:৫৬- “যাহারা আমার আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে তাহাদেরকে অগ্নিতে দগ্ধ করিবই; যখনই তাহাদের চর্ম দগ্ধ হইবে তখনই উহার স্থলে নতুন চর্ম সৃষ্টি করিব,যাহাতে তাহারা শান্তি ভোগ করে।নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞাময়।‌”

Courtesy:fb

Seven pares-15:87

অনুবাদেদুর্নীতি #১৫ঃ৮৭

সুরা হিজরঃ৮৭

প্রচলিত ভুয়া অনুবাদঃ “আমি আপনাকে সাতটি বার বার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কোরআন দিয়েছি।”

এই বাক্যে আরবিতে “আয়াত” শব্দটি নেই। তাদের মনগড়া অনুবাদ ঢুকাতে অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করেছে।

সঠিক অনুবাদঃ

এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি (ওয়া লাক্বাদ আতাইনাকা)

অসংখ্য (সাবাআ, আরবরা সাবআ মানে শুধু সাত সংখ্যা বোঝে না, সাত, সত্তর ইত্যাদি সংখ্যা দিয়ে তারা অসংখ্য কিছু বোঝায়। বাঙালিরা শতবার বলতে অসংখ্যবার বোঝায়। যেমন “আমি তোমাকে ১০০ বার বলছি এটা করো না” বা “একবার না পারিলে দেখো শতবার” ইত্যাদি। এর মানে এই না যে কেউ গুণে গুণে ১০০ বার কাজটা করতে নিষেধ করছে বা না পরলে গুণে গুণে একশবারই চেষ্টা করতে হবে।)

আল মাছানি থেকে (মিন আল মাছানি)

এবং মহান কুরান (ওয়া কুরাআন আল আজিম)

এখন মিন আল মাছানি বুঝলেই বাক্যটা বোঝা যাবে।

মাছানি আসছে মাছনা বা দ্বিগুণ বা দুই থেকে। মাছানি মানেও সবসময় সংখ্যা বোঝায় না। এখানে আবার আল-মাছানি আছে। তার মানে এটা নির্দিষ্ট কোনো কিছু যা থেকে রাসুলকে অসংখ্য কিছু দেয়া হয়েছে এবং কুরান দেয়া হয়েছে।

৩৯ঃ২৩ এবং ১৫ঃ৮৭ তে মাছানি মানে অনুবাদ করছে পুনরাবৃত্ত বা যা বার বার আবৃত্তি করা যায়। এটা প্রচলিত অনুবাদ। কুরআন আবৃত্তি বা সুর করে পড়ার জন্য দেয়নি। কুরান মানেই যা বার বার পাঠ করা যায়। কাজেই মাছানি মানে পুনরাবৃ্ত্ত অনুবাদ করলে সেটা বাক্যের গঠনে বাহুল্য দোষে দুষ্ট হবে। তাছাড়া কোন্ ৭টি আয়াত- সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। সেই ৭ আয়াত বারবার পড়লে কি উপকার হবে সেটাও কেউ জানেনা। কাজেই এসব ভুয়া অনুবাদের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

আল-মাছানি অর্থ এখানে “দুই জনের দল।” আল্লাহ রাসুলকে দিয়েছেন অসংখ্য (সাবাআ) দুই জনের দল (মিন আল-মাছানি)।

কেন দিয়েছেন? কারণ তাদের মিশন/দায়িত্ব ছিল কুরান প্রচার করা। এরা ছিলেন নবী, এরা ৩ঃ৮১ অনুসারে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে রাসুল কুরান নিয়ে আসলে ঈমান আনবে এবং রাসুলকে কুরান প্রচারে সাহায্য করবে নিজ নিজ গোত্রে। ফলে এরাই পরিণত হবে নিজ নিজ গোত্রের রাসুলে।

কোনো প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর সময় সকল কোম্পানিই অসংখ্য ছোট ছোট দল গঠন করে তাদের প্রোডাক্ট প্রচার করতে পাঠায় মানুষের দ্বারে দ্বারে।

এবার ১৫ঃ৯১ পড়েন। প্রসংগ ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এরা কুরানকে টুকরো টুকরো করেছে। এদের কথাই ২৩ঃ৫১-৭২ এ বলা হচ্ছে। ২৩ঃ৫১ তে সম্বোধিত রাসুলগণ দলে দলে বিভক্ত হয়েছে ২৩ঃ৫৩ তে। সংগৃহীত

https://www.facebook.com/share/p/JNNnRiLi1EbMVZDM/?mibextid=oFDknk

Quran for All human beings

“আর এভাবেই আমি তোমার ওপর আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করেছি যাতে তুমি মূল জনপদ ও তার আশপাশের বাসিন্দাদেরকে সতর্ক করতে পার, আর যাতে ‘একত্রিত হওয়ার দিন’ এর ব্যাপারে সতর্ক করতে পার, যাতে কোন সন্দেহ নেই, একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল জ্বলন্ত আগুনে।” আল কোরআন ৪২

এখানে বলা হয়েছে ” মূল জনপদ ও তার আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক কর।
মানে আপনাদের সম্মানিত রাসূল মক্কা মদিনার সতর্ককারী, পুরো পৃথিবীর না। !!!????

” আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।” আল কোরআন ২৬-১১৪
মানে কোরআন কি শুধু মহানবীর আত্মীয়দের জন্য????!!!!

তাহলে কেন পবিত্র কোরআনে ” হে মানবজাতি” আহবান আছে??!!!!

কোরআনের বহু আয়াতে ” হে মানবজাতি বা হে মানুষ ” শীর্ষক সম্বোধন এর অন্যতম প্রমাণ। একই কারণে নিজেকে ” বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ” ও “মানবজাতির জন্য সতর্ককারী” —– এসবের মানে কি????!!!!!

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। আল কোরআন ৪৯-১৩

“O mankind! verily there hath come to you a convincing proof from your Lord: For We have sent unto you a light (that is) manifest. (The Noble Quran, 4:174)

আর আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার কওমের ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়, সুতরাং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখান। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল কোরআন ১৪-৭

এটা তো কেবল বিশ্বাবাসীদের জন্যে উপদেশ, Verily, this (the Qur’ân) is no less than a Reminder to (all) the ’Alamîn (mankind and jinns) (The Noble Quran, 81-27)

এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র। “This is no less than a Message to (all) the Worlds. (The Noble Quran, 38-87)

“আমি আমার বান্দার (মোহাম্মাদের) প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকলে তোমরা তার মত কোন সূরা আনো। আর যদি সত্যবাদী হও তাহলে এ কাজের জন্য আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সব সাক্ষীকে আহ্বান কর।” (আল কোরআন ২-২৩)
“আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সেই আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।” (আল কোরআন ২-২৪).

Nas(mankind/people):

https://www.islamawakened.com/quran/Quran-roots/Eng/Nun-Waw-Siin-1118.html

Salat of previous Nabies

বলা হয়ে থাকে “সালাত” হচ্ছে ‘নামাজ’, বলা হয় “নামাজ”ই মিরাজের বড় প্রাপ্তি!
তাই যদি হয় পূর্বের নবীগনের ‘সালাত’ কি??!

ইব্রাহিমের সালাত।
২:১২৫ যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের ( ﻣُﺼَﻠًّﻰ ) জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।

মূসা ও হারুনের সালাত।
১০:৮৭ আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং সালাত কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর।

ঈসার সালাত।
১৯:৩১ আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।

শুয়েবের সালাত।
১১:৮৭ তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার সালাত কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।

জাকারিয়ার সালাত।
৩:৩৯ যখন তিনি কামরার ভেতরে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়া সম্পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।

মারিয়ামের সালাত।
৩:৪৩ ‘হে মার্‌ইয়াম! আপনার রবের অনুগত হন এবং সিজদা করুন আর রুকু‘ কারীদের সাথে রুকূ‘ করুন।’

বণী ইস্রাইলের সালাত।
২:৪৩ আর সালাত কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।

লুকমানের সালাত।
৩১:১৭ হে বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।

……

Ramadan?

রমজান রোজা নয়; রোজাও রমজান নয়।

আরবিতে ‘সিয়াম’, পার্শীতে ‘রোজা’ আর বাংলায় ‘উপবাস’বা কৃচ্ছ সাধনা। রমজান আরবি চন্দ্র মাসের নবম ও সবচেয়ে ছোট মাসটির নাম।

বিশ্বে বর্ষ বা সময় গণনার প্রধান দু’টি উৎস: সৌর বর্ষ ও চন্দ্র বর্ষ। ছোট বেলার ভূগোলে শেখা যে গ্রহ-নক্ষত্রের ঘুর্ণন, আবর্তন-বিবতনের কারণে পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে দিবারাত্র ও বার্ষিক গতির ফলে প্রায় ৩৬৫ দিনে বছর ও স্থানভেদে ২/৪ ও ৬ ঋতুর পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনকে লক্ষ্য করে ৩৬৫ দিনকে ১২ ভাগে ভাগ করেছে; যার প্রত্যেক অংশকে মাস বলে। অতঃপর মাসকে সপ্তাহ, দিন, ঘণ্টা, মিনিট ও সেকেন্ডে ভাগ করা হয়েছে।

কোরানে ঐ ১২ ভাগের নির্দিষ্ট একটি মাসের দিনের অংশে উপবাস পালনের নির্দেশ রয়েছে। নির্দেশ রয়েছে সূর্য উদয় থেকে ডোবা পর্যন্ত পানাহার ও যৌন ভোগ-বিলাস নিষিদ্ধ। নির্দিষ্ট রয়েছে সময়ের কোন মুহুর্ত পর্যন্ত উপবাস থেকে কখন ভঙ্গ করবে। অর্থাৎ রোজার চরিত্র, বৈশিষ্ট ও পরিচয় বহন করে একমাত্র সৌরকাল, চন্দ্রকাল নয়।

চন্দ্র দিন রাত্র করে না, উপবাস শুরু ও ভঙ্গের সময় নির্ধারণ করে না, সকাল সন্ধ্যা করে না, নামাজের সময় বলে দেয় না, ছেহরি-ইফতারের সময় বলে দেয় না। অর্থাৎ্ রোজা-নামাজ পালনে চন্দ্র সময়ের কোন ভূমিকা নেই, একমাত্র হজ্জের দিনটি ছাড়া। তবুও এই চাঁদকে নিয়ে আদিকাল থেকেই বছরের নির্দিষ্ট কতিপয় ধর্মীয় পর্বের সময়কাল নিয়ে মুছলিম বিশ্বে যত ঝগড়া ফাছাদ তথা অধর্ম চলছে, বিশ্বের অন্য কোন ধর্মে এমন কোন নজির নেই। হাস্যকর বিষয় যে, শরিয়ত দৈনিক রোজাটি পূরণ করে সূর্য দেখে; মাসটি পুরণ করে চন্দ্র দেখে আর বছরটি পুরণ করে সূর্য দেখে! বলাবাহুল্য, হজ্জের অনুষ্ঠানটি নিয়ে এমন ঝগড়া ফাছাদ বা মত বিরোধ হয় না বটে!

কারণ:

১. নির্দিষ্ট একটি ভূখণ্ডে, নির্দিষ্ট একটি সময় পৃথিবীর সকল মুছলিম হাজির হয় বলে।

২. সৌদি রাজার কোরান বিবর্জিত একক মতে হজ্জের দিন তারিখ ধার্য হয় বলে।

এই ঝগড়া-ফাছাদ বন্ধ হতে পারে:

ক. পৃথিবীর সকল মুছলিমগণ রমজান মাসে আরব দেশে হাজির হয়ে রোজা, ঈদ পালন করলে।

খ. সঠিক হোক বা ভুল হোক মুছলিম বিশ্ব একক ব্যক্তির আদেশ মান্য করলে।

গ. চাঁদটি গুলি করে ভূপাতিত করলে।

ঘ. একমাত্র কোরান অনুসরণ করলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব।

সমস্যার কারণ একমাত্র চন্দ্র বর্ষ। চন্দ্র বর্ষ হয় ৩৫৪ দিনে; পক্ষান্তরে সৌর বর্ষ হয় প্রায় ৩৬৫ দিনে। সৌর বর্ষের তুলনায় চন্দ্র বর্ষে ১১ দিন কম। মূলত ৩৬৫ দিনেই বছর হয়, আর তাই ১১ দিনের ঘাটতি পূরণের জন্য আগামী বছর থেকে কাল্পনিক ও অবৈজ্ঞানিকভাবে ১১ দিন ধার করে এনে চন্দ্র বছর ৩৬৫ দিন পুরো করে একটি বছর ধার্য করা হয়। আর এ কারণেই চন্দ্র মাস প্রতি বছর ১১ দিন পিছু হটতে থাকে এবং মাসগুলি ঘুরতে থাকে; অর্থাৎ চন্দ্র মাসের ১২টি নাম ঠিক থাকলেও তার নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে না; থাকে না তার নির্দিষ্ট পরিচয়। ফলে ১২টি মাসেই এমনকি বছরের প্রত্যেকটি দিনেই কালের ব্যবধানে রমজান, মুহররম বা শাবান নাম ধারণ করে। অতএব সে হিসাবে মুছলিমগণ বছরের প্রত্যেকটি মাস ও দিনেই রোজা রাখে।

আজকের মুছলিম সমাজের ধর্মীয় পর্বগুলির দিন তারিখ চন্দ্র বর্ষ অনুসরণ করে বলেই কখনও জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারি, কখনও জানুয়ারি-ডিসেম্বর আবার কখনও ডিসেম্বর-নভেম্বর ইত্যাদি চক্রকারে রোজা রাখে। ফলে কোরানে নির্দেশ চরমভাবেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। অর্থাৎ কোরানের আলোকে সময়ের হিসাবে তাদের রোজা ঈদ সবই সন্দেহজনক বলেই মনে হয়!

মুছলিম বিশ্বের শুধু রোজা ঈদই নয়, ধর্মীয় সমস্ত পর্বগুলি, যেমন রাছুলের জন্ম তারিখ, শবে কদরের নির্দিষ্ট রাত, কোরবানীর তারিখ, মে’রাজের তারিখ সবই চাঁদের ফাঁদে পড়ে প্রায় ১৪ শত বছর যাবত ঘুরে ঘুরে আজ তা কোথায় অবস্থান করছে তা কারো জানা নেই।

মোঘল সম্রাট আকবরের শাসন আমলে ভারতবর্ষে চন্দ্র বর্ষ চালু ছিল। প্রজাদের অনুরোধ ছিল ধানের মওসুমে এসে খাজনা আদায় করতে। সে বছর বাংলা পৌষ মাসে প্রধান ফসল ধানের মওসুম ছিল, তাই ধান বিক্রয় করে সহজেই সরকারের খাজনা পরিশোধ করলো। পরের বছরও খাজনা পরিশোধ করতে মাত্র ১১ দিনের হেরফের ছাড়া তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু তার পরের বছর নির্দিষ্ট পৌষে খাজনা আদায় করতে এসে সরকার দেখলো যে, এবারের পৌষ মাসে ধান পাকেনি। কারণ চন্দ্র বর্ষের গুণে ২ বছরে বাংলা পৌষ মাস পিছিয়ে বাংলা অগ্রহায়ণের ২২ দিনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম তো আর ২২ দিন পিছিয়ে ধান পাকাতে পারে না! অতএব এবারের পৌষে ধানও পাকেনি আর তাই খাজনাও আদায় করা সম্ভব হয় নি। এ সমস্যার কথা সম্রাট আকবরকে জানালে তার সমাধানস্বরূপ চন্দ্র বর্ষের পরিবর্তে সৌর বর্ষ প্রবর্তন করে ধান পাকার মওসুম পৌষে নির্দিষ্ট করে মাসের নড়চড় বন্ধ করে খাজনা আদায়ের সময়কাল নির্দিষ্ট করা হয়।

পৃথিবী গোল হওয়ার কারণে এবং আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতির ফলে একই দেশে এবং বিভিন্ন দেশের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের সময়ের পার্থক্য ১ মিনিট থেকে প্রায় ১০/১১ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় চাঁদের আবির্ভাব ও তিরোধান বড়ই স্পর্শকাতর ও রহস্যময়। কারণ দিন-রাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে কোন সময় অসময় প্রতিপদ (জন্মলগ্ন) লাগতে পারে, আর এই প্রতিপদ লাগার ২০/২২ ঘণ্টা পরে মাত্র কয়েক মিনিট বা সেকেন্ডের জন্য চাঁদের উদয় হয়। এমতাবস্থায় নির্দিষ্ট একটি দেশের এক প্রান্তের স্থানীয় সময় উদাহরণ স্বরূপ বেলা ১২টা ৫ মিনিটে প্রতিপদ লাগলে পরের দিন ভোর ৮/১২টা ৫মি: ঐ আকাশে মুহুর্তের জন্য চাঁদ উঠবে। কিন্তু তখন প্রখর সূর্যের আলোর জন্য অথবা আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বা প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য এমন কি দূরবীণ বাইনোকুলার দ্বারাও তা দর্শন করা সম্ভব হয় না; তাছাড়া যন্ত্রগুলি চোখে লাগাতে লাগাতে বা খুজতে খুজতেই চাঁদ উঠে পুনঃ অস্ত যাবে। অথচ আকাশে চাঁদ উঠেছিল; পরের দিনের চাঁদের বড় আকৃতি দেখেই বোঝা যায় যে গত দিনই আকাশে চাঁদ উঠেছিল। এমতাবস্থায় দেশের অপর প্রান্তে যেখানে সময়ের এমনকি ২/৫ মিনিটেরও পার্থক্য থাকে সে প্রান্তের আকাশে চাঁদ দেখার কোন প্রশ্নই উঠে না। এই সময়ের পার্থক্যের কারণে একই দেশের এক প্রান্তের উদিত চাঁদ দর্শন হলেও অপর প্রান্তের লোকদের তা দেখা সম্ভব নয়। ফলে মুছলিম দেশগুলিতে অথবা একই দেশের দুই প্রান্তের লোকদের মধ্যে হয় মত বিরোধ। ফলে একদলের ঈদের দিনে অন্য দল রোজা রাখে, অন্যের রোজার দিনে ঐ দল ঈদ করে। অর্থাৎ একদলের দৃষ্টিতে অন্যদল অবৈধ তথা হারাম! বস্তুতঃপক্ষে কোরানের আলোতে উভয় দলই অবৈধ বলে ধারণা হয়।

একই দেশের চাঁদ দর্শন নিয়ে যখন এরূপ সমস্যার উদ্ভব হয়, তখন আরব বা পাকিস্থানের আকাশের উদিত চাঁদ দর্শনের খবর পেয়ে বিশ্বের সকল দেশের রোজা ঈদ পালন করা কি করে বৈধ বা যুক্তিসঙ্গত হতে পারে! মূলত চন্দ্র, সূর্য ও গ্রহ-নক্ষত্রাদি সকল সময়, সকল অবস্থায়ই আকাশে থাকে। এমন কি অমাবস্যার রাতেও স্থানভেদে চাঁদ দর্শন করা সম্ভব। এই চাঁদ দেখে রোজা ঈদ পালনের বিধান থাকলে, অদূর ভবিষ্যতে মানুষ যদি কখনও চন্দ্র, মঙ্গল অথবা অন্য কোন গ্রহে বসবাসের উপযোগী করতে পারে ; তখন এই কোরান সেখানে অচল হয়ে পড়বে।

‘কোরান সমগ্র মানব জাতির’ কথাগুলি আজকের সমাজ মৌখিক বিশ্বাস করে মাত্র ; কিন্তু বাস্তবে প্রমাণ করার ক্ষমতা, জ্ঞান আজ দেড় হাজার বছরের মধ্যেও আমরা কেউ অর্জন করতে পারিনি।

মুহম্মদ চন্দ্র বর্ষের প্রবর্তন করেননি। (তথ্যসূত্র: দৈনিক ইনকিলাব: ১৮৯ তম সংখ্যা, ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৭)। আবুবকর পর্যন্ত রোজা বা ঈদ আজকের রোজার মত পা-পা করে পিছু হটতো না। রমজান, রমজানের জায়গায়ই নির্দিষ্ট থাকতো। কিন্তু ওমরের আমল থেকে সৌরবর্ষ ছেড়ে চন্দ্রবর্ষ চালু হয়। (সংক্ষিপ্ত ইছলামী বিশ্বকোষ: ২য় খ. ২য় সস্করণ; পৃ: ৫০৭, ৫০৮; ই. ফা; ইছলামের ইতিহাস, ছেহা-ছেত্তা ইত্যাদি)। সেই থেকে আজ পর্যন্ত রমজান প্রতি বছর ১১দিন পিছু হট্ছে।

অনেকের ধারণা যে, ‘রাছুলের পূর্ব থেকেই চন্দ্রমাস চালু ছিল;’ কিন্তু রাছুল সেই চন্দ্র বর্ষের কোন্ সন তারিখে জন্ম-ওফাত্ করেছেন, ২৩টি যুদ্ধের চন্দ্র সন-তারিখ কি ছিল! তা বিশ্বের কারোরই জানা নেই, দলিলপত্রও নেই। উপরন্তু সকল ইতিহাস-হাদিছেই সৌর সন-তারিখের (খ্রিষ্টাব্দের) উল্লেখ বা দলিলপত্র পাওয়া যায়। মূলত খলিফা ওমর পূর্বের সৌরসনের পরিবর্তে চন্দ্রসন প্রবর্তন করলেও মাসগুলির নাম পরিবর্তন করেননি বলেই শরিয়ত অবাস্তব সন্দেহ করে মাত্র।

এক্ষণে আরবগণ চন্দ্রবর্ষ ছেড়ে সৌরবর্ষ প্রবর্তন করলে, লীপ ইয়ারের সমস্যা ছাড়া রমজানসহ রাছুলের জন্ম-মৃত্যু তারিখ, শ’বে কদর, মে’রাজ ইত্যাদি যাবতীয় ধর্মীয় দিন-ক্ষণগুলি স্থায়ী হয়ে যাবে; বছর বছর ১১ দিন পিছু হটবে না; ৯ম মাস রমজান, ৯ম মাস পৌষের রোজা জুলাই বা চৈত্রে ঢুকবে না।

আরব দেশ বা দল, উপ-দলিয় ইমামদের অনুসরণ/অনুকরণ করা মুছলিমদের ধর্ম নয়, কোরান অনুসরণ করাই ধর্ম।

রোজার সময়কাল সম্বন্ধে উপরোল্লিখিত বিষয়গুলি প্রাকৃতিক, বৈজ্ঞানিক ও বাস্তব সত্য বলেই স্বীকার করতে হয়। অতএব, কোরান যদি এ সমস্যাগুলির সমাধান দিতে না পারে তবে স্বীকার করতেই হবে যে:

ক. কোরান পূর্ণ জীবন বিধান নয়।

খ. কোরানের প্রকৃত অর্থ উদ্ধার করতে আলেম-আল্লামাগণ ব্যর্থ হয়েছেন।

গ. স্ব-জ্ঞানে, স্ব-ইচ্ছায় জেনে-শুনে কোরান অমান্য করে দলিয় স্বার্থে সৌদি আরবকে অনুকরণ করছে।

প্রথম ধারাটি স্বীকার করার শক্তি-সাহস বিশ্বের একজন মুছলিমেরও নেই; যদিও শরিয়ত তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ। অতঃপর দ্বিতীয় ধারাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য; তৃতীয় ধারাটি আরো সত্য; যেহেতু দ্বিতীয় খলিফা ওমরের চন্দ্র বর্ষ চালু করার পর থেকে অদ্যাবধি প্রায় দেড় হাজার বছরের মুছলিম বিশ্বের সমূহ ধর্মীয় পর্বগুলির দিন-ক্ষণগুলি চাঁদের ফাঁদে পড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে। অতএব এ সম্বন্ধে কোরানের উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ আয়াতাংশগুলি একান্তভাবেই লক্ষণীয় :

১। আইয়্যা-মাম্মা’দুদাত। (২: বাকারা-১৮৪) অর্থ: নির্দিষ্ট কতিপয় দিন মাত্র।

নির্দিষ্ট কিছু দিন বলতে ৩৬৫ দিনের ১২ ভাগের নির্দিষ্ট একটি ভাগকে বুঝায়; ঐ নির্দিষ্ট ভাগ বা মাসের নির্দিষ্ট গুণাগুণ বা বৈশিষ্টও থাকে। কিন্তু চন্দ্র বছরে এ ধরনের মাসের কোন নির্দিষ্টতা নেই। অর্থাৎ ৩৬৫ দিন তথা প্রত্যেকটি মাসই পর্যায়ক্রমে মহররম, রমজান বা শাবান ইত্যাদি নাম ধারণ করে থাকে; যা পূর্বেই আলোচিত হয়েছে। তাই ৩৩ বছর যিনি লাগাতার রোজা রেখেছেন, তিনি বছরের প্রত্যেকটি মাস তথা প্রত্যেকটি দিনেই রোজা রেখেছেন।

অতএব, আজকের মুছলিম সমাজ পর্যায়ক্রমে ১২ মাস বা ৩৬৫দিনই রোজা পালন করে থাকেন। অর্থাৎ অনির্দিষ্ট কাল ব্যাপীয়া রোজা পালন করেন। ফলে উল্লিখিত নির্দেশটি চরমভাবেই লঙ্ঘিত হচ্ছে।

২। ফামান কা-না…উখারা…। (২: বাকারা-১৮৪) অর্থ: তোমাদের মধ্যে কেহ অসুস্থ থাকলে বা প্রবাসী/বিদেশী/ ভ্রমণে থাকলে অন্য সময় হিসাব করে রোজা রাখবে।

উল্লিখিত আয়াতে রোগীদের আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। এখানে ‘সফর’ শব্দটি উল্লেখযোগ্য। তার সাধারণ অর্থ ভ্রমণ, অতঃপর: (স্থান) ত্যাগ করা; স্থানান্তরিত হওয়া; বিচ্ছিন্ন হওয়া; অনুপস্থিত থাকা ইত্যাদি বুঝায় (দেখুন: আরবি-ইংরেজি অভিধান; বাই জে. এন. কাউয়ান)। মূল কথা হলো বিদেশী বা প্রবাসীগণ অন্য সময় অর্থাৎ নিজ নিজ হিসাব অনুযায়ী রোজা রাখবে, যখন ইচ্ছা তখন নয়।

আরবি ‘সফর’ এর ‘ভ্রমণ’ অর্থটি অত্যন্ত ব্যাপক ও রূপক; ভ্রমণ বলতে দু’চার ঘণ্টা থেকে দিন, সাপ্তাহ, মাস, বছর থেকে ২/১০ বছরও হতে পারে। অতএব এমতাবস্থায় কেউ ৫ বছর বিদেশে অবস্থান করে দেশে ফিরে বর্তমান বছরসহ গত ৫ বছরের মোট ৬ মাস লাগাতার রোজা পালন করবে; এটা কোন অবস্থাতেই যুক্তিসঙ্গত নয়। ভ্রমণের দীর্ঘতার কারণে লাগাতার ১ বছর বা ততোধিক রোজা রাখতেও হতে পারে। অবশ্য এই ‘সফর’ সম্বন্ধে ফেকহা, এজমায় কিছু দুর্বল ব্যক্তিগত এবং বিতর্কিত মত প্রচলিত আছে।

অপরপক্ষে ২/১০ ঘণ্টা থেকে দু’চার দিন ভ্রমণে থাকলে ঐ দিন বা সময়কালে রোজা না রেখে নির্ধারিত রোজা শেষে অন্য সময় তা পালন করারও কোন যুক্তি থাকতে পারে না। কারণ এ রকম খুচরা ভ্রমণ সমাজের ৫০% শতাংশ লোকেই অহরহ করে থাকে এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবন ধারনের তাগিদে করতেই হয়। অতএব রোজার মাস বলতে তখন নির্দ্দিষ্ট মাসের অস্তিত্বই থাকে না।

সফর থেকে ‘মুসাফির’, বাংলায় প্রবাসী, আগন্তুক, বিদেশী বা পর্যটক। আপন দেশ, এলাকা ত্যাগ করে অন্য দেশে বা এলাকায় অবস্থান বা ভ্রমণ করাকেই মুসাফির বা প্রবাসী বলে। তাছাড়া আপন দেশ ব্যতীত অন্য সকল দেশের লোকই বিদেশী বা প্রবাসী। এই প্রবাসী বা বিদেশীদের জন্যই অন্য সময় গণনা বা হিসাব করে রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে কোরানে। গোল পৃথিবীর কারণে নির্দিষ্ট একটি স্থানের নির্দিষ্ট একটি সময় পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে আমুল হের ফের হয়। সময়ের হিসাব বলতে যেমন: ‘বাংলাদেশ সময় ২ তারিখ বেলা ১০ টার সময় ভূমিকম্প হয়েছে;’ সেই সময়টা হিসাব-নিকাশ করে আমেরিকার সময় দাঁড়ায় ১ তারিখ রাত্র ৮ টার সময়। ২৪ ঘণ্টায় যদি ১০ ঘণ্টার পার্থক্য হয় তবে ১ বছরে কত পার্থক্য হবে! সেটা হিসাব-নিকাশ করে সময়-কাল ধার্য করাকেই কোরানের আলোকে ‘প্রবাসীদের অন্য সময় গণনা করে’ রোজা রাখার নির্দেশ বুঝিয়েছে।

মাস বলতে নির্দিষ্ট একটি আবহাওয়া, জলবায়ু ও পরিবেশকে বুঝায়। কোরান নাজিল হয়েছে আরব দেশে তাই আরবের একটি নির্দিষ্ট মাসে রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মাসটি আরবি রমজান মাস। আরব ভিন্ন অন্য কোন দেশে নবীর আগমণ হলে সেই দেশেরই ফজিলতের মাসটি রোজার জন্য নির্দিষ্ট হতো ; বাংলাদেশে আগমণ হলে ফজিলত বা কল্যাণের মাস হিসাবে পৌষ মাসকেই যে নির্দিষ্ট করা হতো, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। অতএব রমজান মাসের নির্দিষ্ট আবহাওয়া, জলবায়ু অর্থাৎ সামগ্রিক কল্যাণ-ফজিলত অন্য দেশের যে মাসটির মধ্যে পাবে ঠিক সেই মাসটিই কোরানের ভাষায় প্রবাসীদের অন্য সময় হিসাব করে রোজা রাখার মাস বুঝিয়েছে।

১২টি মাসের মধ্যে তুলনামূলকভাবে রমজান মাসকেই শ্রেষ্ঠ কল্যাণের মাস হিসাবে ঘোষিত আছে। অতএব প্রত্যেকটি দেশের স্ব-স্ব ১২টি মাসের মধ্যে বিচার বিবেচনায় তুলনামূলকভাবে যে মাসটি শ্রেষ্ঠ কল্যাণের বিবেচিত হবে, ঠিক সেই মাসটিকেই কোরানের ভাষায় ‘প্রবাসীদের অন্য সময় গণনা করে রোজা রাখার মাস বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে।

উল্লিখিত বর্ণনা আয়াতটির ব্যাখ্যা নয় বরং সরলার্থ এবং ইহাই যে যুক্তিসঙ্গত ও নিরপেক্ষ এবং কোরানসম্মত তা পরবর্তী আয়াতে স্বচ্ছ আয়নার মত পরিস্কার করে দিয়েছে।

৩। ফামান সাহেদা…উখারা…। (২: বাকারা- ১৮৫) অর্থ: সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাসটি পাবে/উপস্থিত থাকবে/ প্রত্যক্ষ করবে/ সাক্ষী থাকবে তারা যেন এই মাসেই রোজা রাখে। এবং যারা অসুস্থ ও প্রবাসী/বিদেশী /সফরে থাকলে তারা অন্য সময় গণনা করে পূরণ করবে।

আয়াতটি সহজ-সরল ও ব্যাখ্যাসহ অবতীর্ণ। এতে নতুন করে ব্যাখ্যার অবকাশ নেই। তবুও দেড় হাজার বছর যাবৎ আমাদের এই সহজ সরল বিষয়টা বোধগম্য হচ্ছে না বলেই একই কথা বার বার ওলট-পালট করে বলতে হয় এবং কোরানেও অনুরূপ বলা আছে। মাস বলতে ৩৬৫ দিনের এক ভাগকে বুঝায় ; মাস বলতে নির্দিষ্ট একটি আবহাওয়া ও জলবায়ুকে বুঝায়। নির্দিষ্ট একটি দেশের হিসাব করা মাস পৃথিবীর সকল দেশের লোক ২/১০ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় একই সঙ্গে মাসটির বৈশিষ্ট্য প্রত্যক্ষ বা সাক্ষী থাকতে পারে না, তা পূর্বেও আলোচিত হয়েছে।

আরবের লু-হাওয়ার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আরবগণ; আমেরিকা-ইউরোপের তুষার বরফ পড়ার মাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী স্ব স্ব দেশীয়গণ; বাংলাদেশের চৈত্রের টাক ফাটা রোদ, ঘাম ঝরা গরম বা কাল বৈশাখী ঝড়ের প্রত্যক্ষ সাক্ষী বাংলাদেশীগণ। আর সকল ভিন্ন দেশীগণ তার পরোক্ষ সাক্ষী। অর্থাৎ তারা ভোগ করে না, দেখে না বা প্রত্যক্ষ সাক্ষী থাকে না ; কিন্তু জানে যে, কোন্ দেশে, কোন্ মাসে কখন কি অবস্থা ধারণ করে; এর মানেই তারা পরোক্ষদর্শী।

একই সৌরমাস গণনায়ও যেখানে আমেরিকার জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারি, বাংলার বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ বা আষাঢ়-শ্রাবণ ইউরোপ/আমেরিকায় প্রত্যক্ষ করা যায় না! সেখানে সৌর ভিন্ন আরবের চন্দ্র বর্ষের হিসাব করা মহরম/রমজান মাস একই সময় অন্য কোন দেশে প্রত্যক্ষ করা বা সাক্ষী থাকা একেবারেই অবাস্তব। এজন্যই আয়াতে বলা হয়েছে যে, ‘উক্ত মাস যারা প্রত্যক্ষ করে বা সাক্ষী থাকে তারা যেন এই মাসে রোজা রাখে; দূরদেশী/প্রবাসী ও রোগী অন্য সময় গণনা করে রোজা রাখবে’ অর্থাৎ আরবে যারা বসবাস করে তাদের জন্য রমজান (সৌর হিসাব অনুযায়ী) এবং আরব ভিন্ন অন্য দেশীরা সময়কালের হিসাব-নিকাশ করে তাদের রোজার মাস বের করে নিবে। আয়াতে বর্ণিত ‘যারা প্রত্যক্ষ করে বা সাক্ষী থাকে’, তার অর্থই সকলেই উক্ত মাস প্রত্যক্ষ করে না বা সাক্ষী থাকতে পারে না। এখানে ‘যারা’ ও ‘প্রত্যক্ষ’ শব্দদ্বয়ের অর্থ বুঝতে কলেজ ইউনিভারসিটির ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। তবুও আজ এ দু’টি শব্দ বোঝার সহজ-সরল জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়ে গেছে! অথবা আমরা জেনে শুনেই কোরানের অমোঘ বাণী অবহেলা করছি!

উল্লিখিত বর্ণনা আয়াতটির তফসীর ব্যাখ্যা নয় বরং পূর্ববৎ সরলার্থ এবং ইহাই যে কোরানিক যুক্তিসঙ্গত তা পরবর্তী আয়াতে আরো স্বচ্ছ আয়নার মত পরিস্কার করে দিয়েছে।

৪। ইউরিদুল্লাহু…অছরা…। [২: ১৮৫] অর্থ: আল্লাহ তোমাদের সহজ ও আরামের মধ্যেই রোজা চাহেন; তোমাদের কষ্ট ক্লেশ হোক তা মোটেই চাহেন না।

রোজা রাখার কষ্ট ক্লেশ শিথিল করে আরাম আয়েশ ভোগের সুযোগ-সুবিধা একমাত্র রোগী ও প্রবাসী বা ভ্রমণকারীদের জন্যই যে বিধিবদ্ধ করেছেন তা সঙ্গত নয়। বরং সকল রোজাদারীর জন্যই এ সুযোগটি অবস্থাভেদে সমান প্রযোজ্য বটে! অর্থাৎ স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে সমান এবং সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণের নিশ্চয়তা দেয় এই আয়াতটি।

আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদির নিরীখে প্রত্যেকটি মাসের গুণাগুণ, আরাম-আয়েশ বা ফজিলত সমান নয়। পৌষের ৮/৯ ঘণ্টা উপবাস আর চৈত্রের টাক ফাটা গরমের ১৪/১৫ এমনকি দেশভেদে ২০/২২ ঘণ্টা উপবাসে দেহ-মনের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বা ফজিলত অবশ্যই সমান কল্যাণকর যে নয় তা ১২ বছরের শিশুও সাক্ষী দিতে পারে। অতএব প্রত্যেকটি জাতির ১২টি মাসের মধ্যে তুলনামূলকভাবে নিশ্চয়ই একটি সহজ আরামের বা ফজিলতের মাস আছেই আছে। কোরানে ‘প্রবাসীগণ অন্য সময় হিসাব করে রোজা পূরণ করবে’, সে হিসাবটি প্রত্যেক জাতির কল্যাণকর মাসটিকেই ইঙ্গিত করেছে। রমজান মাস তুলনামূলকভাবে ১২টি মাসের তুলনায় কল্যাণকর তথা ফজিলতের মাস ছিল বলেই রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল; কিন্তু চন্দ্রবর্ষ চালু করার পর তা আর অবশিষ্ট নেই। রমজান মাস কেমন এবং কেন ফজিলতের মাস ছিল, সেটা সহজভাবে বোঝার জন্য প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসাবে নিচে বাংলা পৌষ মাস এবং ইউরোপ-আমেরিকার ফেব্র“য়ারীর উদাহরণটিই উপযুক্ত মনে করা যায়:

১. এ মাসের দিনগুলি সবচেয়ে ছোট, মাত্র ৮/৯ ঘণ্টার।

২. মাসটিও সবচেয়ে ছোট, মাত্র ২৮/২৯/৩০ দিনের।

৩. আবহাওয়া ও জলবায়ু আরামপ্রদ ও স্বাস্থ্যপ্রদ।

৪. রোগ-শোক তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আসমানী বালা, জমিনী বালা মুক্ত।

৫. নিত্য নতুন এবং হরেক রকমের খাদ্য শস্যের মওসুম তথা অভাব অভিযোগ মুক্ত।

৬. প্রচণ্ড কাজ করার উপযুক্ত আবহাওয়া ও পরিবেশ।

৭. ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, ভ্রমণ, অতিথি আদর-আপ্যায়ণ, প্রকাশ্যে সমাবেশ, মহা সমাবেশ ইত্যাদিতে প্রকৃতি কোন বাধা বা প্রতিকুলতার সৃষ্টি করে না।

৮. এ সময় দিনটি ছোট, মাসটি ছোট, তাপহীন হেতু নিতান্ত বৃদ্ধ ও ছোট শিশুগণও আনন্দ, উৎফুল্ল ও স্বতঃফুর্তভাবে উপবাস পালন করতে সক্ষম ও আগ্রহশীল হয়।

৯. উপবাস ব্রতে দেহের সুষ্কতার সঙ্গে প্রাকৃতির সুষ্কতা বহুল পরিমাণে সাহায্য করে।

১০. মানুষের হৃদয়-মন মুক্তাকাশ ও পরিবেশের মতই নির্মল, সজিব ও উদার থাকে; ঝামেলা মুক্ত হৃদয় খুলে আল্লাহকে ডাকার, ধ্যান, সাধনার সময়-সুযোগ পায়।

বিজ্ঞান, জ্যোতিষ বিজ্ঞানই নয়, চাষা-কুলি এমনকি পশুদের মতেও ১২টি মাসের মধ্যে এ মাসটি বিচার বিশ্লেষণে উপবাস পালনের সহজতর মাস অর্থাৎ রহমতের মাস বলেই বিবেচিত হয়। এ মাসটি রোজাদারীর জন্য কষ্ট ক্লেশহীন তথা আরামদায়ক ও কল্যাণকর। এমন সুযোগ সুবিধা ও গুণাগুণ রমজান মাসে বিদ্যমান ছিল বলেই আল্লাহ রমজান মাসে রোজা রাখার সময় ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ওমরের আমল থেকে চন্দ্র বর্ষ চালু করার কারণে আজ তা লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেক দেশ বা জাতির তুলনামূলকভাবে এমন একটি কল্যাণকর মাস অবশ্য অবশ্যই আছে। রমজান বলতে প্রত্যেকের সেই মাসটিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে এমন একটি মাস আছে যখন:

১. দিনটি থাকে সবচেয়ে বড় ১৫/১৬ ঘণ্টার; কোন দেশে ২০/২২ ঘণ্টাও হয়।

২. মাসটি থাকে সবচেয়ে বড়, ৩১ দিনে।

৩. তখন খাদ্যশস্যের থাকে চরম অভাব; এমনকি মধ্যবিত্তের ঘরেও দু’মুঠো খাদ্যের যোগান থাকে না।

৪. ঝড় বাদল, জলোচ্ছাস, হাজারো রকমের আসমানী জমিনী বালা মছিবত তথা দুর্যোগে থাকে ভরপুর।

৫. চলাফেরা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ প্রকৃতি চরমভাবে প্রতিকুল অবস্থা ধারণ করে।

৬. প্রচণ্ড গরমে এমনকি পশু-পক্ষী, জন্তু-জানোয়ার পর্যন্ত পানিতে আশ্রয় নেয়।

৭. মারাত্বক রোগ-শোক, মহামারি ইত্যাদির প্রাদুর্ভাব থাকে।

৮. প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাঠে ময়দানে এমনকি ঈদের নামাজ পর্যন্ত করা সম্ভব হয় না। ঈদের যাবতীয় আনন্দ আয়োজন মুহুর্তের মধ্যেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়! জীবন, সংসার নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়, ফলে একনিষ্ঠ সাধন-ভজন বা ধর্মানুশীলণ অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দেখা দেয়।

৯. বৃদ্ধ, শিশু এমন কঠিন দিনে রোজা রাখতে ভয় পায়; অভাব, অস্বাস্থ্যকর তদুপরি এমন লম্বা দিনে সুস্থ লোকেরাও রোজা রেখে অসুস্থ হয়ে কল্যাণ কামনায় বরং অকল্যাণ ডেকে আনে। রোজা অবস্থায় এ সময় অনেককে লজ্জা ভয়ে পালিয়ে পালিয়ে খেতেও দেখা যায়।

১০. এহেন অবস্থায় ছোয়াবের আশায় রোজা রেখে বরং সমূহ আপদ-বিপদ ডেকে আনে। এমন কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে আল্লাহ কোন মতেই মানুষের কাছ থেকে রোজা চাহে না ; তা পরিস্কারভাবেই কোরানে ঘোষণা করেছে।

১১. উল্লিখিত প্রাকৃতিক বালা-মছিবত বা সমস্যাগুলির বাস্তব সত্যতা উপলব্দি করত সম্প্রতি ( ২০১০ ইং সন) মিশর বাধ্য হয়ে ঘড়ির কাটা আগ/পিছ করে ১ ঘণ্টা আগেই রোজা ভঙ্গের (ইফতার) সময় নির্ধারণ করে; একই কারণে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যহানি বা অসমর্থতা ও উৎপাদন ব্যহত হওয়ার কারণে আমিরাতের শ্রমিকদের রোজা রাখার কঠিন আদেশ রহিত করার ফতোয়া দেয়। (খবর: সিএনএন)

অদূর ভবিষ্যতে চাঁদ, সূর্য বা অন্য যে কোন গ্রহে মানুষ বসবাস করলেও এই একই নিয়মে তাদের যে কাল বা মাসটি তুলনায় কল্যাণকর পাবে ঠিক সেই মাসেই তারা রোজা রাখবে। আল্লাহর আইন সর্বত্র এবং সবার জন্য একরকম। এখানে কোন রকমের পক্ষপাতিত্ব বা প্রকৃতি বিরোধ নেই, নেই অসামাঞ্জস্যতা।

‘কোরান মনুষ্য জাতির জন্য’, একথা ওয়াজ-নছিহত ছাড়া বাস্তব প্রমাণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই ; কারণ প্রচলিত রমজান অন্য গ্রহে তো দূরের কথা! পৃথিবীর উত্তর মেরু অঞ্চল, কানাডার নর্থওয়েস্ট টেরিটরি, নুনোভাট ও ইউকন টেরিটরি প্রভিন্সত্রয়; গ্রীনল্যান্ড, নরওয়ে, রাশিয়ার খানিক উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ মেরুর এ্যান্টারটিকা প্রভৃতি এলাকায় ৬ মাস দিন ও ৬ মাস রাত্র; এমন দেশ আছে যেখানে ২০/২২ ঘণ্টা উত্তপ্ত দিন, ঐ সকল এলাকায় আদিকাল থেকেই প্রচলিত নামাজ, রোজা, শবে মেরাজ, শবেবরাত, শবেকদর প্রভৃতি অনুষ্ঠানাদি অচল হয়ে পড়ে আছে; অতএব তাদের নিজস্ব পবিবেশ, সময়-সুযোগ অনুযায়ী হিসাব নিকাশ করে তাদের অনুষ্ঠানাদির সময় সূচি নির্ধারণ করে নিতেই হয়।

একমাত্র আরব দেশকে অনুকরণ তথা চন্দ্র বর্ষের কারণে আজকের মুছলিম বিশ্বের রোজা, ঈদ, নবীর জন্মোৎসব, শ’বে-কদর, শ’বে বরাত, শ’বে-মেরাজ ইত্যাদি সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি সময়ের হিসাবে চাঁদের ফাঁদে আবদ্ধ। অতএব, আরববাসী তথা মুছলিম বিশ্বের এক্ষণে উচিত:

ক. চন্দ্র বর্ষ ছেড়ে সৌর বর্ষ প্রবর্তন করা।

খ. ডাক্তার, বিজ্ঞানী, জ্যোতিষ বিজ্ঞানিদের সাহায্যে নবম মাস, ছোট্ট মাস রমজানকে এমনভাবে নির্ধারণ করা, যাতে সে-ই রাছুলের আমলের রমজানের সকল গুণাগুণ, বৈশিষ্ট্য তথা ফজিলত আজকের রমজানে স্থান পায়।

গ. বিশ্বকে ৪ভাগে বিভক্ত করে অথবা যে সমস্ত দেশের স্বতন্ত্র মাস আছে তারা স্বতন্ত্রভাবে তাদের মাসগুলির বিচার বিশ্লেষণ করে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কল্যাণের এবং ছোট মাসটি রোজার মাস হিসাবে সাব্যস্ত করা। ইহাই কোরানের নির্দেশ।

ফলে:

১. কোরানের সঠিক ব্যাখ্যা বলবৎ হবে।

২. মুছলিম বিশ্বের অথবা একই দেশে ধর্মানুষ্ঠানের দিন-তারিখ নিয়ে মতবিরোধ তথা অধর্ম বন্ধ হবে।

৩. রোজাদারীগণ রোজার প্রকৃত তাৎপর্য ও সমান ফলাফল উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।

৪. শিশু ও বৃদ্ধগণ স্বতঃফূর্তভাবে রোজা পালনে আগ্রহী হবে।

৫. কথিত প্রগতিশীল ও অনাগ্রহশীলদের ধর্মের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

৬. শীত আর গ্রীষ্মকালের উপবাসের দৈহিক ও মানসিক কল্যাণের (ছোয়াব) ফলাফল যে এক হতে পারে না; বরং বিপরীত ও আকাশ-পাতাল পার্থক্য, তা প্রত্যেক রোজাদারীই বাস্তবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।

৭. স্বজাতির মধ্যে একই ধর্মানুষ্ঠান নিয়ে লাঠালাঠি, খুনাখুনী বন্ধ হলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কোরানের প্রতি সন্দেহ অনেকটা দূর হবে।

৮. মুহম্মদের অনুসৃত সে-ই রমজান মাস আবার ফিরে পাবে।

৯. আল্লাহর কেতাবের ফয়সালার উপর রাজা-বাদশা বা চাঁদ দেখা কমিটির কুফুরি হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে।

১০. ‘কোরান মনুষ্য জাতির জন্য’ দাবিটা শুধু শ্লোগান সর্বস্বই থাকবে না বরং বাস্তবেই তা প্রমাণিত হবে।

১১. প্রত্যেকটি এলাকা বা দেশ স্ব-স্ব সময় অনুযায়ী রোজা, ঈদ ও হজ্জ পালন করবে। এ হজ্জটি জাতীয় বা দেশীয় হজ্জ হিসাবে স্বীকৃত হবে; আজ যাকে ওমরা হজ্জ বলে।

১২. বছরে একটি আন্তর্জাতিক হজ্জ অবশ্যই থাকবে; তার দিন-তারিখ কোরানেই নির্দিষ্ট করা আছে। সময়ক্ষণ গ্রীনউইচ সময় অনুযায়ী ধার্য হবে। এ হজ্জে প্রত্যেকটি দেশের জ্ঞানী-গুনীগণই প্রতিনিধি হিসাবে যোগদান করবে। তার মূল ও প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকবে প্রত্যেকটি দেশের যাবতীয় সমস্যাদি তুলে ধরা এবং তার স্থায়ী এবং সুস্পষ্ট ও সুষম সমাধান করা।

প্রত্যেকটি বস্তু-অবস্তুর বদলা রয়েছে। তা হিসাব-নিকাশ, গবেষণা ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ফয়সালা করে নিতে হয়। যেমন: ডলারকে টাকা, রিয়ালকে মার্ক; বাংলাকে আরবি; আরবিকে হিন্দি; জানুয়ারিকে পৌষ; অতঃপর রমজানকে পৌষ, পৌষকে ফেব্র“য়ারি করা সম্ভব; শুধুমাত্র দরকার গবেষণা ও হিসাব নিকাশের। এ সম্বন্ধে সুন্দর একটি আয়াত অনুসরণীয়:

আশ্বাহরুল…ক্বিছাছ। (২:বাকারা-১৯৪) অর্থ: নিষিদ্ধ (পবিত্র) মাসের বদলে নিষিদ্ধ (পবিত্র) মাস। এবং সবকিছুরই বদলা রয়েছে।

এতে আরবগণ সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে:

কোরানের বিধান মতে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে একক আল্লাহতে বিশ্বাসী ও সঙ্গতি যার আছে, তাকে অবশ্যই শপথ বা হজ্জ করতে হবে। (৩: এমরান- ৯৬, ৯৭)

ধর্ম গুরু ইব্রাহিম, আর তারই বংশধর ও অনুসারি সকল মানবজাতি; এমন কি সকল রাছুল-নবীগণও। তিনিই কাবা ঘরের সংস্কারক। অতএব একক আল্লাহতে বিশ্বাসী সকল মুছলিম অমুছলিমদের সমান অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে এই কাবা ঘরের প্রতি। যে কোন ব্যক্তির হজ্জের ইচ্ছা এবং সঙ্গতি থাকলে তাকে বাধা দেয়ার অধিকার কোন মানুষ বা সরকারের নেই; পক্ষান্তরে সৌদি রাজাগণ কোরান বিরুদ্ধ, বে-আইনী ফতোয়া দিয়ে একক আল্লাহতে বিশ্বাসী অমুছলিমদের হজ্জ গমণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তাছাড়া সৌদি সরকারের স্থানের অপ্রতুলতা, অদূরদর্শিতা, প্রাকৃতিক সমস্যা ইত্যাদির কারণে প্রত্যেকটি দেশের গমনেচ্ছুদের সংখ্যা নির্ধারিত করে দেয়া হয় ; যা কোরানের আলোতে বৈধ নয়। ফলে কোটি কোটি মানুষের ইচ্ছা ও আর্থিক সঙ্গতি থাকতেও তারা হজ্জ করতে পারছে না। অতএব, আজ প্রত্যেকটি দেশ রোজা, হজ্জ স্বতন্ত্র সময় পালন করলে:

ক. আরব সরকারের হজ্জ গমনেচ্ছুদের সংখ্যা নির্র্দিষ্ট করার দরকার হবে না।

খ. আরব সরকারের কোরানের নির্দেশ অমান্য করে দোযোখী হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

গ. স্বভাবতঃই হাজীদের সংখ্যা লক্ষকোটি গুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে সৌদি সরকারের বৈদেশিক আয় ততোধিক বৃদ্ধি পাবে এবং তা কালাকাল যাবৎ বলবৎ থাকবে।

আরবদের তেলের পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে, একদিন শেষও হবে। এমতাবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হঠাৎ যে কোন সময় তেল ফুরিয়েও যেতে পারে; ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে। অতএব সৌদি সরকারের উচিত নিকট অথবা দুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই কোরানিক তথ্যের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা।

কোরানে বর্ণিত “চন্দ্র ও সূর্য হিসাবের জন্য” বটে! চন্দ্র প্রধানত পৃথিবী পৃষ্ঠের পানি এবং জীব দেহের রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ বা হিসাব দেয়; পক্ষান্তরে সূর্য প্রধানত সময়-কাল ও আবহাওয়ার হিসাব দেয়।

আমার দেশ, আমার ভাষা, আমার মাটি, আমার প্রকৃতি-পরিবেশ, আমার বিশ্বাস, আমার ধর্ম রক্ষা পবিত্র এবং সর্বশ্রেষ্ঠ দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসাবে যুগ যুগ ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে; সুতরাং এবারের সংগ্রাম হোক আমার নিজস্ব এবং নির্দিষ্ট কল্যাণকর কালে উপবাসব্রত ধারণের।

এই রাতকে ঘিরে যা বলা হয়ে থাকে -শবই বরাত/ লাইলাতুল নিসফে মিন শাবান-

শবই বরাত/ লাইলাতুল নিসফে মিন শাবান-

এই রাতকে ঘিরে যা বলা হয়ে থাকে –

১| আগে বলা হতো “আল্লাহ” এই রাতে ভাগ‍্য নির্ধারন করেন। এই কথা পাল্টিয়ে বর্তমানে বলা হয় ভাগ‍্য বহু আগেই নির্ধারিত (since time immemorial) এই রাতে আগামী এক বছরের নির্ধারিত ভাগ‍্যের দায়িত্বসমূহ মালাইকাদের মধ‍্যে বন্টন করে দেয়া হয়। উল্লেখ্য এই রজনীর প্রামান‍্য হিসেবে সুরা দুখানের (৪৪) আয়াত ৩-৪ পেশ করা হয়।

২| এই রাত যেহেতু ফজিলতপূর্ন কারন আল্লাহ নেমে আসেন প্রথম আসমানে, অবস্থান করেন ফজর অবধি আর বান্দাদের বলতে থাকেন তাদের প্রয়োজন পেশ করতে।

৩| এই উপলক্ষে ভাগ‍্য পরিবর্তনে বা অন্তত ভালো কিছু লাভের আশায় বিশেষ কিছু বন্দেগী পালিত হয় রাতভর।

উপরোক্ত বিষয়গুলো কুরআনের আলোকে খন্ডন

(ক) সুরা দুখানের (৪৪) আয়াতদ্বয় হলো সুরা কদরের (৯৭) প্রাসঙ্গিক সূত্র (referance) এবং উভয় স্থানেই এই রাতকে কুরআন নাযিলের রাত হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে । কুরআন নাযিলের একটি সুনির্ধারিত কদরের রাতকে তথাকথিত শবই বরাত/ লাইলাতুল নিসফে মিন শাবানের রাত বলে আখ‍্যায়িত করা আল্লাহর উপর সুস্পষ্ট মিথ‍্যারোপ। (খ) ৪৪:৪ আয়াতানুযায়ী, “সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ আদেশসমূহ স্পষ্ট (manifest) করা হয়।” এখন “প্রজ্ঞাপূর্ণ আদেশসমূহ স্পষ্ট করা” কি “ভাগ‍্য নির্ধারণ করা” মর্মে প্রতীয়মান হয় কিনা?

(গ) সকল সময়ে মানুষের সকল ডাকে আল্লাহ সাড়া দিয়ে থাকেন ২:১৮৬, “এবং যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।” আল্লাহ হলেন “মুহিত” (পরিবেষ্টনকারী), তিঁনি হলেন “আলিমুন হাকিম” (ওয়াকিফহাল মহাজ্ঞানী), “ইন্নাল্লাহা কানা লতিফান খবির” (নিশ্চয়ই আল্লাহ সুক্ষদর্শী খবর রাখনেওয়ালা) “ইন্নাল্লাহা বাসিরুন বিল ইবাদ” “ইন্নাল্লাহা খাবিরুন বিমা তাআমালুন”। ৫০-১৬, “আমি তার গলার শিরা থেকেও নিকটবর্তী।” তাই তাঁকে প্রথম আসমানে নেমে আসতে হবে কেন? তাকে আকাশে নামিয়ে আনার বিষয়টি সাজানো।

(ঘ) এবার এই রাতে কিছু আমলে বন্দেগী গুজার করার ব‍্যাপারে। কুরআনে বলা আছে,

২:১৮৪, “অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। “

২:২১৫, “আর যে কোন ভাল কাজ তোমরা কর, নিশ্চয় সে ব্যাপারে আল্লাহ সুপরিজ্ঞাত”।

তবে কি উক্ত আয়াতদ্বয় অনুযায়ী অত্র রাতে আমল ঠিক আছে? আমরা নিচের আয়াতটি দেখি যেখানে আল্লাহ তাঁর নাবী ও মুমিনদেরকে লক্ষ‍্য করে বলছেন,

১১:১১২, “অতএব তুমি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছ, দৃঢ় থাক এবং সেই লোকেরাও যারা তাওবাহ করে তোমার সাথে রয়েছে, আর (দ্বীনের) গন্ডি হতে একটুও বের হয়োনা; নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের কার্যকলাপ সম্যকভাবে প্রত্যক্ষ করেন।”

ইবাদতের যে গন্ডী আমাদেরকে আদেশ দেয়া হয়েছে তার বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

আল্লাহর উপর মিথ‍্যা আরোপ ভয়াবহ অপরাধ

অতএব আল্লাহ তার কিতাবে অত্র রজনীর সম্পর্কে যা আমাদেরকে জানাননি এর বাইরে গিয়ে তাঁকে আমাদের নিজেদের মতো করে কল্পনা করা বা এক কথায় তাঁর উপর মিথ‍্যা চাপানো এবং এটিকে কেন্দ্র করে রাসুলের নাম দিয়ে মানব উদ্ভাবিত মিথ‍্যা আশ্বাসে আশান্বিত হয়ে বন্দেগী করার কি ফল-

১৬:১০৫, “একমাত্র তারাই মিথ্যা রটায়, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে না। আর তারাই মিথ্যাবাদী।”

১৬:১১৬, “তোমাদের জিহ্বা দ্বারা বানানো মিথ্যার উপর নির্ভর করে বলো না যে, এটা হালাল এবং এটা হারাম, আল্লাহর উপর মিথ্যা রটানোর জন্য। নিশ্চয় যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটায়, তারা সফল হবে না।”

৩৯:৩২, “সুতরাং তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে? যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং তার কাছে সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে। জাহান্নামেই কি কাফিরদের আবাসস্থল নয়?”

৬:২১, “আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে।”

৩৩:৫৭, “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেছেন আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি।”

Source: https://www.facebook.com/share/WYBGxmZ7jcHhaYX5/?mibextid=oFDknk

ArGr

Madinah Arabic

Madinah Arabic

Part   1234567

Lesson 23 – اَلدَّرْسُ الثَّالِثُ وَالْعِشْرُونَ

Noun and its Types – اَلاسْمُ وَأَنْوَاعُهُ

Pronouns and their Types – اَلضَّمَائِرُ وَأَنْوَاعُهَا

  • We are still in lesson twenty three of our free Arabic language course. This Arabic course with images and audios will help you learn Arabic.
  • In this section we will learn the Arabic Pronouns, In-Shā’-Allâh (God-willing).
  • In the previous lessons we have learned that in Arabic language there are two types of Pronouns namely Attached Pronouns اَلضَّمائِرُ الْمُتَّصِلَةُ and Detached Pronouns اَلضَّمَائِرُ الْمُنْفَصِلَةُ.
  • Similar to the English Language, the Arabic Pronouns are divided by 1st. person ( I / We), 2nd. person (You) and 3rd. person (He / She / They).

Example:

Person

Arabic

I / We

1st.

الضَّمَائِرُ لِلْمُتَكَلِّمِ

You

2nd.

الضَّمَائِرُ لِلْمُخَاطَبِ

He / She / They

3rd.

الضَّمَائِرُ لِلْغَائِبِ

  • We can see the detached pronouns that we normally use for the different persons below as well as the attached pronouns which we will cover in more detail below.

Attached Pronoun:

Meaning:

Singular / Plural / Dual

Gender of person:

Arabic:

Person:

ي

I

Singular

Masculine or Feminine

أَنَا

1st

نَا

We

Plural

Masculine or Feminine

نَحْنُ

كَ

You

Singular

Masculine

أَنْتَ

2nd

كُمَا

You

Dual

Masculine

أَنْتُمَا

كُمْ

You

Plural

Masculine

أَنْتُمْ

كِ

You

Singular

Feminine

أَنْتِ

كُمَا

You

Dual

Feminine

أَنْتُمَا

كُنَّ

You

Plural

Feminine

أَنْتُنَّ

هُ

He

Singular

Masculine

هُوَ

3rd

هَا

She

Singular

Feminine

هِيَ

هُما

They

Dual

Masculine and Feminine

هُمَا

هُمْ

They

Plural

Masculine

هُمْ

هُنَّ

They

Plural

Feminine

هُنَّ

o   The Attached Pronoun for 1st Person Singular is ي for both masculine and feminine e.g., حَقِيبَتِي  (my bag (fem.)) and for Plural it is نَا for both the masculine and feminine دِينُنَا  (our religion)

60টি হাদিসের সাথে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর কোন সম্পর্ক নেই-Yasuri

এই 60টি হাদিসের সাথে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর কোন সম্পর্ক নেই তবে আরব্য মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ সাহেবের সম্পর্ক রয়েছে।

১. মেয়েদের ব্যবহার
করতে হবে গন্ধবিহীন
পারফিউম (Abu Dawud
32:4037)

২. মুত্রত্যাগের পর
লিঙ্গাগ্রে ঢিলা-কুলুপ
(মাটির তৈরি) ব্যবহার
না করলে দোজখ (Sahih
Bukhari 1:4:215)

৩. যৌনকর্মের শুরু এবং শেষ
আল্লাহর নাম
নিয়ে করলে সন্তান শয়তান
থেকে দূরে থাকে (Sahih
Bukhari 1:4:143)

৪.শৌচকর্ম শেষে ব্যবহার্য
পাথরের
সংখ্যা হতে হবে বেজোড়
(Sahih Muslim 2:463
Sahih Bukhari 1:4:162)

৫.ভোরবেলা সূর্য
ওঠে শয়তানের মাথায় দুই
প্রান্তের মধ্য দিয়ে (Sahih
Bukhari 4:54:494)

৬.ভালো স্বপ্ন দেখায়
আল্লাহ আর খারাপ দেখায়
শয়তান (Sahih Bukhari
4:54:513)

৭.উকুন থেকে পরিত্রাণ
পেতে প্রয়োজন রোজা রাখা /
খাওয়ানো /
ছদকা দেওয়া (Sahih
Bukhari 7:71:604)

৮.কেয়ামত আসার লক্ষন
বোঝার উপায় নারীর
পশ্চাদ্দেশ (Sahih Bukhari
9:88:232)

৯.অবৈধ যৌন সম্পর্ক
করলে পাথর মেরে হত্যার
বিধান বানর প্রজাতিতেও
বিদ্যমান (Sahih Bukhari
5:58:188)

১০.জন্মের সময় সন্তান
কাঁদে শয়তানের
স্পর্শে (Sahih Bukhari
4:54:506)

১১.চন্দ্র-সূর্যের গ্রহন
ঘটে মানুষকে ভয় পাওয়ানোর
উদ্দেশ্যে (Sahih Bukhari
2:18:158)

১২.যৌনকর্মের সময়
‘আল্লাহর ইচ্ছা’ বললেই জন্ম
নেবে পুত্র সন্তান (Sahih
Bukhari 4:52:74i)

১৩. কোন
মহিলা পরচুলা ব্যবহার
করলে তার ওপর বর্ষীত
হবে অভিশাপ (Sahih
Bukhari 6:60:409 )

১৪. সবুজ বা সাদা রঙের জার
ব্যবহার হারাম (Sahih
Bukhari 7:69:501)

১৫.ঘোড়া এবং উটের
অধিকারীরা অহংকারী (Sah
ih Bukhari 4:54:520)

১৬. প্রার্থনার
সারি সোজা না রাখলে চেহা
রা পরিবর্তিত
হয়ে যাবে (Sahih Bukhari
1:11:685)

১৭.রৌপ্য পাত্রে পান
করা মানে নরকের আগুন
পেটে ঢুকানো (Sahih
Bukhari 7:69:538)

১৮. আল্লাহর পাঠানো খাবার
খেয়ে নবীর যৌন
শক্তি বৃদ্ধি (Ibn Sa’d’s
Kitab Tabaqat Al-Kubra,
Volume 8, Page 200)

১৯.খালি হাতে নবী কতৃক
শয়তানের
গলা টিপে ধরা (Sahih
Bukhari 2:22:301)

২০.পাথর কতৃক কাপড়
চুরি (Sahih Muslim
30:5850, 4:55:616)

২১.নবী কতৃক খেজুর গাছের
কান্না শোনা (Sahih
Bukhari 4:56:784)

২২.খাবার কতৃক আল্লাহর
প্রশংসা করা (Sahih
Bukhari 4:56:779)

২৩. গাছ কতৃক তথ্য প্রদান
(Sahih Bukhari 5:58:199)

২৪.পাথর কতৃক
নবীকে স্যালুট করা (Sahih
Muslim 30:5654)

২৫. দোজখের আগুন কতৃক
আল্লাহর কাছে অভিযোগ
প্রদান (Sahih Bukhari
4:54:482)

২৬. পেট কতৃক আল্লাহর
সাথে বিরোধিতা করা (Sahi
h Bukhari 7:71:614)

২৭. আল্লাহ হাচি পছন্দ
করেন, কিন্তু হাই
তোলা অপছন্দ করেন (Sahih
Bukhari 8:73:242)

২৮.দাড়ি রাখতে হবে মুর্তিপুজক
দের
থেকে আলাদা হতে (Sahih
Muslim 2:500-501)

২৯. কবিতা থেকে পুঁজ উত্তম
(Sahih Muslim 28:5611)

৩০. খারাপ স্বপ্ন
থেকে বাঁচতে বাম দিকে থু থু
ফেলা (Sahih Bukhari
9:87:115)

৩১.খাবার খাওয়ার পর হাত
চাটা বা অন্যের
দ্বারা চাটানো (Sahih
Bukhari 7:65:366)

৩২. প্রার্থনার সময় গ্যাস
ছাড়া আল্লাহর অপছন্দ (Abu
Dawud 1:205 Sahih
Bukhari 1:4:139,
9:86:86)

৩৩. ট্যাটু লাগানো মহিলার
প্রতি রয়েছে আল্লাহর
অভিশাপ (Sahih Bukhari
7:72:826)

৩৪. বিধর্মীদের
থেকে আলাদা হতে চুল
রং করা (Sahih Bukhari
7:72:786)

৩৫.বেজোড় সংখ্যা আল্লাহর
পছন্দের (Sahih Bukhari
8:75:419)

৩৬.লুকিয়ে উকি দেওয়ায়
তার চোখ
গেলে দিলে দোষের কিছু
নেই (Sahih Bukhari
9:83:38-39)

৩৭. বেহেস্তের বৃক্ষ অতিক্রম
করতে প্রয়োজন ১০০ বছর
(Sahih Bukhari
8:76:559t)

৩৮. নারীর নিকট স্বামীর
ভাই মরন সদৃশ (Sahih
Bukhari 7:62:159)

৩৯. জ্বিনের খাবার হাড়
এবং পশুর মল (Sahih
Bukhari 5:58:200)

৪০.রমজান মাসে শয়তান
বাধা থাকে (Sahih
Bukhari 4:54:497)

৪১. তৃষ্ণার্তকে পানি পান
করালেই পতিতার
মিলবে দোজখ
থেকে মুক্তি (Sahih
Bukhari 4:54:538)

৪২. বানর আর শুকর মানেই
যারা পূর্বে বাধ্যযন্ত্র
বাজাতো (Sahih Bukhari
7:69:494)

৪৩. পশুর সাথে যৌনতায় কোন
সমস্যা নেই (Abu Dawud
38:4450, 38:4448)

৪৪.গরুরাও মানুষের
সাথে কথা বলে (Sahih
Bukhari 4:56:677)

৪৫.হারিয়ে যাওয়া উট
বা ভেড়া নিয়ে নবীর
মন্তব্য (Sahih Bukhari
1:3:91)

৪৬.ইদুর
পারে কারো বাড়িতে আগুন
দিতে (Sahih Muslim
23:4994 Al-Muwatta 49
10.21)

৪৭.ইজরাইলের লোকেদের
ইদুর বনে যাওয়া (Sahih
Bukhari 4:54:524)

৪৮.শয়তান পারে না নবীড়
আকার ধারন করতে (Sahih
Bukhari 9:87:123,
9:87:124, 9:87:125,
9:87:126)

৪৯.শুক্রবারে মসজিদের
গেটে দাঁড়িয়ে থাকে ফেরেস্
তারা (Sahih Bukhari
4:54:433)

৫০.নগ্ন অবস্থাতেই সম্ভব
আল্লাহর সাথে মোলাকাত
(Sahih Bukhari 8:76:531,
8:76:532, 8:76:533,
8:76:533)

৫১.শয়তান কতৃক কানে মুত্র
ত্যাগ (Sahih Bukhari
2:21:245)

৫২. ঘুমানোর সময় শয়তান
কতৃক মাথার পেছনে তিন
গেড়ো (Sahih Bukhari
4:54:491)

৫৩.সন্তান জন্মানোর পর
শয়তানের স্পর্শ (Sahih
Bukhari 4:54:506)

৫৪.হাই তুললে তার
প্রতি শয়তান হাসে (Sahih
Bukhari 4:54:509)

৫৫.মল ত্যাগের
সাথে ক্ষতিকারক বা খারাপ
কিছুর সম্পৃক্ততা (Sahih
Bukhari 1:4:144)

৫৬.কিবলা মুখি হয়ে মল
ত্যাগ নিষেধ (Sahih
Bukhari 1:4:215)

৫৭.কালো কুকুর মানেই
শয়তান (Sahih Muslim
4:1032 )

৫৮. ঈমামের
সামনে মাথা তুললেই
সে পরিনত হবে গাধায়
(Sahih Bukhari 1:11:660)

৫৯. দাড়িয়ে পানি পান
করলে বমি করতে হবে (Sahi
h Muslim 23:5022)

৬০.প্রার্থনার সময় ওপর
দিকে তাকালে হারাবে দৃষ্ট
শক্তি (Sahih Muslim
4:862, 4:863)
সংগ্রহীত।

Intercession/সুপাৰিছ/ছাফাআত

আসুন সবাই আল কুরআন থেকে সুপারিশ সংক্রান্ত সমস্ত আয়াতগুলো মনোযোগ সহকারে বুঝে পড়ি এবং চিন্তা ভাবনা করে উপলব্ধি করি যে, সালামুন আলা মোহাম্মদ কখনো কি কেয়ামতের দিনে / বিচারের দিনে আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন কিনা ?????????????

অধিকাংশ “সুন্নী , শিয়া , সুফি” বিশ্বাস করে যে হাশরের দিনে সালামুন আলা মুহাম্মদ এবং ঈমাম, পীর, নিজ নিজ উম্মত ও অনুসারীদের মাঝে যারা পাপী তাদের জন্য সুপারিশ করে বেহেস্ত পাইয়ে দেবেন| এভাবেই তারা কুরআনে শেষ দিবসের যে বর্ণনা পাওয়া যায় তাকে বিকৃত করে, ঈমাম ও পীর সুফিদের এমন ভাবে বাজারজাত করে যেন আল্লাহ নন বরং পীর পয়গম্বররাই বিচার দিবসের নিয়ন্ত্রা..!!

সত্য হলো, এই বিশ্বাস শেষ বিচার দিবসে আল্লাহর একচ্ছত্র ক্ষমতাকে খর্ব করার সামিলই শুধু নয় , এই বিশ্বাস কুরআনের বহু আয়াতকে অস্বীকার ও নিষ্কৃয় করে দেয়|

1.আর কিয়ামতের দিন আমি ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারো প্রতি কোন অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা হাযির করব। আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট।(21:47)

2.সেদিন কেউ কারও জন্য কিছু করার মালিক হবে না; আর সেদিন সব বিষয়ের কর্তৃত্ব হবে আল্লাহর।(82:19)

আজকের মুসলমানদের নৈতিক অধঃপতনের মূলেও এই ভ্রান্ত বিশ্বাস| কেন তারা সৎ, ভাল নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করবে , যখন তারা নিশ্চিত জানে মুসলমান হওয়ার সুবাদে বা রাসূলের সুন্নত পালন করার কারনে বা ঈমামের বা পীরের অনুসারী হওয়ার সুবাদে পরকালে তাদের কিছুই হবে না, পীর পয়গম্বররা সুপারিশ করে তাদের দোযখে যাওয়ার বদলে বেহেস্তে পাঠাবে| এদের অবস্থা সেই সকল ছাত্রের মতো, যারা সারা বছর পড়াশুনা না করে টুকে বা ঘুষ দিয়ে পাশ করতে চায়|

ইসলামে শাফায়াতের সূচনা :

কুরআনের আয়াত দৃঢ়রুপে ঘোষনা দেয় যে , ইহকাল ও পরকালের ভবিষ্যত সম্পর্কে আধ্যাত্মিক কোন জ্ঞান মুহাম্মদ রাসূলের ছিল না| এমনকি নিজের ভাল ভাল বা মন্দ করার ক্ষমতাও তার ছিল না|

1.বল, ‘আমি রাসূলদের মধ্যে নতুন নই। আর আমি জানি না আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কী করা হবে। আমার প্রতি যা ওহী করা হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আর আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’। অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের অধিকারী রাসূলগণ। আর তাদের জন্য তাড়াহুড়া করো না। তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল, যেদিন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে, মনে হবে তারা পৃথিবীতে এক দিনের কিছু সময় অবস্থান করেছে। সুতরাং এটা এক ঘোষণা, তাই পাপাচারী কওমকেই ধ্বংস করা হবে।(46:9,35)

2.বল, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে, আর আমি অদৃশ্যের খবরও জানি না। আর আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা, আমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয় তাছাড়া (অন্য কিছুর) আমি অনুসরণ করি না। বল, অন্ধ আর চোখওয়ালা কি সমান, তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না? তুমি এর (কুরআন) সাহায্যে ঐ সব লোককে ভীতি প্রদর্শন কর যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের কাছে এমন অবস্থায় সমবেত করা হবে যেখানে তিনি ছাড়া তাদের না কোন সাহায্যকারী থাকবে, আর না থাকবে কোন সুপারিশকারী, হয়ত তারা সাবধান হবে। আর তুমি তাড়িয়ে দিয়ো না তাদেরকে, যারা নিজ রবকে সকাল সন্ধ্যায় ডাকে, তারা তার সন্তুষ্টি চায়। তাদের কোন হিসাব তোমার উপর নেই এবং তোমার কোন হিসাব তাদের উপর নেই, ফলে তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিবে এবং তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।আর এভাবেই আমি এককে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করেছি, যাতে তারা বলে, ‘এরাই কি, আমাদের মধ্য থেকে যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের ব্যাপারে পূর্ণ জ্ঞাত নয়? আমার আয়াতসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তাদেরকে বলঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের রব নিজের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করার নীতি বাধ্যতামূলক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজ্ঞতা ও মূর্খতাবশতঃ কোন খারাপ কাজ করে, অতঃপর সে যদি তাওবাহ করে এবং নিজেকে সংশোধন করে তাহলে জানবে যে, তিনি হচ্ছেন ক্ষমাপরায়ণ, করুণাময়। আর এভাবেই আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি। আর যাতে অপরাধীদের পথ স্পষ্ট হয়ে যায়। (6:50-55)

3.বল, ‘আমি আমার নিজের কোন উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতা রাখি না, তবে আল্লাহ যা চান। আর আমি যদি গায়েব জানতাম তাহলে অধিক কল্যাণ লাভ করতাম এবং আমাকে কোন ক্ষতি স্পর্শ করত না। আমিতো একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা এমন কওমের জন্য, যারা বিশ্বাস করে’।(7:188)

4.বল, ‘আমি নিজের ক্ষতি বা উপকারের অধিকার রাখি না, তবে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন’। প্রত্যেক উম্মতের রয়েছে নির্দিষ্ট একটি সময়। যখন এসে যায় তাদের সময়, তখন এক মুহূর্ত পিছাতে পারে না এবং এগোতেও পারে না। (10:49)

5.আর আমি তোমাদেরকে বলছি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে। আমি অদৃশ্যের কথাও জানি না। আর আমি এটাও বলি না যে, আমি ফিরিশতা। আর যারা তোমাদের চোখে হীন, আমি তাদের সম্বন্ধে এটা বলি না যে, আল্লাহ কখনো তাদেরকে কোন মঙ্গল দান করবেন না; তাদের অন্তরে যা কিছু আছে, তা আল্লাহ উত্তমরূপে জানেন। (এরূপ বললে) আমি অবশ্যই যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’(11:31)

ফলে “সালামুন আলা মুহাম্মদ” যে শাফায়াত সম্পর্কে কখনো কিছু বলেন’নি , তা নিশ্চিতরুপে বলা যায়| তাই মুহাম্ম রাসূলের নামে প্রচলিত তথাকথিত হাদিসগ্রন্থগুলিতে শাফায়াত নিয়ে লিখিত কল্প কাহিনীগুলো যে সর্বৈব মিথ্যা তা নিঃসন্দেহে বলা যায়| শাফায়াত নিয়ে কুরআনে ও হাদিসে যে বর্ণনা পাই , তা পরষ্পর বিরোধী এবং এদের ভিতরে সমন্বয় করা অসম্ভব|

কুরআনিক আয়াত ১:৪ অনুসারে বিচার দিবসের একমাত্র মালিক আল্লাহ এবং মুহাম্মদ রাসূল আর সকলেরমতোই নশ্বর মনুষ্য আত্মা…

:বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহ’ই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে। (১৮:১১০”)

শেষ দিবস নিয়ে কুরআনের এই আয়াত আর সকল আত্মার মতোই মুহাম্মদ রাসূলের জন্যেও প্রযোজ্য…
“যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সব কর্তৃত্ব হবে আল্লাহর।৮২:১৯” |

একারনে আল্লাহ সালামুন আলা মুহাম্মদকেবলেছেন..
“হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর। (৩:১২৮)
বিচার দিবসের একমাত্র মালিক কর্তা যখন কোন রায় দেবেন, তা যে রদ বদল হবেনা আমরা সেটা জানতে পারি নিম্মের আয়াত থেকে..
“আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই। (৫০:২৯”)

যদি কেউ ধারনা করে থাকে যে, শেষ বিচারে আল্লাহ কাউকে দোযখে পাঠানোর রায় দেন এবংমুহাম্মদ বা অন্য কেউ সুপারিশ করে সে রায় পরিবর্তন করে তাকে বাচিয়ে দেবেন , তাহলে সে কুরআন অস্বীকার করার পাঁপে পাঁপী হবে| যার জন্য দোযখের রায় হয়ে গেছে , তার জন্য সুপারিশ করে কেউ তাকে বাচাতে পারবে না কারন আল্লাহ বলেছেন…

“যার জন্যে শাস্তির হুকুম অবধারিতহয়ে গেছে আপনি কি সে জাহান্নামীকে মুক্ত করতে পারবেন? (৩৯:১৯”)

কুরআনে কখনোই শেষ বিচার দিবসে মুহাম্মদের বিশেষ কোন ভূমিকার কথা বলা হয় নি , বরং অন্য আর সকলের মতোই মুহাম্মদকেও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এবং নিম্নের এই আয়াত মুহাম্মদ ও অন্য আর সকল রসূল পয়গম্বরদের জন্য ও প্রযোজ্য..

“সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে, তার মাতা, তার পিতা, তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে। সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে। (৮০:৩৪-৩৭”)

সুতরাং সেদিন মুহাম্মদ রাসূল বা অন্য কারো শাফায়াত দুরে থাক , অন্য কারোর জন্য চিন্তা করার সময় ও সুযোগ কোনটাই থাকবেনা| আল্লাহ সমগ্র মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন..

“হে মানব জাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর এবং ভয় কর এমন এক দিবসকে, যখন পিতা পুত্রের কোন কাজে আসবে না এবং পুত্রও তার পিতার কোন উপকার করতে পারবে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহর
ওয়াদা সত্য। অতএব, পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে ধোঁকা না দেয় এবং আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারক শয়তানও যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। (৩১:৩৩”)

“সালামুন আলা মুহাম্মদ” সেদিন তার উম্মত দুরে থাক, নিজের সন্তানদের কোন উপকারে আসবেন না|
এটা ভাবা অযৌক্তিক যে.. মুহাম্মদ অন্যের বিচারে হস্তক্ষেপ করবেন , যখন তিনি নিজে আর সকল রসূলদের মতোই বিচারের সম্মুখীন হবেন, জিজ্ঞাসিত হবেন|

“অতএব, আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব যাদের কাছে রসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং অবশ্যই জিজ্ঞেস করব রসূলগণকে। (৭:৬”) মুহাম্মদকে ও বিচারের আওতা থেকেবাদ দেয়া হবে না|
“এটা আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের জন্যে স্মরনিকা এবং শীঘ্রই আপনারা জিজ্ঞাসিত হবেন|(৪৩:৪৪”)

বর্তমানের মুসলমানরা যাদের সাথে মুহাম্মদ রাসূলের কখনো সাক্ষাৎ হয়নি তাদের কথা বাদই দিলাম, যারা তার সমসাময়িক সেই মুসলমানদেরও তিনি কোন কাজে আসবেন না…

“আর তাদেরকে বিতাড়িত করবেন না যারা সকাল-বিকাল স্বীয় পালকর্তার এবাদত করে, তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। তাদের হিসাব বিন্দুমাত্রও আপনার দায়িত্বে নয় এবং আপনার হিসাব বিন্দুমাত্রও তাদের দায়িত্বে নয় যে, আপনি তাদেরকে বিতাড়িত করবেন। নতুবা আপনি অবিচারকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবেন। (৬:৫২”)

আল্লাহ ন্যায় বিচারক ও সর্বজ্ঞ| সুপারিশের মাধ্যমে বিচারের রায় পরিবর্তন করা গেলে , সে বিচার ন্যায় বিচার নয়|
” আমি কেয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারও প্রতি জুলুম হবে না।যদি কোন আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা উপস্থিত করব এবং হিসাব গ্রহণের জন্যে আমিই
যথেষ্ট। (২১:৪৭”) আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকেক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না। (২:৪৮”)
“হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, সেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম।
(২:২৫৪”)

“তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না, কার ওসুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না। (২:১২৩”)
“আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্যান্যদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করব? করুণাময় যদি আমাকে কষ্টে নিপতিত করতে চান, তবে তাদের সুপারিশ আমার কোনই কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে রক্ষাও করতে পারবে না। ৩৬:২৩”

“বল- শাফা‘আত সম্পূর্ণ আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। আকাশ ও পৃথিবীর রাজত্ব তাঁরই, অতঃপর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।” (QS. Az-Zumar 39: Verse 44)

কুরআনের শাফায়াত সংক্রান্ত আরও কিছু আয়াত নিয়ে আলোচনা করার আগে চলুন উত্তর খোঁজা যাক “সূরা মারইয়াম:19/87 – যে দয়াময় আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে সে ব্যতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না”| এর উত্তর জানলে রুপক আয়াতগুলো বুঝতে সুবিধা হবে। কে বা কারা শেষ বিচার দিবসে সুপারিশের অধিকারী হবে? কুরানের সুস্পষ্ট আয়াত অনুযায়ী এরা হলেন – ফেরেশতারা|

“আকাশে অনেক ফেরেশতা রয়েছে। তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসূ হয় না যতক্ষণ আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন, অনুমতি না দেন। (৫৩:২৬”)

কেন শুধু ফেরেশতারাই সুপারিশের অধিকারী হবেন সেটা জানার আগে চলুন জানা যাক কেন নবী রসূল সহ কোন মানুষ সুপারিশের অধিকারী হবেন না বা সুপারিশ করার যোগ্যতা রাখেন না বা নিজেকে ছাড়া অন্যকে নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় ও সুযোগ কোনটাই নেই| শেষ বিচার দিবসে মানুষের না থাকবে কোন সাহায্যকারী , না থাকবে কোন সুপারিশকারী| তারা একাই বিচারের সম্মুখীন হবে| সেদিন আল্লাহ বলবেন…

“তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ হয়ে এসেছ, যেমন আমি প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম। আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছিলাম, তা পশ্চাতেই রেখে এসেছ। আমি তো তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের কে দেখছি না। যাদের সম্পর্কে তোমাদের দাবী ছিল যে, তারা তোমাদের ব্যাপারে অংশীদার। বাস্তুবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমাদের দাবী উধাও হয়ে গেছে। (৬:৯৪)

এর অর্থ দাড়ায় সামাজিক প্রতিপত্তি , ধণ সম্পদ , সন্তান সন্ততি , আত্মীয় স্বজন, সুপারিশকারী কেউইসেদিন সঙ্গে থাকবে না| শুধু তাই নয় নিজের চিন্তায় এমনই ব্যতিব্যাস্ত থাকবে যে এদের থেকে পালিয়ে যাবে…
“সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে, তার মাতা, তার পিতা, তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে। সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে। (৮০:৩৪-৩৭”)
নবী রসূলদের ও পিতা মাতা পত্নী সন্তান সন্ততী ছিল| তারা ও অন্যান্য মানুষের মতোই পালাবে| তারাও অন্যান্য মানুষের মতোই আল্লাহর দাস, তারাও একাকি উত্থিত হবে….
“নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না। তাঁর কাছে তাদের পরিসংখ্যান রয়েছে এবং তিনি তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন। কেয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর
কাছে একাকী অবস্থায় আসবে। (১৯:৯৩-৯৫”)

সেদিন প্রতিটি মানব আত্মা নিজের ওকালতি নিজেই করবে….
“যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি আত্ন-সমর্থনে সওয়াল জওয়াব করতে করতে আসবে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের কৃতকর্মের পূর্ণ ফল পাবে এবং তাদের উপর জুলুম করা হবে না। (১৬:১১১”)

প্রত্যেক ব্যাক্তির সঙ্গে কে থাকবে ও সুপারিশ করবে বা সেই সুপারিশের ফল কী? সুস্পষ্ট কুরআনের আয়াতগুলো থেকে জানলাম – শেষ বিচারের দিনে সকল মানুষ একাকি নিঃসঙ্গভাবে উদভ্রান্তের মতো পালিয়ে বেড়াবে এবং শুধুমাত্র নিজের ভবিষ্যত চিন্তায় ব্যাতিব্যাস্ত থাকবে| এরপরেও যারা এখনো ভাবছেন আল্লাহ মুহাম্মদকে তাদের জন্য সুপারিশ করার অনুমতি দেবেন তাদের জন্য.. এই আয়াতগুলোর শুরুতেই ‘সালামুন আলা মুহাম্মদ’কে আল্লাহ তিরস্কার করছেন তার যুদ্ধের সঙ্গী নিকটস্ত কিছু সাহাবির পক্ষে বিতর্ক করার জন্য|

“নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন, যা আল্লাহ আপনাকে হৃদয়ঙ্গম করান। আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না। এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। যারা মনে বিশ্বাস ঘাতকতা পোষণ করে তাদের পক্ষ থেকে বিতর্ক করবেন না আল্লাহ পছন্দ করেন না তাকে, যে বিশ্বাস ঘাতক পাপী। (৪:১০৫-১০৭”)
এর পরের আয়াতে এই বিশ্বাস ঘাতক পাপীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ জানিয়ে তিনি সালামুন আলা মুহাম্মদকে আবার ও তিরস্কার করে বলছেন….
“শুনছ? তুমি তাদের পক্ষ থেক পার্থিব জীবনে বিতর্ক করছ, অতঃপর কেয়ামতের দিনে তাদের পক্ষ হয়ে আল্লাহর সাথে কে বিতর্ক করবে অথবা কে তাদের উকিল হবে? (৪:১০৯”)

ভাবুন একবার. সাহাবিদের জন্যেও সালামুন আলা মুহাম্মদের ওকালতি করার অনুমতি নেই , না ইহ জীবনে না পরকালে , সেখানে অন্যান্য মুসলমানেরা কিভাবে সালামুন আলা মুহাম্মদের শাফায়াতের আশা করতে পারে..??

1.আর কিয়ামতের দিন আমি ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারো প্রতি কোন অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা হাযির করব। আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট।(21:47)

2.সেদিন কেউ কারও জন্য কিছু করার মালিক হবে না; আর সেদিন সব বিষয়ের কর্তৃত্ব হবে আল্লাহর।(82:19)

3.নিশ্চয় সৎকর্মপরায়ণরা থাকবে সুখ- স্বাচ্ছন্দ্যে। আর নিশ্চয় অন্যায়কারীরা থাকবে প্রজ্জ্বলিত আগুনে। তারা বিচার দিবসে সেখানে প্রবেশ করবে। এবং তারা সেখান হতে বের হতে পারবে না। আর কিসে তোমাকে জানাবে কর্মফল দিন কী? আবার বলি, তুমি কি জান কর্মফলের দিনটি কী ? সেদিন কোন মানুষ অন্য মানুষের জন্য কোন কিছুর ক্ষমতা রাখবে না। আর সেদিন সকল বিষয় হবে আল্লাহর কর্তৃত্বে।(82:13-19)

4.আল্লাহ, যিনি আসমান ও যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তা ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি আরশের উপর উঠেছেন। তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য কোন অভিভাবক নেই এবং নেই কোন সুপারিশকারী। তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?(32:4)

5.আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোন বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।(2:48)

6.আর তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না এবং কোন ব্যক্তি থেকে বিনিময় গ্রহণ করা হবে না আর কোন সুপারিশ তার উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।(2:123)

7.হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দান করেছি, তা থেকে তোমরা দান কর, সেই দিন আসার পূর্বে, যেদিন কোন প্রকার ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না। আর অবিশ্বাসীরাই সীমালংঘনকারী।(2:254)

8.আর তিনি বরকতময়, যার কর্তৃত্বে রয়েছে আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সবকিছু; আর কিয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই আছে এবং তাঁরই নিকট তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। আর তিনি ছাড়া যাদেরকে তারা আহবান করে তারা সুপারিশের মালিক হবে না; তবে তারা ছাড়া যারা জেনে-শুনে সত্য সাক্ষ্য দেয় ।(43:85,86)

9.আর তারা আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদত করছে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে, ‘এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’। বল, ‘তোমরা কি আল্লাহকে আসমানসমূহ ও যমীনে থাকা এমন বিষয়ে সংবাদ দিচ্ছ যা তিনি অবগত নন’? তিনি পবিত্র মহান এবং তারা যা শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে।(10:18)

10.আর যদি তুমি দেখতে, যখন যালিমরা মৃত্যু কষ্টে থাকে, এমতাবস্থায় ফেরেশতারা তাদের হাত প্রসারিত করে আছে (তারা বলে), ‘তোমাদের জান বের কর। আজ তোমাদেরকে প্রতিদান দেয়া হবে লাঞ্ছনার আযাব, কারণ তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তোমরা তার আয়াতসমূহ সম্পর্কে অহঙ্কার করতে।আর নিশ্চয় তোমরা এসেছ আমার কাছে একা একা, যেরূপ সৃষ্টি করেছি আমি তোমাদেরকে প্রথমবার এবং আমি তোমাদেরকে যা দান করেছি, তা তোমরা ছেড়ে রেখেছ তোমাদের পিঠের পেছনে। আর আমি তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের দেখছি না, যাদের তোমরা মনে করেছ যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের মধ্যে আল্লাহর অংশীদার। অবশ্যই ছিন্ন হয়ে গেছে তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক। আর তোমরা যা ধারণা করতে, তা তোমাদের থেকে হারিয়ে গিয়েছে।(6:93,94)

11.বল, ‘তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে করতে তাদেরকে আহবান কর। তারা আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে অণু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়। আর এ দু’য়ের মধ্যে তাদের কোন অংশীদারিত্ব নেই এবং তাদের মধ্য থেকে কেউ তাঁর সাহায্যকারীও নয়। আর আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া তাঁর কাছে কোন সুপারিশ কারো উপকার করবে না। অবশেষে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হবে তখন তারা বলবে, ‘তোমাদের রব কী বলেছেন’? তারা বলবে, ‘সত্যই বলেছেন’ এবং তিনি সুমহান ও সবচেয়ে বড়।(34:22,23)

12.সেদিন তারা আহ্বানকারীর অনুসরণ করবে, এ ব্যাপারে এদিক ওদিক করতে পারবে না। আর দয়াময়ের সামনে সমস্ত শব্দ স্তব্ধ হয়ে যাবে; কাজেই মৃদু ধ্বনি ছাড়া তুমি কিছুই শুনবেন না। দয়াময় যাকে অনুমতি দেবেন ও যার কথায় তিনি সন্তুষ্ট হবেন, সে ছাড়া কারো সুপারিশ সেদিন কোন কাজে আসবে না। তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে, তা তিনি অবগত, কিন্তু তারা জ্ঞান দ্বারা তাঁকে বেষ্টন করতে পারে না। (20:108 110)

13.যে পরম দয়াময়ের নিকট প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে, সে ছাড়া অন্য কারো সুপারিশ করবার ক্ষমতা থাকবে না।(19:87)

14.বস্তুতঃ ইহকাল ও পরকাল আল্লাহরই। আকাশমন্ডলীতে কত ফিরিশতা রয়েছে তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না, যতক্ষণ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এবং যার প্রতি সন্তুষ্ট তাকে অনুমতি না দেন। যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারাই ফিরিশতাদেরকে নারী-বাচক নাম দিয়ে থাকে।অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অনুমানের অনুসরণ করে। আর সত্যের মুকাবিলায় অনুমানের কোনই মূল্য নেই।(53:25-28)

15.আর তারা বলে, দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্ৰহণ করেছেন। তিনি পবিত্র মহান! তারা তো তার সম্মানিত বান্দা। তারা তাঁর আগে বেড়ে কথা বলে না; তারা তো তাঁর আদেশ অনুসারেই কাজ করে থাকে।তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা সবই তিনি জানেন। আর তারা সুপারিশ করে শুধু তাদের জন্যই যাদের প্ৰতি তিনি সন্তুষ্ট এবং তারা তার ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত।(21:26-28)

16.আর আমার কি যুক্তি আছে যে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁর কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে, আমি তার ইবাদাত করব না? আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য ইলাহ গ্ৰহণ করব? রহমান আমার কোন ক্ষতি করতে চাইলে তাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধার করতেও পারবে না।এরূপ করলে অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে পড়ব। নিশ্চয় আমি তোমাদের রবের উপর বিশ্বাস করেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোন। (36:22-25)

17.তারা বলবে,হে জাহান্নামের অধিবাসীরা,) তোমাদের আজ কিসে এ ভয়াবহ আযাবে উপনীত করেছে? তারা বলবে, আমরা মুসল্লীনদের (সাহায্যকারীদের , সৎ কর্মশীলদের, দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীদের, দায়িত্বশীলদের, রবের বিধান পালনকারীদের, রবের বিধান বাস্তবায়নকারীদের) অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। অভাবগ্রস্থকে আহার্য দিতাম না। অহেতুক কাজে মগ্ন থাকতাম।কর্মফল দিবস অস্বীকার করতাম।এমনকি আমাদের নিকট নিশ্চিত বিশ্বাস (অর্থাৎ মৃত্যু) না আসা পর্যন্ত। ফলে সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন কাজে আসবে না। (74:42—48)

18.তারা কি শুধু তার পরিণামের অপেক্ষা করছে? যেদিন তার পরিণাম প্রকাশ হবে, তখন পূর্বে যারা তাকে ভুলে ছিল, তারা বলবে, ‘আমাদের রবের রাসূলগণ তো সত্য নিয়ে এসেছিলেন। সুতরাং আমাদের জন্য কি সুপারিশকারীদের কেউ আছে, যে আমাদের জন্য সুপারিশ করবে, কিংবা আমাদের প্রত্যাবর্তন করানো হবে, তারপর আমরা যা করতাম তা ভিন্ন অন্য আমল করব’? তারা তো নিজদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তারা যে মিথ্যা রটাত, তা তাদের থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।(7:53)

19.আর অপরাধীরাই শুধু আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, পরিণামে আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।‘এবং কোন অন্তরঙ্গ বন্ধুও নেই’।হায়! যদি আমাদের একবার প্রত্যাবর্তনের সুযোগ ঘটত, তাহলে আমরা বিশ্বাসী হয়ে যেতাম! (26:99-102)

20.আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সে দিন অপরাধীরা হতাশ হয়ে পড়বে। আর আল্লাহর সাথে শরীককৃত তাদের উপাস্যগুলো তাদের জন্য সুপারিশকারী হবে না এবং তারা তাদের শরীককৃত উপাস্যগুলোকে অস্বীকারকারী হবে।আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে।(30:12-14)

21.বল, ‘আমি তোমাদেরকে এ বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধনভান্ডার আছে, অদৃশ্য সম্বন্ধেও আমি অবগত নই এবং তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি ফিরিশতা। আমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ হয় আমি শুধু তারই অনুসরণ করি!’ বল, ‘অন্ধ ও চক্ষুষমান কি সমান? তোমরা কি অনুধাবন কর না?’ যারা ভয় করে যে, তাদের রবের নিকট তাদেরকে এমন অবস্থায় সমবেত করা হবে যে, তিনি ব্যতীত তাদের কোন অভিভাবক বা সুপারিশকারী থাকবে না, তুমি তাদেরকে এ কুরআন দ্বারা সতর্ক কর; হয়তো তারা সাবধান হবে।আর তুমি পরিত্যাগ কর তাদেরকে, যারা নিজদের দীনকে গ্রহণ করেছে খেল-তামাশা রূপে এবং প্রতারিত করেছে যাদেরকে দুনিয়ার জীবন। আর তুমি কুরআন দ্বারা উপদেশ দাও, যাতে কোন ব্যক্তি তার কৃতকর্মের দরুন ধ্বংসের শিকার না হয়, তার জন্য আল্লাহ ছাড়া নেই কোন অভিভাবক এবং নেই কোন সুপারিশকারী। আর যদি সে সব ধরণের মুক্তিপণও দেয়, তার থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। এরাই তারা, যারা ধ্বংসের শিকার হয়েছে তাদের কৃতকর্মের দরুন। তাদের জন্য রয়েছে ফুটন্ত পানীয় এবং বেদনাদায়ক আযাব, যেহেতু তারা কুফরী করত। (6:50,51,70)

22.আজ প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের ফল দেওয়া হবে; আজ কারও প্রতি যুলুম করা হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর। আর তুমি তাদের আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করে, যখন দুঃখ কষ্টে তাদের প্রাণ কন্ঠাগত হবে। যালিমদের জন্য কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু নেই, যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে এমন কোন সুপারিশকারীও নেই। (40:17-18)
23.তবে কি তারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে সুপারিশকারী বানিয়েছে? বল, ‘তারা কোন কিছুর মালিক না হলেও এবং তারা না বুঝলেও’? বল, ‘সকল সুপারিশ আল্লাহর মালিকানাধীন। আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব একমাত্র তাঁরই। তারপর তোমরা তাঁর কাছেই প্রত্যাবর্তিত হবে’। (39:43,44)

বিচারের দিনে সুপারি সংক্রান্ত আয়াত সমূহ(39:43,44)(32:4) (2:254)(21:47)(82:19)(2:48)(2:123)(6:51)(6:70) (10:3)(2:255)(43:86)(10:18)(20:109)(19:87)(21:28)(53:26)((34:23)(74:48)(6:94)(36:23)(39:44)

(সালামুন আলা নুহু-11:46,66:10)(সালামুন আলা ইব্রাহিম 9:114) (সালামুন আলা লুত-29:32,33,11:81,66:10)(সালামুন আলা ইসা-5:117)(সালামুন আলা মুহাম্মদ 9:80,113)(4:105109)(2:119)(39:19)(3:128)(4:84)(10:41)(34:25)(2:139,141)(43:44)(25:30) (7:188)(6:50)(46:9)(69:43-48)

By AnamulHoqBn

Quranic Duas.bn article

আল কুরআন পড়ে জানতে পারি যে,সকল নবী ও রাসূলরা বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহর কাছে দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য চেয়েছেন,তাই আমাদেরকেও বিপদের সময় ধৈর্যধারণ করে দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাইতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা নিজের যতভুল ত্রুটি আছে,সেগুলো সংশোধন করে,অনুশোচনা করে,অনুতপ্ত হয়ে আল কুরানের রব্বানা (হে আমাদের রব) বা রব্বি (হে আমার রব) যুক্ত দোয়াগুলোর মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারি অথবা নিজের মাতৃভাষায় নির্জনে,নিরবে মনের কথাগুলো নিজের রবকে বা মালিককে অনুয়-বিনয় করে বলতে পারি। যেভাবে অনুতপ্ত হয়ে,অনুশোচনা করে,সকল প্রকার অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে বিরত থেকে বিশ্বাসী ও আত্মসমর্পন কারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। আমরা সর্বদা নিচের দুয়াগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাইবো!!!!

পরম করুণাময় অসীম দয়াল,আল্লাহর নামে শুরু করছি। (২৭:৩০) হে আমার রব! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় লইতেছি এবং হে আমার রব! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকেও আপনার আশ্রয় লইতেছি।(২৩:৯৭,৯৮) আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার কাছে অনুতপ্ত হয়ে ,অনুশোচনা হয়ে করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি। (৭:১৪৩) নিশ্চয় আমি আপনার কাছে অনুতপ্ত হয়ে ,অনুশোচনা হয়ে করছি এবং আমি অবশ্যই আতœসর্মপণকারীদের অর্ন্তভুক্ত। (৪৬:১৫) হে আমার রব, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন।(২৮:১৬) হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নিজের প্রতি যুলম করেছি। আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করছি।(২৭:৪৪) আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আতœসর্মপণ করলাম। (২:১৩১) আমি আল্লাহর নিকট আতœসর্মপণ করলাম । (৩:২০) আমাদের রব আল্লাহ। (২২:৪০,৪১:৩০,৪৬:১৩) আমার রব তিনিই যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান।(২:২৫৮)

হে আমাদের রব,আপনি এসব অনর্থক সৃষ্টি করনি। আপনি পবিত্র মহান। সুতরাং আপনি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর। হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবে, অবশ্যই তাকে আপনি অপমান করবেন। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের রব, নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, হে আমাদের রব! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের সকল দোষক্রটি দূর করুন এবং পুন্যবানদের সাথে আমাদের মৃত্যু দান করুন। হে আমাদের রব, আর আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার বার্তাবাহকগণের মাধ্যমে। আর কিয়ামতের দিনে আপনি আমাদেরকে অপমান করবেন না। নিশ্চয় আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।(৩:১৯১-১৯৪) আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি,আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা অবতীর্ণ করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর, আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে অন্যান্য নবীগণকে। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী। (৩:৮৪)(২:১৩৬) আমরা শুনিয়াছি এবং পালন করিয়াছি, হে আমাদের রব! আমরা তোমার ক্ষমা চাই আর প্রত্যাবর্তন তোমারই নিকট। (০২:২৮৫)

আমরা বিশ্বজগতের রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম।(৭:১২১) আমরাই আল্লাহর সাহায্যকারী,আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং সাক্ষী থেকো যে,আমরা আত্মসমর্পণকারী। হে আমাদের রব! আমরা সে সকল বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা তুমি নাযিল করেছ, আমরা রাসূলের অনুগত হয়েছি। অতএব, আমাদিগকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাভুক্ত কর । (৩:৫২,৫৩)(৫:১১১) হে আমাদের রব,আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, কাজেই তুমি আমাদেরকে সাক্ষীদাতাদের তালিকাভূক্ত কর।(৫ঃ ৮৩) হে আমাদের রব, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর। (৩:১৬) হে আমাদের রব,আমরা ঈমান এনেছি। অতএব আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া করুন,আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (২৩:১০৯) হে আমাদের রব, আমাদেরকে ক্ষমা কর ও দয়া কর, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।(২৩:১১৮) হে আল্লাহ, আপনিই আমাদের রক্ষক। আপনি ক্ষমা করুন ও দয়া করুন। আপনিই শ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল। (৭:১৫৫)আপনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই,আপনি পবিত্র মহান। আমি তো সীমালংঘনকারী। (২১: ৮৭) হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছি,যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর তবে তো আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (৭:২৩) সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করলে আমরা পথ পেতামনা(৭:৪৩)

হে আমাদের রব,আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহান দাতা। হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি মানুষকে সমবেত করবেন এমন একদিন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না। (৩:৮,৯) হে আমাদের রব! আমাদেরকে নিজের কাছ থেকে রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্যে আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন ।(১৮: ১০) হে আমার রব! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও যাতে আমি তোমার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি,যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর। (২৭: ১৯) হে আমার রব! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও যাতে আমি তোমার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি,যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং আমার জন্য আমার সন্তানদের সৎকর্ম পরায়ণ করে দিন। আমি অবশ্যই আপনার নিকট তাওবা করছি এবং নিশ্চয়ই আমি অনুগত বান্দাদের একজন। (৪৬:১৫) হে আমাদের রব, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের রব! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না , যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছেন, হে আমাদের রব,আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের উপর দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (২:২৮৬)হে আমাদের রব!দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতে ও আমাদের কল্যাণ দাও। আর আমাদের দোযখের আগুন হতে রক্ষা কর। (২:২০১) হে আমাদের রব, আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের আযাব ফিরিয়ে নিন। নিশ্চয় এর আযাব হল অবিচ্ছিন্ন। নিশ্চয় তা আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসাবে অতীব নিকৃষ্ট! (২৫:৬৫,৬৬)

হে আমাদের রব,আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তাননাদি দান করুন যারা আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন।(২৫:৭৪) হে আমার রব! আমাকে সন্তানহীন করে রেখ না, যদিও তুমি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।(২১:৮৯)হে আমাদের রব, আমাকে তুমি তোমার নিকট হতে সৎ বংশধর দান কর।নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।(৩:৩৮)হে আমার রব, তারা যা করছে, তা থেকে আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে আপনি রক্ষা করুন। (২৬:১৬৯) হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও। হে আমার রব! আমার প্রার্থনা কবুল করুন। হে আমার রব,যেদিন হিসাব হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং বিশ্বাসী গণকে ক্ষমা করুন। (১৪:৪০, ৪১)হে আমার রব, আপনি ক্ষমা করুন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং যাহারা বিশ্বাসী হইয়া আমার গৃহে প্রবেশ করে তাহাদেরকে এবং বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদরেকে আর যালিমদের জন্য ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করো না।(৭১:২৮)হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন পালন করেছেন।(১৭:২৪) হে আমাদের রব! আমাদেরকে আর আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা কর যারা ঈমানের ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রবর্তী হয়েছে, আর যারা ঈমান এনেছে তাদের ব্যাপারে আমাদের অন্তরে কোন হিংসা বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের রব! তুমি বড়ই করুণাময়, অতি দয়ালু।(৫৯:১০)

হে আমার রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন। হে আমার রব! আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিন। আমার কাজকে আমার জন্য সহজ করে দিন। আমার জিহ্ববার জড়তা দূর করে দিনÑ যাতে লোকেরা আমার কথা বুঝতে পারে। (২০:১১৪,২৫-২৮) হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের আন্তর্ভুক্ত করুন। এবং আমাকে পরর্বতীদের মধ্যে সত্যভাষী করুন। এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তভূক্ত করুন। (২৬:৮৩,৮৪,৮৫) হে আমাদের রব! আমাদের এ কাজকে তুমি কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী। হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে ও আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে ইবাদতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (২:১২৭-১২৮) হে আমার রব! আমাকে প্রবেশ করান সত্যতার সাথে এবং আমাকে বের করান সত্যতার সাথে এবং আপনার কাছ থেকে আমাকে দান করুন সাহায্যকারী শক্তি। (১৭:৮০)হে আমাদের রব, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান। (৬৬: ৮)

হে আমাদের রব! আমরা আপনারই উপর ভরসা করেছি , আপনারই দিকে মুখ করেছি এবং আপনারই নিকটই আমাদের প্রত্যাবর্তন । হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে অবিশ্বাসীদের পীড়নের পাত্র বানাবেন না। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(৬০:৪,৫) আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ঠ,তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই। আমি তাহারই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা আরশের অধিপতি।(৯:১২৯)আমাদের জন্যেই আল্লাহ যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্মবিধায়ক। কত উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী। (৩:১৭৩ ও ৮:৪০)আমরা আল্লাহরই উপর ভরসা করলাম। হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে যালেম সম্প্রদায়ের উৎপীড়নের পাত্র করো না। আর আপনি আপনার নিজ করুণায় অবিশ্বাসী সম্প্রদায় হতে আমাদেরকে রক্ষা কর।’(১০:৮৫,৮৬) আল্লাহরই উপর আমরা তাওয়াক্কুল করি। হে আমাদের রব, আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে যথার্থ ফয়সালা করে দিন। আর আপনি শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী।(৭:৮৯) হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন,যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন।কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (৩:২৬)

হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী।(৪:৭৫) হে আমার রব! আপনি আমাকে যালেম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেন না।(২৩:৯৪)হে আমাদের রব! আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের সঙ্গী করবেন না।(৭:৪৭)হে আমাদের রব! আমাদেরকে ধৈর্য দান কর, আমাদেরকে অবিচলিত রাখ এবং অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (২:২৫০)হে আমাদের রব! আপনি আমাদের অপরাধগুলো এবং আমাদের কাজ-কর্মের বাড়াবাড়িগুলোকে ক্ষমা করুন,আমাদেরকে সুদৃঢ়পদে রাখুন এবং অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।(৩:১৪৭) হে আমার রব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন। (২৯:৩০) হে আমার রব! আপনি যালিম সম্প্রদায় থেকে আমাকে রক্ষা করুন। (২৮:২১) হে আমার রব, আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করিবে আমি তাহার মুখাপেক্ষী।(২৮:২৪)আর আমাদেরকে রিযিক দান করুন এবং আপনিই তো শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।(৫ঃ ১১৪)হে আমার রব, আপনার কাছে আমার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি তৈরী করুন।(৬৬:১১) নিশ্চয় আমার সালাত, আমার ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের রব আল্লাহর জন্যেই। তাহার কোন শরীক নাই এবং আমি ইহার জন্যেই আদিষ্ট হইয়াছি এবং আমিই প্রথম আত্মসমর্পণকারী (৬:১৬২-১৬৩) হে আমাদের রব, আমাদেরকে ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মৃত্যু দান করুন”।(৭:১২৬)হে আকাশ ও জমিনের মালিক! দুনিয়া ও আখিরাতে আপনিই আমার অভিভাবক, আপনি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অর্ন্তভুক্ত করুন। (১২:১০১) নিশ্চয় আমি অসহায়, অতএব আপনি আমার প্রতিবিধান করুন।(৫৪:১০)আমি দুঃখ কষ্টে পতিত হয়েছি, আপনিতো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (২১:৮৩) সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আমাদের রব পরম ক্ষমাশীল, মহাগুণগ্রাহী’। (৩৫:৩৪) যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন। তিনিই আমাকে খাওয়ান এবং তিনিই আমাকে পান করানএবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন এবং তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর আমাকে পুনর্জীবিত করবেন। এবং আশা করি, তিনি কিয়ামতের দিন আমার অপরাধসমূহ মার্জনা করে দেবেন।(২৬:৭৮-৮২)

আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের রবের, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে, অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দেওয়া জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।(১১৩:১-৫)আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের,তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আতœগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। (১১৪:১-৬)আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাই।(২:৬৭)

তিনিই আল্লাহ একক অদ্বিতীয়। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।তিনি কাউকেও জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।(১১২:১-৪) তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, দৃশ্য-অদৃশ্যের জ্ঞাতা, তিনিই পরম করুণাময়, দয়ালু। তিনিই আল্লাহ,যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনিই বাদশাহ,মহাপবিত্র, ত্রুটিমুক্ত,নিরাপত্তাদানকারী,রক্ষক, মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত, তারা যা শরীক করে তা হতে পবিত্র মহান। তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবনকর্তা,আকৃতিদানকারী, তাঁর রয়েছে সুন্দর নামসমূহ, আসমান ও যমীনে যা আছে সবই তার মহিমা ঘোষণা করে। তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (৫৯:২২-২৪)

আসমানসমূহে যা কিছু আছে এবং যমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে, আধিপত্য তারই এবং প্রশংসা তারই; আর তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।(৬৪:১) বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।(৬৭:১)আর তিনি বরকতময়,যার কর্তৃত্বে রয়েছে আসমানসমূহ,যমীন ও এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু।(৪৩:৮৫) সকল প্রশংসা আল্লাহর,যিনি আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও যমীনে যা কিছু আছে তার মালিক। আর আখিরাতে ও সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি প্রজ্ঞাময়,সম্যক অবগত। (৩৪:১) অতএব আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা, যিনি আসমানসমূহের রব, যমীনের রব ও সকল সৃষ্টির রব।(৪৫:৩৬) সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন এবং সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো।(৬:১)

আমি একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর দিকে আমার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি যিনি আকাশমন্ডলী আর পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন।আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।(৬:৭৯) নিশ্চয় আমি বিশ্বজগতের রব আল্লাহকে ভয় করি’। (৫:২৮)(৫৯:১৬) তিনিই আল্লাহ, আমার রব। আর আমি আমার রবের সাথে কাউকে শরীক করি না’।(১৮:৩৮) আল্লাহ মহান, পবিত্র এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে আমি তাদের অন্তভুর্ক্ত নই। (১২:১০৮) তারা যা আরোপ করে, আসমানসমূহ ও যমীনের রব এবং আরশের রব তা থেকে পবিত্র-মহান।(৪৩:৮২) তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ অতিপবিত্র, মহামহান।(২১:২২) তারা যা বলে, আল্লাহ সে সব দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র,পবিত্র।(৩৭:১৫৯) (২৩:৯১) তিনি পবিত্র মহান এবং তারা যা বিবরণ দেয় তা থেকে ঊর্ধ্বে।(৬:১০০) আর সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্ পবিত্র ও মহিমান্বিত! (২৭:৮) তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তারা যাকে শরীক করে, তিনি তারঊর্ধ্বে।(২৩:৯২) তিনি মহান পবিত্র, তারা যাকে শরীক সাব্যস্ত করে তাত্থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।(১৬:১)(১০:১৮)(৩০:৪০)(৩৯:৬৭) আল্লাহ পবিত্র, মহান । তারা যাকে শরীক সাব্যস্ত করে তাত্থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।(২৮:৬৮)তারা যা শরীক স্থির করে, আল্লাহ তা হতে পবিত্র, মহান। (৫৯:২৩)(৫২:৪৩) তারা যে শরীক করে তিনি তা থেকে পবিত্র।(৯:৩১) তিনি পবিত্র মহান এবং তারা যা বলে তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে।(১৭:৪৩) অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়।(২৩:১৪) সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ কত বরকতময়। (৭:৫৪)(৪০:৬৪) আর সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্ পবিত্র ও মহিমান্বিত! (২৭:৮)আমাদের রব,পবিত্র ও মহান। (১৭:১০৮) (৬৮:২৯) আমার রব, পবিত্র মহান । (১৭:৯৩) হে আল্লাহ!আপনি পবিত্র মহান । (১০:১০)

যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের রব আল্লাহরই জন্য। যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু। যিনি বিচার দিনের মালিক। আমরা শুধু আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকটেই সাহায্য চাই। তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার গযব বর্ষিত হয়েছে, তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।(১:১-৭) তারা যা আরোপ করে, তা থেকে পবিত্র ও মহান আপনার রব, সকল ক্ষমতার অধিকারী।আর শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলদের প্রতি। আর সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের রব আল্লাহর জন্য।(৩৭:১৮০-১৮২) হে আমাদের রব, আর আমার দোআ কবূল করুন। (১৪:৪০)

By AnamulHoquehttps://www.facebook.com/100000395832341/posts/pfbid02LPxAcDWjwFkwVDeGMUUfZVj6yxEVzGydbF4xnxjJmQ6qJ2xxBYoDfkDspAaF3BAbl/?mibextid=9R9pXO

কুরআনের কথাগুলো হলো একটি দিক-নির্দেশনা বা উপদেশ

যেই বিধান কিছু মানুষের সাথে যায় আর কিছুর সাথে যায় না তা আল্লাহর বিধান নয় চিন,জাপান,কোরিয়া, মোংগলিয়া,উপজাতি এ সকল অঞ্চলে মানুষের দাড়িই হয়না তাই আল্লাহ দাড়ির বিধান কুরআনে দেননি কেননা তিনি কুরআনকে বলেছেন পুরো বিশ্বের জন্য উপদেশগ্রন্থ।

বিশ্বজগতের জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে এই কুরআনের কথাগুলো হলো একটি দিক-নির্দেশনা বা উপদেশ(সূরা নং-৩৮,আয়াত-৮৭)।

১.কুরআন বুজে পড়লে আপনি জানবেন,আল্লাহ সবার সাথে উত্তম আচরণ,সদ্ব্যবহার করতে বলেছেন।বাসার কাজের লোক,পরিচিত,অপরিচিত সবার সাথে,আর আল্লাহর এই আদেশ জানাই সালাত।

“তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহর,তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতাপিতার সাথে, নিকট আত্মীয়ের সাথে,ইয়াতীম,মিসকীন,নিকট আত্মীয়- প্রতিবেশী,অনাত্মীয়-প্রতিবেশী,পার্শ্ববর্তী সাথী,মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সাথে। নিশ্চয় আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।(সুরা আন-নিসা,আয়াত ৩৬)

আর কুরআনের বাইরের বই পড়লে জানবেন,শবে মেরাজ, শবে কদর আর নফল নামাজ,তাহাজ্জুদ ও একরাতে সব গুনাহ মাপের নামাজের নিয়ম।মানে যা ব্যক্তির কাছ থেকে বিনিময়ের মাধ্যমে শিখতে হয় বা বই কিনে শিখতে হয়।

২.কুরআন বুজে পড়লে আপনি জানবেন আল্লাহ কাউকে উপহাস করতে,একে অপরকে দোষারোপ করতে,মন্দ নামে ডাকতে নিষেধ করেছেন।যারা এসব করে আল্লাহর কাছে তারা যালিম।কিন্তু আপনি আমি নোয়াখাইল্লা, কাইল্লা,ভোটকা কারো ব্যার্থতায় হাসাহাসি মানে উপহাস করি।আমাদের সো কলড আলেমরা এক অপরকে দোষারোপ,গালাগালি কাফের মুশরেক বলছে।

“হে মু’মিনগণ!কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে উপহাস না করে;কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন মহিলা অপর কোন মহিলাকেও যেন উপহাস না করে;কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করনা এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকনা;ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ।যারা এ ধরণের আচরণ হতে নিবৃত্ত না হয় তারাই যালিম।(সুরা আলহুজরাত,আয়াত ১১)

এই আয়াত অনুযায়ী আমরা যেসব ধর্মীয় বক্তাদের দোষারোপ করতে দেখি,আল্লাহর কাছে তারা যালিম।

৩.আল্লাহ ঘুষ দিতে ও অন্যের সম্পদ খেতে নিষেধ করেছেন।আর আপনি এ কাজ করলে,আপনার সালাত কায়েম হলো না।অথচ আল্লাহর নিষেধ করা কাজ আমরা প্রতিনিয়ত করে চলছি লেবাস ধরে,কুরআন কায়েমের কথা বলে মানে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার নামে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছি।

“তোমরা নিজদের মধ্যে তোমাদের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না এবং তা বিচারকদেরকে (ঘুষ হিসেবে) প্রদান করো না। যাতে মানুষের সম্পদের কোন অংশ পাপের মাধ্যমে জেনে বুঝে খেয়ে ফেলতে পার।(সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৮)

৪.আল্লহ সম্পদ পুঞ্জিভূত বা আগলিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন যদি আপনি তা পালন করেন,আপনি সালাত কায়েম করলেন।কিন্তু আমি আপনি অন্যের সম্পদ এমনকি সরকারি সম্পদ ও নিজের করে আগলিয়ে রেখে ভোগ করি।”জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সম্পদ পুঞ্জিভুত করে রেখে ছিল আর আগলিয়ে রেখেছিল(সুরা মাআরিজ আয়াত ১৭/১৮)

৫.কুরআন বুজে পড়লে আপনি জানবেন,আল্লাহ বিনয়ী হতে ও ক্ষমাশীল হতে বলেছেন।আর না বুজে পড়লে আপনাকে যে যা বুজাবে তা আল্লাহর কথা বলে চালানো যাবে।”তুমি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর,এবং লোকদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দাও, আর মূর্খদের কে এড়িয়ে চল।(সুরা আল-আরাফ,আয়াত ৭)

আর আল্লাহর এ সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলাই সালাত কায়েম করা।জ্বী আপনি ঠিকই শুনেছেন আল্লাহ সালাত কায়েম করতে বলেছেন,পড়তে নয়।পার্থিব জগতের প্রতিটা কাজে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলাটাই সার্বক্ষণিক সালাতে থাকা।আল্লাহ বলছেন তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতে দাঁড়াবে না যতক্ষন তোমরা বুঝতে পারসো তোমরা কি বলছো।আচ্ছা আমরা কি স্বাভাবিক অবস্থায় বুঝে সালাত দাড়াই? উত্তর না,তাই আমরা সালাত কায়েম করি না, আমরা সালাত পড়ি।

ভূমি অফিসের কর্মকর্তা,আমি ঘুষ দিতে গড়িমসি করায় বললেন,”আপনি টাকা দিলে দেন নয় আমি নামাজে গেলাম।”তাই আল্লাহ বলছেন সুরা বাকারা ১৭৭ নাম্বার আয়াতে “কল্যান নেই তোমাদের পূর্ব-পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে,এরপরই তিনি বলেছেন আমাদের জন্য কিসে কল্যান রয়েছে।

কিন্তু আমরা আরবি উচ্চারণ,তেলাওয়াত,হরফ প্রতি নেকিতে এতই ব্যস্ত যে আমরা মূল বইয়ের চাইতে, আউট অফ সিলেবাসে র বইয়ে প্রতি মনোযোগী বেশি,সে সকল বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে মূল বইকে ডিফেন্ড করি,সেই বইকে মুল বইয়ের সমকক্ষ বা বেশি গুরুত্ব দেই।ব্যক্তির কথা দিয়ে আল্লাহর কথা জাজ করি,তাই আল্লাহ বলে দিয়েছেন,অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে একই সাথে শির্ক করে (সুরা12:আয়াত106)

Sourcefb

সৎকর্ম বাদ দিয়ে প্রচলিত নামাজ নিয়ে জান্নাতের চাবি বানিয়ে ফেলেছে?

সৎকর্ম বাদ দিয়ে প্রচলিত নামাজ নিয়ে জান্নাতের চাবি বানিয়ে ফেলেছে। কিন্তু কুরআনে একটা জায়গায় প্রচলিত নামাজ পড়ে জান্নাতে যাওয়ার কথা বলা নেই কিন্তু 63 বেশি আয়াতে এক সৃষ্টিকর্তাতে বিশ্বাস ও সৎ কর্মে জান্নাতের কথা বলা আছে কুরআনে প্রচলিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে ও সারা দিন না খেয়ে রোজা রাখলে জান্নাতে যাওয়া যাবে নিচে উল্লেখিত 84 টি আয়াতের মত একটি আয়াত উল্লেখ করুন। নইলে আপনারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করছেন তা সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দিন।

আল্লাহ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কুরআনে বলেছেন—“যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে তারা-ই সৃষ্টির সেরা”(৯৮:৭)। পুরুষই হোক বা নারী-ই হোক, যারা তওবা করে,বিশ্বাসী হয়ে, সৎকাজ করবে, তাদের প্রাপ্য নষ্ট হবে না, বরং পরিপূর্ণ ভাবে দেয়া হবে। তাদের ভয় নাই, তারা দু:খিতও হবে না—তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে।এই কথাগুলো বলা আছে নীচের উল্লেখিত আয়াত সমূহে।
1.সময়ের শপথ ! নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে তারা ছাড়া যারা বিশ্বাস করেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।(103:1-3)
2.নিশ্চয় সৎকাজ অসৎকাজকে মিটিয়ে দেয়। এটা তাদের জন্য উপদেশ যারা উপদেশ গ্রহণ করে।(11:114)
3.তবে যারা তাওবা করে, বিশ্বাস ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের পাপকর্মগুলিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকাজ করে, সে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ অভিমুখী হয়। (25:70,71)
4.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে,আমি অবশ্যই তাদের থেকে তাদের মন্দকাজগুলো মিটিয়ে দেব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে তারা যে উত্তম কাজ করত, তার প্রতিদান দেব।(29:7)
5.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করব।(29:9)
6.হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর—বিশুদ্ধ তাওবা,সম্ভবত তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। (66:8)
7.আর আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি, যে তাওবা করে, বিশ্বাস করে , সৎকাজ করে এবং সৎপথে অবিচল থাকে।(20:82)
8.তবে যে ব্যক্তি তাওবা করেছিল, বিশ্বাস করেছিল এবং সৎকর্ম করেছিল, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (28:67)

9.অতঃপর যারা বিশ্বাস করে ও নিজেকে সংশোধন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।(6:48)
10.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদসমূহে স্থান দান করব; যার নিচে নদীমালা প্রবাহিত থাকবে, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কার কত উত্তম!(29:58)
11.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত; যার তলদেশে নদী প্রবাহিত,যখনই তাদের ফলমূল খেতে দেওয়া হবে, তখনই তারা বলবে, আমাদেরকে পূর্বে জীবিকা হিসেবে যা দেয়া হতো, এতো তারই মতো। একই রকম ফল তাদেরকে দেয়া হবে এবং সেখানে রয়েছে তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিণী, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে।(2:25)
12.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে, যারা ইয়াহুদী এবং খ্রিষ্টান হয়েছে অথবা সাবেয়ী হয়েছে, এদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ এবং শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট পুরস্কার আছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।(2:62)
13.আর যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই হবে জান্নাতের অধিবাসী; তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।(2:82)
14.নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস করেছে, সৎকাজ করেছে, সালাত প্রতিষ্ঠা করেছে এবং যাকাত দিয়েছে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রব-এর নিকট। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।(2:277)
15.আর যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে, তিনি তাদের প্রতিফল পুরোপুরিভাবে প্রদান করবেন। আর আল্লাহ যালিমদেরকে ভালবাসেন না।(3:57)
16.আর যারা বিশ্বাস করে ও ভাল কাজ করে অচিরেই আমি তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার পাদদেশে নদী-নালাসমূহ প্রবাহিত; যেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী থাকবে এবং তাদেরকে আমি চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় প্রবেশ করাব।(4:57)
17.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে, আমরা তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। আর কে আল্লাহর চেয়ে কথায় সত্যবাদী?(4:122)
18.আর পুরুষই হোক অথবা নারীই হোক, যারাই বিশ্বাসী হয়ে সৎকাজ করবে, তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দু পরিমাণও যুলুম করা হবে না। (4:124)
19.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তিনি তাদেরকে পূর্ণ পুরস্কার দান করবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশী দেবেন,কিন্তু যারা উন্নাসিকতা প্রদর্শন করে ও অহঙ্কার করে তাদেরকে তিনি মর্মন্তুদ শাস্তি প্রদান করবেনএবং আল্লাহ ছাড়া তাদের জন্য তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।(4:173)
20.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের জন্য ক্ষমা এবং মহাপুরস্কার আছে।(5:9)
21.নিশ্চয় যারা বিশ্বাসী এবং ইয়াহুদী, স্বাবেয়ী ও খ্রিষ্টান তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করবে এবং সৎকাজ করবে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।(5:69)
22.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে, তার জন্য তাদের কোন পাপ নেই, যদি তারা সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, অতঃপর সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে, পুনরায় সাবধান হয় এবং সৎকর্মশীল হয়। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলগণকে ভালবাসেন। (5:93)
23.আর যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে এমন কোন ব্যক্তিকে আমি তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করিনা – তারাই হবে জান্নাতবাসী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। (7:42)
24.আর যারা বিশ্বাস করেছে, হিজরত করেছে এবং নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে তারা আল্লাহর কাছে মর্যাদায় শ্ৰেষ্ঠ। আর তারাই সফলকাম।(9:20)
25.…….আর যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে ইনসাফপূর্ণ প্রতিফল প্রদানের জন্য। আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে অত্যন্ত গরম পানীয় ও অতীব কষ্টদায়ক শাস্তি; কারণ তারা কুফরী করত।(10:4)
26.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের রব তাদের বিশ্বাসের কারণে তাদেরকে পথ নির্দেশ করবেন; নিয়ামতে ভরপুর জান্নাতে তাদের পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। (10:9)
27.কিন্তু যারা ধৈর্য ধারণ করে ও সৎকর্ম করে এমন লোকদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং বিরাট প্রতিদান। (11:11)
28.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে ,সৎকর্ম করেছে এবং তাদের রবের প্রতি বিনয়াবনত হয়েছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।(11:23)
29.যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, কল্যাণ ও শুভ পরিণাম তাদেরই।(13:29)
30.যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে প্রবেশ করানো হবে জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত; সেখানে তারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে,সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।(14:23)
31.পুরুষ ও নারী যে কেউই বিশ্বাসী হয়ে সৎকর্ম করবে, তাকে আমি নিশ্চয়ই সুখী জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।(16:97)

  1. তোমরা সৎকাজ করলে সৎকাজ নিজেদের জন্য করবে এবং মন্দকাজ করলে তাও করবে নিজেদের জন্য। নিশ্চয় এ কুরআন এমন পথনির্দেশ করে, যা সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সৎকর্মপরায়ণ বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।(17:7,9)
    33.সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং এতে তিনি কোন প্রকার বক্রতা রাখেননি। একে করেছেন সুপ্রতিষ্ঠিত তাঁর কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য এবং বিশ্বাসীগণ, যারা সৎকাজ করে তাদেরকে এই সুসংবাদ দেয়ার জন্য যে, তাদের জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার ।(18:1,2)
    34.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করি, যে সৎকাজ করে আমি তার কর্মফল নষ্ট করিনা।(18:30)
    35.ধন-সম্পদ আর সন্তানাদি পার্থিব জীবনের শোভা-সৌন্দর্য, আর তোমার রবের নিকট পুরস্কার লাভের জন্য স্থায়ী সৎকাজ হল উৎকৃষ্ট আর আকাঙ্ক্ষা পোষণের ভিত্তি হিসেবেও উত্তম। (18:46)
    36.আর যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে, তার জন্য প্রতিদান স্বরূপ আছে কল্যাণ এবং তার প্রতি ব্যবহারে আমি নম্র কথা বলব।(18:88)
    37.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউস।(18:107)
    38.বল,আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষ, আমার প্রতি ওহী হয় যে, তোমাদের ইলাহ একমাত্র সত্য ইলাহ। কাজেই যে তার রব-এর সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন সৎকাজ করে ও তার রব-এর ইবাদাতে কাউকেও শরীক না করে।(18:110)
    39.কিন্তু তারা নয়—যারা তাওবা করেছে, বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে। তারা তো জান্নাতে প্ৰবেশ করবে। আর তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না।(19:60)
    40.এবং যারা সৎ পথে চলে আল্লাহ তাদেরকে অধিক হিদায়াত দান করেন এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার রবের পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসাবেও শ্রেষ্ঠ।(19:76)
    41.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকর্ম করেছে পরম দয়াময় তাদের জন্য পারস্পরিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করবেন।(19:96)
    42.আর যারা তাঁর নিকট বিশ্বাসী হয়ে ও সৎকর্ম করে উপস্থিত হবে, তাদের জন্য আছে সমুচ্চ মর্যাদাসমূহ।(20:75)
    43.নিশ্চয় আমি তার জন্য বড় ক্ষমাশীল যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকাজ করে ও সৎপথে অবিচল থাকে।(20:82)
    44.আর যে বিশ্বাসী হয়ে সৎকাজ করে, কোন আশংকা নেই অবিচারের এবং অন্য কোন ক্ষতির।(20:112)
    45.সুতরাং যদি কেউ বিশ্বাসী হয়ে সৎকর্ম করে, তবে তার কর্ম-প্রচেষ্টা অগ্রাহ্য হবে না এবং নিশ্চয় আমি তা লিখে রাখি।(21:94)
    46.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে অবশ্যই আল্লাহ তাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তা-ই করেন।(22:14)
    47.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে,আল্লাহ তাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেথায় তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণ-কঙ্কণ ও মুক্তা দ্বারা এবং সেথায় তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের।(22:23)
    48.সুতরাং যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।(22:50)
    49.সে দিন আল্লাহরই আধিপত্য হবে;তিনিই তাদের বিচার করবেন; যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তারা অবস্থান করবে সুখময় জান্নাতে।(22:56)
    50.হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকাজ কর; তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবগত। (23:51)
    51.তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে অবশ্যই প্রতিনিধিত্ব দান করবেন; যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে……(24:55)
    52.কিন্তু তারা ছাড়া যারা বিশ্বাস করেছে, সৎকাজ করেছে, আল্লাহকে বেশী পরিমাণ স্মরণ করেছে এবং অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্ৰহণ করেছে। আর যালিমরা শীঘ্রই জানবে কোন ধরনের গন্তব্যস্থলে তারা ফিরে যাবে। (26:227)
    53.অতঃপর সুলাইমান তার এ কথাতে মৃদু হাসলেন এবং বললেন, হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি এমন সৎকাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন। আর আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শামিল করুন।(27:19)
    54.তবে যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকাজ করে, সে অবশ্যই সফলকাম হবে। কেহ যদি সৎ কাজ করে তাহলে সে তার কাজ অপেক্ষা উত্তম ফল পাবে, আর যে মন্দ কাজ করে সেতো শাস্তি পাবে শুধু তার কাজ অনুপাতে। (28:67,84)
    55.আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক তোমাদেরকে! যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ছাড়া তা কেউ পাবে না।(28:80)
    56.অতএব যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে, তারা জান্নাতে আনন্দে থাকবে।(30:15)
    57.যে অবিশ্বাস করে, অবিশ্বাসের জন্য সে-ই দায়ী। আর যারা সৎকাজ করে, তারা নিজেদেরই জন্য সুখশয্যা রচনা করে। কারণ, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন।নিশ্চয় তিনি অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না। (30:44,45)
    58.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য আছে সুখের উদ্যানরাজি। (31:8)
    59.যারা বিশ্বাস করে সৎকাজ করে, তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাদের আপ্যায়নের জন্য জান্নাত হবে তাদের বাসস্থান।(32:19)
    60.আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি অনুগত হবে এবং সৎকাজ করবে তাকে আমরা পুরস্কার দেব দু’বার। আর তার জন্য আমরা প্ৰস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক।(33:31)
    61.এটা এজন্য যে, যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। এদেরই জন্য ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা রয়েছে।’(34:4)
    62.এবং তাকে বলেছিলাম, তুমি পূর্ণ মাপের বর্ম তৈরী কর,ওগুলির কড়াসমূহ যথাযথভাবে সংযুক্ত কর এবং তোমরা সৎকাজ কর। তোমরা যা কিছু কর নিশ্চয় আমি তার সম্যক দ্রষ্টা।(34:11)
    63.আর তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আমার নৈকট্য লাভের সহায়ক হবে না। তবে নৈকট্য লাভ করবে তারাই যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে এবং তারা তাদের কাজের জন্য পাবে বহুগুণ পুরস্কার। আর তারা প্রাসাদসমূহে নিরাপদে বসবাস করবে।(34:37)
    64.যারা অবিশ্বাস করে, তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি এবং যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।(35:7)
    65.দাউদ বললেন, তোমার ভেড়ীটিকে তার ভেড়ীগুলোর সঙ্গে যুক্ত করার দাবী করে সে তোমার প্রতি যুলুম করেছে। আর শরীকদের অনেকে একে অন্যের উপর তো সীমালঙ্ঘন করে থাকে—করে না শুধু যারা বিশ্বাসী এবং সৎকাজ করে, আর তারা সংখ্যায় স্বল্প। আর দাউদ বুঝতে পারলেন, আমরা তো তাকে পরীক্ষা করলাম। অতঃপর তিনি তার রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং নত হয়ে লুটিয়ে পড়লেন, আর তাঁর অভিমুখী হলেন।(38:24)
    66.যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে এবং যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়, আমি কি তাদেরকে সমান গণ্য করব? অথবা সাবধানিগণকে কি অপরাধিগণের সমান গণ্য করব?(38:28)

67.কেউ মন্দ কাজ করলে সে শুধু তার কাজের অনুরূপ শাস্তিই প্রাপ্ত হবে। আর যে পুরুষ কিংবা নারী বিশ্বাসী হয়ে সৎকাজ করবে তবে তারা প্ৰবেশ করবে জান্নাতে, সেখানে তাদেরকে দেয়া হবে অগণিত রিযিক।(40:40)
68.আর সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান এবং যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে এবং যারা দুষ্কৃতিপরায়ণ। তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক।(40:58)
69.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার রয়েছে।(41:8)
70.আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করে, সৎকাজ করে এবং বলে, ‘আমি তো আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)’ ।(41:33)
71.যে সৎকাজ করে সে নিজের কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে নিজেই ভোগ করবে। আর তোমার প্রতিপালক তাঁর দাসদের প্রতি কোন যুলুম করেন না।(41:46)
72.তুমি সীমালংঘনকারীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন তাদের কৃতকর্মের জন্য; অথচ তা আপতিত হবে তাদেরই উপর। আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তারা থাকবে জান্নাতের উদ্যানসমূহে। তারা যা কিছু চাইবে তাদের রবের কাছে তাদের জন্য তা-ই থাকবে। এটাই তো মহা অনুগ্রহ। আল্লাহ এ সুসংবাদই তাঁর বান্দাদেরকে দেন, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে। বল, আমি এর বিনিময়ে তোমাদের কাছ থেকে আত্মীয়তার সৌহাদ্য ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান চাই না। যে উত্তম কাজ করে আমরা তার জন্য এতে কল্যাণ। বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, গুণগ্ৰাহী।।(42:22,23)
73.তিনি বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের আহবানে সাড়া দেন এবং তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ বর্ধিত করেন; আর অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (42:26)
74.যে সৎকাজ করে সে তার কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেউ মন্দ কাজ করলে তা তারই উপর বর্তবে, তারপর তোমাদেরকে তোমাদের রবের দিকেই প্রত্যাবর্তিত করা হবে।(45:15)
75.দুষ্ককৃতকারীরা কি মনে করে যে, আমি জীবন ও মৃত্যুর দিক দিয়ে ওদেরকে তাদের সমান গণ্য করব, যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে?তাদের বিচার-সিদ্ধান্ত কতই না মন্দ!(45:21)
76.অতঃপর যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকাজ করেছে, পরিণামে তাদের রব তাদেরকে প্রবেশ করাবেন স্বীয় রহমতে। এটাই সুস্পষ্ট সাফল্য।(45:30)
77.আর যারা বিশ্বাস করেছে, সৎকাজ করেছে এবং মুহাম্মদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তাতে বিশ্বাস করেছে,আর তা-ই তাদের রবের পক্ষ হতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাদের মন্দ কাজগুলো বিদূরিত করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন।(47:2)
78.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। কিন্তু যারা অবিশ্বাস করে তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং তারা আহার করে যেমন চতুষ্পদ জন্তুরা আহার করে। আর জাহান্নামই তাদের বাসস্থান। (47:12)
79.আর যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের।(48:29)
80.স্মরণ কর,যেদিন তিনি তোমাদেরকে সমবেত করবেন সমাবেশ দিবসে,সেদিন হবে লাভ-ক্ষতির দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে, তিনি তার পাপরাশি মোচন করবেন এবং তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এটাই মহা সাফল্য।(64:9)
81.এক রাসূল, যে তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌র সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে, যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনার জন্য। আর যে কেউ আল্লাহর উপর বিশ্বাস করে,সৎকাজ করবে তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; আল্লাহ্‌ তো তাকে উত্তম রিযিক দেবেন।(65:11)
82.কিন্তু যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।(84:25)
83.নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; এটাই মহাসাফল্য।(85:11)
84.তবে যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। (95:6)

85.পৃথিবী যখন আপন কম্পনে প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে।এবং পৃথিবী যখন তার ভারসমূহ বের করে দেবে, এবং মানুষ বলবে, ‘এর কি হল?’সেদিন পৃথিবী তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।যেহেতু তোমার রব তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।সেদিন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দলে বের হবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো যায়। অতএব কেউ অণু পরিমাণও সৎ কাজ করলে সে তা দেখবে এবং কেহ অণু পরিমান অসৎ কাজ করলে তাও দেখতে পাবে। (99:1-8)
86.যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে আসবে তার জন্য থাকবে তা থেকে উত্তম প্রতিদান এবং সেদিনের ভীতিকর অবস্থা থেকে তারা নিরাপদ থাকবে। আর যারা মন্দ কাজ নিয়ে আসবে তাদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে; (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা যে আমল করেছ তারই প্রতিদান তোমাদেরকে দেয়া হল’। (27:89,90)
87.যে সৎপথ অবলম্বন করবে। সে তো নিজেরই মঙ্গলের জন্য সৎপথ অবলম্বন করে এবং যে পথভ্রষ্ট হবে সে তো পথভ্রষ্ট হবে নিজেরই ধ্বংসের জন্য। আর কোন বহনকারী অন্য কারো ভার বহন করবে না। আর আমরা রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত শাস্তি প্রদানকারী নই।(17:15)
88.হে মানুষ! তুমি তোমার রবের কাছে পৌছা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাত লাভ করবে।(84:6)
89.সুতরাং যে তার রবের সাথে সাক্ষাত কামনা করে সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার রবের ইবাদাতে কেহকেও শরীক না করে। (18:110)

Anamul Hoque Anamul fbfd

আল কুরআন যেভাবে পরিত্যক্ত:

📚 আল কুরআন যেভাবে পরিত্যক্ত:

✅ ইমামদের ও ইমামদের নামে রচিত কিতাব বা বই তাদের নিজস্ব মতামতে ভরপুর। তাই যারা মাযহাবের অনুসরণ করে, তারা উক্ত কিতাব বা বই গুলো পড়তে ব্যস্ত। কুরআন পড়তে বললেই বিরক্ত।

✅ সালাফী বা আহলে হাদীছদের রচিত কিতাব বা বই গুলো রসূনের নামে বর্ণিত হাদীছ দ্বারা ভরপুর। উক্ত কিতাব বা বই গুলো তাদের অনুসারীরা পড়তে ব্যস্ত। কুরআন পড়তে বললেই বিরক্ত।

✅ তরিকাহ পন্থী বা পীর পন্থীদের কিতাব বা বই গুলো বানোয়াট কেরামতিতে ভরপুর। মুরিদ বা ভক্তগণ উক্ত কিতাব বা বই গুলো পড়তে ব্যস্ত। কুরআন পড়তে বললেই বিরক্ত।

✅ প্রচলিত তাবলীগ জামাআত ইলিয়াস সাহেবের রচিত কিতাব বা বই গুলো পাঠ করতে ব্যস্ত। কুরআন পড়তে বললেই বিরক্ত।

⚽ আল কুরআনের দাওয়াত প্রদানে আমার অভিজ্ঞতা:

✅ আমি একান্ত বন্ধুর নিকট আল কুরআনের দাওয়াত প্রদান করেছি, তখনই তারা আমাকে পরিত্যগ করেছে।

✅ আমার সংগঠন আল কুরআনের দাওয়াতের কারণে আমাকে পরিত্যগ করেছে।

✅ সাধারণ মানুষকে আল কুরআনের দাওয়াত প্রদান করছি তারাও দুনিয়া ভর্তি মানুষের দলিল পেশ করে, আমাকে পরিত্যগ করে চলেছে।

✅ ছাত্র ছাত্রীগণ একাডেমিক বইয়ের ভিড়ে আল কুরআন পরিত্যক্ত করে রেখেছে।

✅ চাকরি জীবিগণ নিজ দফতর নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত হওয়ায়, আল কুরআন পরিত্যক্ত করে রেখেছে।

✅ আল কুরআনের দাওয়াত যাঁরা গ্রহণ করছে, তাদেরকে আবার মোল্লারা অবজ্ঞা করে বলছে, তোমরা কুরআনের কিছু বুঝতে পরবেনা। কারণ কুরআন বুঝতে হলে, ১৬ প্রকারের ইলেম লাগবে। অনেক বই পড়তে হবে। তবেই তো কুরআনের কিছু বুঝতে পরবে। আমরা ২০ বছর যাবত পড়াশোনা করেই কিছু বুঝতে পারছি না। আর তোমরা পড়াশোনা না করেই কুরআন বুঝে ফেল্লে, ইত্যাদি কথা বলে অবজ্ঞা, অপমান করে পরিত্যগ করে থাকেন।

✅ আল কুরআনের বিধান থেকে দুরে থাকার পরিনতি:

وَمَنْ اَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِيْ فَاِنَّ لَهٗ مَعِيْشَةً ضَنْكًا وَّنَحْشُرُهٗ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ اَعْمٰي
আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয় এক সংকুচিত জীবন এবং আমি তাকে কিয়ামত দিবসে উঠাবো অন্ধ অবস্থায়।
Ta Ha ২০:১২৪
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِيْۤ اَعْمٰي وَقَدْ كُنْتُ بَصِيْرًا
সে বলবে, ‘হে আমার রব, কেন আপনি আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালেন? অথচ আমি তো ছিলাম দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন’?
Ta Ha ২০:১২৫

قَالَ كَذٰلِكَ اَتَتْكَ اٰيٰتُنَا فَنَسِيْتَهَا ۚ وَكَذٰلِكَ الْيَوْمَ تُنْسٰي
তিনি বলবেন, ‘এমনিভাবেই তোমার নিকট আমার নিদর্শনাবলী এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হল’। Ta Ha ২০:১২৬

وَكَذٰلِكَ نَجْزِيْ مَنْ اَسْرَفَ وَلَمْ يُؤْمِنْۢ بِاٰيٰتِ رَبِّهٖ ؕ وَلَعَذَابُ الْاٰخِرَةِ اَشَدُّ وَاَبْقٰي
আর এভাবেই আমি প্রতিফল দান করি তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে না। আর আখিরাতের আযাব তো অবশ্যই কঠোরতর ও অধিকতর স্থায়ী।
Ta Ha ২০:১২৭

✅ কুরআন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।

وَإِنَّهُۥ لَذِكْرٌ لَّكَ وَلِقَوْمِكَ وَسَوْفَ تُسْـَٔلُونَ
নিশ্চয় এ কুরআন তোমার জন্য এবং তোমার কওমের জন্য উপদেশ। আর অচিরেই তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে। Az-Zukhruf 43:44

✅ রসুলের মামলা কুরআন পরিত্যাজ্য কারীদের জন্যঃ

وَقَالَ الرَّسُوْلُ يٰرَبِّ اِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوْا هٰذَا الْقُرْاٰنَ مَهْجُوْرًا
আর রাসূল বলবে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে। Al-Furqan 25:30

📗 কুরআনের অনুসরণ করলে সে কি কাফের? সে কি পাগল? সে কি মিথ্যা বাদী?

সালামুন আ’লাইকুম, সম্মানিত পাঠক পাঠিকাগণ আসুন দেখেনি কুরআনে রব্বুল আ’লামীন এ বিষয়ে কি বলেছেন:

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন, আর তাতে কোন বক্রতার অবকাশ রাখেননি। সূরা আল কাহফ ১৮:১

(১) আসুন দেখেনি কাফেরের পরিচয় অর্থাৎ কাফের কারা?
(২) আসুন দেখেনি কাফেররা কি চায়?
(৩) আসুন দেখেনি মিথ্যাবাদী কারা?
(৪) আসুন দেখেনি পাগল কাদেরকে বলা হয়েছে?
(৫) আসুন দেখেনি এসব মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার পর। আল্লাহ তাঁর রাসুলগণেকে কি সান্ত্বনা দিয়েছে।

আসুন জেনেনি কাফের শব্দের অর্থঃ
কুফর অর্থঃ ঢেকে রাখা, যারা আল্লাহ প্রদত্ত ফিতরাত কে ডেকে রাখে তারা কাফের। কাফের অর্থঃ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞ, অমান্যকারী।

হে আমার প্রতিপালক! আমি শয়ত্বানের কুমন্ত্রণা হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, হে আমার প্রতিপালক! যাতে তারা আমার কাছে আসতে না পারে। সূরা আল মুমিনুন ২৩:৯৭+৯৮

(১)#_আসুন দেখেনি কাফেরের পরিচয় অর্থাৎ কাফের কারা:

وَلَقَدْ ضَرَبْنَا لِلنَّاسِ فِى هَٰذَا ٱلْقُرْءَانِ مِن كُلِّ مَثَلٍۚ وَلَئِن جِئْتَهُم بِـَٔايَةٍ لَّيَقُولَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا مُبْطِلُونَ
আর আমি তো মানুষের জন্য এই কুরআনে সব ধরনের দৃষ্টান্ত পেশ করেছি। আর যদি তুমি তাদের কাছে কোন আয়াত নিয়ে আস, তবে অবশ্যই কাফিররা বলবে, ‘তোমরা তো বাতিলপন্থী’।
Ar-Rum 30:58

مَا يُجَٰدِلُ فِىٓ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِى ٱلْبِلَٰدِ
কাফিররাই কেবল আল্লাহর আয়াতসমূহ নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়। সুতরাং দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে। Ghafir 40:4

ٱلَّذِينَ يَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ كَٰفِرُونَ
যারা আল্লাহর পথে বাধা প্রদান করত এবং তাতে বক্রতা সন্ধান করত এবং তারা ছিল আখিরাতকে অস্বীকারকারী’।
Al-A’raf 7:45; 11:19

إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُوا۟ بَيْنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيَقُولُونَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَنَكْفُرُ بِبَعْضٍ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُوا۟ بَيْنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا
নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায় । An-Nisa’ 4:150

أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْكَٰفِرُونَ حَقًّاۚ وَأَعْتَدْنَا لِلْكَٰفِرِينَ عَذَابًا مُّهِينًا
তারাই প্রকৃত কাফির এবং আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি অপমানকর আযাব। An-Nisa’ 4:151

يَعْرِفُونَ نِعْمَتَ ٱللَّهِ ثُمَّ يُنكِرُونَهَا وَأَكْثَرُهُمُ ٱلْكَٰفِرُونَ
তারা আল্লাহর নিআমত চিনে, তারপরও তারা তা অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশই কাফির। An-Nahl 16:83

وَإِذَا رَءَاكَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَٰذَا ٱلَّذِى يَذْكُرُ ءَالِهَتَكُمْ وَهُم بِذِكْرِ ٱلرَّحْمَٰنِ هُمْ كَٰفِرُونَ
আর যারা কুফরী করে তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তোমাকে কেবল উপহাসের পাত্র হিসেবে গ্রহণ করে। তারা বলে, ‘এ কি সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের দেবতাদের সমালোচনা করে?’ অথচ তারাই ‘রহমান’-এর আলোচনার বিরোধিতা করে। Al-Anbiya 21:36

ٱلَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ هُمْ كَٰفِرُونَ
যারা যাকাত দেয় না। আর তারাই আখিরাতের অস্বীকারকারী।
Fussilat 41:7

(কাফেরদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কুরআন মাজিদে আল্লাহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন সংক্ষেপে কিছু আয়াত তুলে ধরা হল। নিচের আয়াতগুলো ভালো করে বুঝে অধ্যায়ন করলে কাফেরদের সম্পর্কে ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।
(৪৩:৩০)(৪০:১৪)(৩৪:৩৪)(২৩:১১৭)(১৬:৮৩)(৭:৪৫-৭৬)

(২)#_আসুন দেখেনেই কাফেররা কি করতে চায়।

১/ কাফেররা চায় আমরা যেন কোরআন অর্থাৎ আল্লাহর নাযিলকৃত ওহীর অনুসরণ না করি। সূরা আল ইসরা ১৭:৭৩

২/কাফেররা চায় মুসলিমদেরকে যমীন থেকে উৎখাত করতে। সূরা আল ইসরা ১৭:৭৬

৩/ তাদের কাছে যখন কুরআনের আয়াত দিয়ে কথা বলা হয় কাফেররা তখন আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। সূরা হাজ্জ ২২:৭২

৪/ যখনই কোন আয়াত কাফেরদের বিরুদ্ধে যারা বলে তখন তারা তাদেরকে হত্যা করতেও পিছপা হয়নি। সূরা আল বাকারা ২:৮৭

৫/কাফেররা সবাই ফেরাউনের সম্প্রদায়ের অতএব তাদের শেষ পরিণতি তাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে মারবে। সূরা আল ইসরা ১৭:১০৩

(৩)#_আসুন দেখেনি কাদেরকে মিথ্যেবাদী বলেছ কাফের সম্প্রদায়ের লোকেরা।

১/কাফেররা সালামুন আলা মোহাম্মদকেও মিথ্যাবাদী বলেছে।
সূরা আল আনআম ৬:৩৩

২/ সালামান আলা আদম থেকে শুরু করে সালমান আলা মুহাম্মদ পর্যন্ত সমস্ত নবী রাসূলদেরকে কাফেররা মিথ্যাবাদী বলেছে। সূরা আল আনআম ৬:৩৪

৩/সালামুন আলা নূহের সম্প্রদায় আদ ও সামূদ রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে। সুরা হাজ্জ ২২:৪২

৪/ সালামুন আলা নূহের কওম রসুলগণকে মিথ্যেবাদী বলেছিল। সূরা আশ-শুআরা ২৬:১০৫

৫/ সালামুন আলা লূতের সম্প্রদায় রসুলদেরকে মিথ্যেবাদী বলেছিল।

৬/ পূর্বেও বহু সেনা শিবিরের অধিপতি এবং বড় নেতা ও শাসকরাও রসূলদেরকে মিথ্যেবাদী বলেছিল।
সূরা সোয়াদ ৩৮:১২

৭/মক্কার কাফের মুশরিক সালামুন আলা মুহাম্মদকে জাদুকর এবং মিথ্যাবাদী বলেছিল। সূরা ছোয়াদ ৩৮:৪ কারণ তিনি আল্লাহর হুকুম আদেশ নির্দেশিত জীবন ব্যবস্থা মেনে চলার জন্য অর্থাৎ কুরআনের অনুসরণ করার জন্য বলেছিলেন সেই জন্য ।

এখনোও বর্তমান সমাজে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করে, তাদেরকে শুধুমাত্র কুরআনের অনুসরণ করার কথা বললে তখন তারা মানব রচিত কিছু কিতাবের কথা বলে, সেগুলোকে অস্বীকার করলে তারা বলে তুমি কাফের তুমি মিথ্যেবাদী তুমি পাগল ছাগল যা তা বলে। এমনকি আক্রমণাত্মকভাবে মারমুখী হয়ে ওঠেঃ

وَيَوْمَ نَحْشُرُ مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ فَوْجًا مِّمَّنْ يُّكَذِّبُ بِاٰيٰتِنَا فَهُمْ يُوْزَعُوْنَ
আর স্মরণ কর সেদিনের কথা, যেদিন প্রত্যেক জাতির মধ্য থেকে যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত তাদেরকে আমি দলে দলে সমবেত করব। অতঃপর তাদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
An-Naml ২৭:৮৩

যখন তারা এসে যাবে তখন আল্লাহ বলবেন- তোমরা কি আমার নিদর্শনকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলে যদিও তা তোমরা জ্ঞানায়ত্ত করতে পারনি; নাকি তোমরা অন্য কিছু করছিলে? সূরা আন নামাল ২৭:৮৪
(২:৮৭)(৬:৩৪-৫৭)(২২:৪২)(২৬:১০৫+১২৩+১৪১+১৬০)(৩৫:৪)(৩৮:৪+১২)(৩৯:৫৯)(৪০:৫)(৫:১২)(৫৪:৯+১৮+২৩+৩৩)(৬৯:৪)

(৪)#_আসুন দেখেনি কাফেররা কাদেরকে পাগল বলেছে।

১/ কাফের মুশরিকরা বলে যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে! সে অবশ্যই পাগল। সূরা আল হিজর ১৫:৬

২/ ফেরআউন সালামুন আলা মুসাকে পাগল বলেছিল। সূরা আশ-শুআরা ২৬:২৭

৩/ কাফেররা বলে আমরা কি এক পাগলা কবির কথা মেনে চলবে। সূরা আস সাফফাত ৩৫:৩৬

৪/ এখন তারা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আর তারা বলছে পাগল- যাকে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।
সূরা আদ দুখান ৪৪:১৪

৫/ তখন সে তার ক্ষমতার দাপটে মুখ ফিরিয়ে নিল আর বলল- ‘এ লোক একটা যাদুকর না হয় পাগল।
সূরা আয যারিয়াত ৫১:৩৯

৬/ এভাবে যখনই তাদের আগের লোকেদের মধ্যে কোন রসূল এসেছে, তখনই তারা বলেছে- ‘সে যাদুকর না হয় পাগল। সূরা আয-যারিয়াত ৫২:৫২

৭/ তাদের আগে নূহের জাতিও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা আমার বান্দাহকে অস্বীকার করেছিল আর বলেছিল- ‘‘একটা পাগল’’ আর তাকে ভয় দেখানো হয়েছিল।

(৫)#_আসুন দেখেনি কাফেরদের এসব কথার জবাবে আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলছেন।

১/ আমি আমার বান্দাহর প্রতি যা নাযিল করেছি তাতে তোমাদের কোন সন্দেহ থাকলে তোমরা তার মত কোন সূরাহ এনে দাও আর তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে আল্লাহ ছাড়া তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে আহবান কর। সূরা আল বাকারা ২:২৩

(মুশরিকরা রসূলদের কথা অমান্য করলে রসূলদের তো আর কিছুই করার নেই, কারণ)

২/স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া ছাড়া রসূলদের উপর কি কোন দায়িত্ব আছে? সূরা আন নাহল ১৬:৩৫

(৬)#_আসুন দেখেনেই কাফের-মুশরিকদের মিথ্যা অপবাদ তিরস্কার এর পর আল্লাহর তার রাসূলদের কি সান্ত্বনা দিয়েছেন।

১/ তারা যা বলে তা তোমাকে কষ্ট দেয় এটা আমি অবশ্যই ভালভাবে অবগত, কেননা তারা তো তোমাকে মিথ্যে মনে করে না, প্রকৃতপক্ষে যালিমরা আল্লাহর আয়াতকেই প্রত্যাখ্যান করে। সূরা আল আনআম ৬:৩৩

২/ তোমার পূর্বেও রসূলগণকে মিথ্যে মনে করা হয়েছে কিন্তু তাদেরকে মিথ্যে মনে করা এবং কষ্ট দেয়া সত্ত্বেও তারা ধৈর্যধারণ করেছে, যতক্ষণ না তাদের কাছে আমার সাহায্য এসেছে। আল্লাহর ওয়াদার পরিবর্তন হয় না, নাবীগণের কিছু সংবাদ তো তোমার নিকট পৌঁছেছেই। সূরা আল আনআম ৬:৩৪

৩/ কাফিররা ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর আয়াত নিয়ে ঝগড়া করে না। কাজেই দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ তোমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে। সূরা গাফির ৪০:৪

৪/ কাজেই তুমি উপদেশ দিতে থাক, তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি গণকও নও, আর পাগলও নও। সূরা আত তূর ৫২:২৯

৫/ তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও।তোমার জন্য অবশ্যই আছে অফুরন্ত পুরস্কার। নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের উচ্চমার্গে উন্নীত। শীঘ্রই তুমি দেখতে পাবে আর তারাও দেখবে। তোমাদের মধ্যে কে পাগলামিতে আক্রান্ত। তোমার প্রতিপালক বেশি জানেন কে তাঁর পথ থেকে গুমরাহ হয়ে গেছে, আর সঠিক পথপ্রাপ্তদেরকেও তিনি ভাল করে জানেন। কাজেই তুমি মিথ্যাবাদীদের কথা মান্য কর না। সূরা আল ক্বলাম ৬৮:২-৮

৬/তোমাদের সঙ্গী পাগল নয়। সূরা আত তাকবীর ৮১:২২

৭/ এরা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর, আর আমার বান্দাহ দাঊদের কথা স্মরণ কর, সে ছিল শক্তি-সামর্থ্যের অধিকারী আর বড়ই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। সূরা সোয়াদ ৩৮:১৭

৮/ তোমরা হীনবল ও দুঃখিত হয়ো না, বস্তুতঃ তোমরাই জয়ী থাকবে যদি তোমরা মু’মিন হও। সূরা আল ইমরান ৩:১৩৯

৯/ আর তোমার রব্বের ‘ইবাদাত করতে থাক যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কাছে মৃত্যু না আসে। সূরা আল হিজর ১৫:৯৯

(৭)#_আসুন দেখেনেই মুসলমানদেরকে অর্থাৎ কিতাবধারীদের আল্লাহ কি বলেছেন।

১/ হে কিতাবধারীগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীন সম্বন্ধে অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করো না, আর সেই সম্প্রদায়ের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না যারা ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে আর সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। সূরা আল মায়েদা ৫:৭৭

২/ দীনের মধ্যে জবরদস্তির অবকাশ নেই, নিশ্চয় হিদায়াত গোমরাহী হতে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। কাজেই যে ব্যক্তি তাগুতকে অমান্য করল এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল, নিশ্চয়ই সে দৃঢ়তর রজ্জু ধারণ করল যা ছিন্ন হওয়ার নয়। আল্লাহ সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞাতা। সূরা আল বাকারা ২:২৫৬

৩/ বল, ‘‘হে মানুষ! আমার দ্বীন সম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে তাহলে জেনে রেখ, তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার ‘ইবাদাত কর, আমি তাদের ‘ইবাদাত করি না, বরং আমি আল্লাহর ‘ইবাদাত করি যিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটান, আর আমি আদিষ্ট হয়েছি মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য। সূরা ইউনুস ১০:১০৪

৪/ আর আমাকে এও আদেশ দেয়া হয়েছে যে, তুমি দ্বীনের দিকে তোমার মুখ প্রতিষ্ঠিত কর একনিষ্ঠভাবে, আর তুমি কক্ষনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। সূরা ইউনুস ১০:১০৫

৫/ (এটা শিক্ষা) যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ‘ইবাদাত করবে না, আমি অবশ্যই তাঁর পক্ষ হতে তোমাদের জন্য ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদদাতা। সূরা হূদ ১১:২

৬/ যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ‘ইবাদাত করো না, অন্যথায় আমি আশঙ্কা করছি যে, তোমাদের উপর একদিন বেদনাদায়ক ‘আযাব আসবে। সূরা হুদ ১১:২৬

৭/ তারা তাদের মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলোকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তা হতে দিবেন না, তিনি তাঁর আলোকে পূর্ণ না করে ছাড়বেন না, যদিও কাফিরগণ তা অপছন্দ করে। সূরা তওবা ৯:৩২

৮/ আর যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তাদের নাপাকীর উপর আরো নাপাকী বাড়িয়ে দেয়, আর তাদের মৃত্যু হয় কাফির অবস্থায়। সূরা তওবা ৯:১২৫

৯/ যখন তারা এসে যাবে তখন আল্লাহ বলবেন- তোমরা কি আমার নিদর্শনকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলে যদিও তা তোমরা জ্ঞানায়ত্ত করতে পারনি; নাকি তোমরা অন্য কিছু করছিলে? সূরা আন নামাল ২৭:৮৪

১০/ তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে খুব ভাল ক’রেই জানেন। তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন, আর ইচ্ছে করলে তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন; আমি তোমাকে তাদের কাজকর্মের জন্য দায়িত্বশীল করে পাঠাইনি। সূরা আল ইসরা ১৭:৫৪

১১/ অথচ এ পথই তোমার প্রতিপালকের সরল-সঠিক পথ, যারা নাসীহাত গ্রহণ করে আমি তাদের জন্য নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বিবৃত করে দিয়েছি। সূরা আল ইমরান ৩:১২৬

১২/ আল্লাহ্ই আমার ও তোমাদের প্রতিপালক, কাজেই তোমরা তাঁরই ‘ইবাদাত কর, এটাই সরল সুদৃঢ় পথ। সূরা মারইয়াম ১৯:৩৬

‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যা অবতীর্ণ করেছ আমরা তার উপর ঈমান এনেছি, রসূলের অনুসরণ করেছি, সুতরাং আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের মধ্যে লিপিবদ্ধ করুন। সূরা আল ইমরান ৩:৫৩

AnamulHoque

কোরআনে বর্ণিত তাওহীদের দাওয়া প্রসঙ্গে ৯ জন নবীর ভাষণ-

কোরআনে বর্ণিত তাওহীদের দাওয়া প্রসঙ্গে ৯ জন নবীর ভাষণ-👇

🥀১] 👉 নবী নূহ (আঃ) এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉 আল্লাহ বলেন- নিশ্চয়’ই আমি নূহকে তার সম্প্রাদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি, সে বললো, হে আমার সম্প্রাদায় তোমরা এক ইলাহের ইবাদত করো, তিনি ব্যতিত তোমাদের আর অন্য কোনো উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্য এক মহা দিবসের শাস্তির আশংকা করি।(সূরা আরাফ ৫৯) তার সম্প্রাদায়ের লোকেরা তাকে (নূহকে) বললো, আমরা তোমাকে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় দেখছি।(সূরা আরাফ৬০)

🥀২] 👉নবী হুদ (আঃ) এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- আদ সম্প্রাদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম তার ভাই হুদ’কে, সে বললো হে আমার সম্প্রাদায়, তোমরা কেবল মাত্র এক ইলাহের ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই।(সূরা আরাফ৬৫) তার সম্প্রাদায়ের লোকেরা বলতে লাগলো, আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখতে পাচ্ছি, এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদি মনে করি, তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যই এসেছ যে আমরা এক ইলাহের ইবাদত করি আর আমাদের বাপ দাদারা যাদের পূজা করতো তাদের ছেড়ে দেই?এত’এব নিয়ে আসো থাকে, যার দ্বারা তুমি আমাদের ভয় দেখাচ্ছো?
(সূরা আরাফ৬৬-৭০)

🥀৩] 👉নবী সালেহ আঃ এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- সামুদ সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছি তার ভাই সালেহ’কে। সে বললো, হে আমার সম্প্রাদায় তোমরা একক ইলাহের ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের আর অন্য কোনো উপাস্য নেই। তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। এটি হল আল্লাহর উটনী, তোমাদের জন্য নিদর্শন, তাকে আল্লাহর যমীনে চরে খেতে দাও, মন্দ উদ্দেশে একে স্পর্শ করবে না, করলে পীড়াদায়ক শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করবে।(সূরা আরাফ৭৩) তার জাতির গর্বিত প্রধানগণ ঐসব লোকদেরকে বলেছিল যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল, যারা তাদের মধ্যে ঈমান এনেছিল- ‘‘তোমরা কি জান যে সালিহ তার প্রতিপালক কর্তৃক প্রেরিত? বলেছিল, ‘তিনি যে বাণী নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন তাতে আমরা বিশ্বাসী’।”যারা অহঙ্কার করেছিল তারা বলেছিল, ‘তোমরা যাতে বিশ্বাস করেছ আমরা তা অস্বীকার করছি।’”অতঃপর তারা উষ্ট্রীটিকে মেরে ফেলল এবং তাদের প্রতিপালকের স্পষ্ট বিরোধিতা করে চলল আর বলল, ‘হে সালিহ! তুমি যদি রসূল হয়েই থাক তাহলে তা নিয়ে এসো আমাদেরকে যার ওয়াদা করছ (ভয় দেখাচ্ছ)।”অতঃপর ভূমিকম্প তাদেরকে হঠাৎ পাকড়াও করল আর তারা তাদের ঘরগুলোতে মুখ থুবড়ে পড়ে রইল।”
(সূরা আরাফ৭৫-৭৮)

🥀৪]👉 নবী ইব্রাহীম আঃ এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- নিশ্চয়ই ইব্রাহীম ছিল সত্যবাদি নবী, সে তার পিতা আযরকে বললো, হে আমার পিতা আপনি ও আপনার জাতি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর পূজা করছে যা তাদের কল্যায়ণ ও অকল্যায়ণ করার ক্ষমতা রাখে না,নিশ্চয়ই আপনি ও আপনার জাতিকে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত দেখছি। তখন তার পিতা বললো, হে ইব্রাহিম, তুমি কি আমাদের উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? তুমি যদি বিরত না হও, তাহলে আমি অবস্যই প্রাস্তর আঘাতে তোমার প্রাণ নাশ করবো।(সূরা মারিয়াম৪৬)

🥀৫] 👉 নবী শুয়াইব আঃ এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন-“আমি মাদইয়ানবাসীদের কাছে তাদের ভাই শুয়াইবকে পাঠিয়েছিলাম। (সে বলেছিল) ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ নেই, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমাদের কাছে তো স্পষ্ট নিদর্শন এসে গেছে, কাজেই মাপ ও ওজন সঠিকভাবে কর, লোকেদেরকে তাদের প্রাপ্য বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করো না, পৃথিবীর সংশোধনের পর তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি কর না, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা সত্যিই মু’মিন হয়ে থাক।’”(সূরা আরাফ৮৫)

🥀৬] 👉নবী ইয়াকুব আঃ এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- যখন ইয়াকুবের মৃত্যু এসে পৌঁছেছিল? তখন সে তার পুত্রদেরকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আমার পরে তোমরা কার উপাসনা করবে’? পুত্রগণ উত্তর দিয়েছিল, ‘আমরা আপনার এবং আপনার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্যের উপাসনা করব, যিনি অদ্বিতীয় উপাস্য এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পিত।”(সূরা বাক্বারা১৩৩)

🥀৭] 👉 নবী ইউসুফ (আঃ) এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- হে কারা’গারের সঙ্গীদ্বয়? পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল? নাকি পরাক্রমশালী এক আল্লাহ্?(সূরা ইউসুফ৩৯)

🥀৮] 👉নবী ঈষা (আঃ) এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- তিনি ঈষা আরো বলেন, নিশ্চয়’ই আল্লাহ আমার ও পালনকর্তা, তোমাদেরও পালনকর্তা।
এত’এব তোমরা কেবল মাত্র তার ইবাদত করো, এটাই সরল সঠিক পথ।(সূরা মারইয়াম৩৬)

🥀৯] 👉নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর দাওয়াত প্রসঙ্গে-
✔️👉আল্লাহ বলেন- বলুন! তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য, তিনি ছাড়া মহা দয়ালু কেউ নেই।(সূরা বাক্বারা১৬৩) বলুন! আমি তো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার কাছে ওহী করা হয়,তোমাদের ইলাহ একক ইলাহ, সুতরাং যে তার পালনকর্তার সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।(সূরা কাহফ১১০)
বলুন! আমাকে তো এই আদেশ’ই দেওয়া হয়েছে, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য, সুতরাং তোমরা কি (এক ইলাহের কাছে) আত্মসমর্পণ’কারি(বান্দা) হবে না?(সূরা আম্বিয়া১০৮) (কাফিররা এর জবাব দিয়ে বলেছিলো) সে(মুহাম্মদ) কি আমাদের বহু ইলাহের পরিবর্তে একক ইলাহে সাব্যস্ত করে দিয়েছে? নিশ্চয়’ই এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার।(সূরা সাদ ৫)

Courtesy Anamul Hoque Anamul fbfd

আল কুরআন কাদের উপর নাযিল হয়েছে:

💎 আল কুরআন কাদের উপর নাযিল হয়েছে:

রসূলের নামে প্রচলিত হাদীছের মহেপড়ে আর কতকাল আল কুরআনের প্রতি ঘৃণ্যতা প্রশ্ন করে প্রতিরোধের চেষ্টা করবে।

কুরআন শেখার কথা বলে মাদ্রাসাগুলো যুগের পর যুগ ধরে সাধারন ধর্মভীরু মানুষের নিকট থেকে দান-খয়রাত নিয়ে থাকে (সেই দান এখন বিশাল মহীরুহে পরিণত হয়েছে; তারা এখন আর আগের মত দরিদ্র জীবন-যাপন করে না; আমজনতাকে হুমকি-ধমকিও দেয়)। বাস্তবে তারা কুরআন পড়ে না; আর কাজেই সমাজে এসে তারা মানুষকে কুরআন না শিখিয়ে ইসলামের নামে ইতিহাসের আবর্জনা উপহার দেয়।

তাদেরই একজন আমাকে প্রশ্ন করেছে – “আপনার নিকট প্রশ্ন হাদীস ছাড়া কুরআন আল্লাহর নিকট থেকে নাজিল হয়েছে প্রমাণ দিন”।

কুরআন থেকে এর প্রচুর জবাব দেয়ার আছে। আমি সংক্ষেপে লিখেছি –

الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য। -২:২

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
নিঃসন্দেহে আমরাই স্মারকগ্রন্থ (যিকর বা কুরআন) অবতারণ করেছি, আর আমরাই তো এর সংরক্ষণকারী। -১৫:৯

لَقَدْ جَاءَكَ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَلَا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
অবশ্যই এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তোমার প্রভুর নিকট থেকে তোমার নিকট সত্য বিষয় এসেছে। কাজেই তুমি কস্মিনকালেও সন্দেহকারী হয়ো না। -১০:৯৪

وَإِنَّهُ لَتَنْزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ
এই কুরআন তো বিশ্ব-জাহানের পালনকর্তার নিকট থেকে অবতীর্ণ। -২৬:১৯২

تَنْزِيلُ الْكِتَابِ لَا رَيْبَ فِيهِ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ * أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ بَلْ هُوَ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ
এ কিতাবের অবতরণ বিশ্ব পালনকর্তার নিকট থেকে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তারা কি বলে, এটা সে মিথ্যা রচনা করেছে? বরং এটা তোমার প্রভুর তরফ থেকে সত্য। -৩২:১-৩

وَيَرَى الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ الَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ هُوَ الْحَقَّ وَيَهْدِي إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, তারা তোমার প্রভুর নিকট থেকে অবর্তীর্ণ কুরআনকে সত্য জ্ঞান করে এবং এটা মানুষকে পরাক্রমশালী, প্রশংসার্হ আল্লাহর পথ প্রদর্শন করে। -৩৪:৬

وَلَقَدْ جِئْنَاهُمْ بِكِتَابٍ فَصَّلْنَاهُ عَلَى عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আমরা তাদের কাছে গ্রন্থ পৌছিয়েছি, যা আমরা স্বীয় জ্ঞানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি, যা পথপ্রদর্শক এবং মুমিনদের জন্যে রহমত। -৭:৫২

لَكِنِ اللَّهُ يَشْهَدُ بِمَا أَنْزَلَ إِلَيْكَ أَنْزَلَهُ بِعِلْمِهِ وَالْمَلَائِكَةُ يَشْهَدُونَ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
আল্লাহ তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তিনি যে তা সজ্ঞানেই করেছেন, সে ব্যাপারে আল্লাহ নিজেও সাক্ষী এবং ফেরেশতাগণও সাক্ষী। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। -৪:১৬৬

فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّمَا أُنْزِلَ بِعِلْمِ اللَّهِ وَأَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَهَلْ أَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
অতঃপর তারা যদি তোমাদের কথা পুরণ করতে অপারগ হয়; তবে জেনে রাখ, এটি আল্লাহর এলম দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে; আরও একীন করে নাও যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। অতএব, এখন কি তোমরা আত্মসমর্পন করবে? -১১:১৪

পর্ব দুই
উপরের জবাব লেখার পর, আরও একটি জাহেল সওয়াল করেছে- “এই আয়াতগুলো কি আপনার উপর নাযিল হয়েছে না কি মুহাম্মাদ সাঃ এর উপর?”

নিচে আগেই প্রস্তুতকৃত জবাব দেয়া হল।

শেষনবীর সাথে সাথে আমাদের সকলের উপরও কুরআন নাযিলকৃত (আনঝালনা ইলাইকা…. আনঝালনা ইলাইকুম)!


আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সকল আসমানী বাণী সুনির্দিষ্ট নবীগণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মানবসমাজের সকলের প্রতিই নাযিলকৃত – এ বিষয়ে কুরআনে পর্যাপ্ত দলিল-প্রমাণ বিদ্যমান। এর অন্যতম উদ্দেশ্য যাতে করে উত্তরাধিকারিত্ব আর দায়িত্বশীলতার প্রশ্নে সকলকে জবাবদিহিতার জায়গায় উপনীত করা যায়।

এতদ্বিষয়ে দীর্ঘ রচনা লেখার সুযোগ থাকলেও আমরা এখানে কতিপয় আয়াত উল্লেখ করে বুঝতে চেষ্টা করব যে, কুরআন কেবলমাত্র শেষ নবীর উপরই নাযিলকৃত মহাগ্রন্থ নয়, তাঁর সাথে আমাদের সকলের উপর নাযিলকৃত আল্লাহর বিধানাবলী।

এক.
খাতামুন নাবিয়্যিনকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে (আনঝালনা ইলাইকা/’আলাইকা …)

وَلَقَدْ أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ آَيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَمَا يَكْفُرُ بِهَا إِلَّا الْفَاسِقُونَ
আমরা তোমার প্রতি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি। অবাধ্যরা ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না। -২:৯৯

إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ
নিশ্চয়ই আমরা তোমার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করো, যা আল্লাহ তোমাকে হৃদয়ঙ্গম করান। -৪:১০৫

إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ فَاعْبُدِ اللَّهَ مُخْلِصًا لَهُ الدِّينَ
আমরা তোমার প্রতি এ কিতাব যথার্থরূপে নাযিল করেছি। অতএব, তুমি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করো। -৩৯:২

أَوَلَمْ يَكْفِهِمْ أَنَّا أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ يُتْلَى عَلَيْهِمْ
এটাকি তাদের জন্যে যথেষ্ট নয় যে, আমরা তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। -২৯:৫১

إِنَّا أَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ لِلنَّاسِ بِالْحَقِّ
নিঃসন্দেহে আমরা তোমার কাছে মহাগ্রন্থ অবতারণ করেছি মানবজাতির জন্য সত্যের সাথে। -৩৯:৪১

দুই.
আবার একই বক্তব্য আমাদেরকে তথা মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করেও বহুবার, বহুভাবে বলা হয়েছে (আনঝালানা ইলাইকুম …)। এখানে কতিপয় দৃষ্টান্ত পেশ করা হল।

يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمْ بُرْهَانٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُبِينًا
হে মানবকুল! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো অবতীর্ণ (নাযিল) করেছি। -৪:১৭৪

لَقَدْ أَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ كِتَابًا فِيهِ ذِكْرُكُمْ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে অবতারণ (নাযিল) করেছি এক মহাগ্রন্থ যাতে রয়েছে তোমাদের যিকর (কথা); তোমরা কি তবে বুঝবে না? -২১:১০

وَلَقَدْ أَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ آَيَاتٍ مُبَيِّنَاتٍ وَمَثَلًا مِنَ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ وَمَوْعِظَةً لِلْمُتَّقِينَ
আর আমরা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ, তোমাদের পূর্ববর্তীদের কিছু দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহ ভীরুদের জন্যে দিয়েছি উপদেশ। -২৪:৩৪

এরূপ আরও আছে-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের রব্বের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুমিনদের জন্য। -১০:৫৭

আর মুমিনগণ রাসূলের মাধ্যমে তাদের সবার প্রতি নাযিলকৃত সেই কিতাবে পূর্ণ বিশ্বাস পোষণ করে, তার স্বীকৃতিও কুরআনে আছে।

وَالَّذِينَ آَمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآَمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِنْ رَبِّهِمْ
আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে, আর বিশ্বাস করছে তাতে যা মুহাম্মদের কাছে অবতীর্ণ হয়েছে- আর সেটিই হচ্ছে তাদের প্রভুর কাছ থেকে আগত মহাসত্য। -৪৭:২

কুরআনের প্রতি যে প্রেম – ভালোবাসা – ভক্তি থাকার কথা ছিল, তা আমরা অপাত্রে দান করে গর্হিত পরকীয়া কর্মে লিপ্ত আছি বিধায় কুরআনের এই শাশ্বত সত্যগুলো আমাদের চোখে পড়ছে না – এটা অত্যন্ত আফসোস আর পরিতাপের বিষয়।

কুরআন নাযিলের এই গৌরবের ক্ষেত্রে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ তা’য়ালা এই যে আমাদেরকেও যুক্ত করেছেন, তা আমাদের মাথায় থাকতে হবে – তাহলে যেমন আমরা তার জন্য গর্ব ও আনন্দ অনুভব করব, তেমনি কুরআনের যথার্থ উত্তরাধিকারিত্ব গ্রহণের দায়িত্ববোধও আমাদের মাঝে তৈরি হবে, ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ!

Sourse.fbfd

বুখাৰি সংকলনৰ ইতিহাস

বুখাৰি সংকলনৰ ইতিহাস

ইমাম বুখাৰি ৰহ: এ বহু কষ্ট স্বীকাৰ কৰি যি হাদিছৰ কিতাপ সংকলন কৰিছিল , সেইটো আছিল পেপিৰাছ কাগজত লিখা বিশাল আকাৰৰ স্তূপ। বৰ্তমানৰ আধুনিক ছপাখানাত ক্ষুদ্ৰ আখৰেৰে ছপানোৰ পিছতো বুখাৰী চৰিফৰ বিশাল দহ খণ্ড হোৱাত আমাৰ এটা অনুমান কৰা সহজ হয় যে , সেই জামানাত ছপাখানা নোহোৱাকৈ সুলভ কাগজ নথকাত হাতে লিখা পেপিৰাছ কাগজত লিখা বুখাৰি ছৰিফৰ আকাৰ তেনেহলে কিমান ডাঙৰ আছিল ⁉️ ইমান ডাঙৰ কিতাপ এখন ইচ্ছা কৰিলেই এটা স্থানৰ পৰা আন এটা স্থানলৈ সহজে স্থানান্তৰ কৰাটো আছিল অত্যন্ত কঠিন কাম।

সেইটো যুগত ইচ্ছা কৰিলেই কোনোবাই বুখাৰি চৰিফৰ কপি কৰিব পৰা নাছিল। কিয়নো ইমাম বুখাৰী ৰহ: য়ে সেই একমাত্ৰ কিতাপৰ পৰা শ শ ছাত্ৰক হাদিছৰ শিক্ষা দিছিল। ইমাম বুখাৰী ৰহ: ছাত্ৰ সকলক এইদৰে হাদিছৰ শিক্ষা দিছিল যে – শ শ ছাত্ৰ ক্লাছত কাগজ কলম লৈ প্ৰস্তুত হৈ – ইমাম বুখাৰীৰ বৰ্ণনা কৰা হাদিছ শুনি লগে লগেই কপি কৰিছিল। ⚠️ ইমাম বুখাৰিয়ে এটা হাদিছ দুইবাৰ কোৱা নাছিল; কাৰণ ইমান ডাঙৰ হাদিছৰ কিতাপৰ হাদিছ পাঠ কৰি শিক্ষা দিয়াৰ বাবে বহুত সময়ৰ প্ৰয়োজন আছিল। সেইবাবে তেওঁ হাদীছৰ কিতাপৰ পৰা পৰ্যায়ক্ৰমে শতশত ছাত্ৰৰ মাজত প্ৰতিদিন প্ৰতেক হাদিছ এবাৰেই বৰ্ণনা কৰিছিল। প্ৰতিজন ছাত্ৰই ইমাম বুখাৰী ৰহ: ৰ মুখৰ পৰা এবাৰ কৰি শুনিয়েই কপি কৰিছিল। ⚠️ যিহেতু সেই সময়ত 🎤 মাইক/ স্পিকাৰ নাছিল, খালি গলত এবাৰ কৰি বৰ্ণনা কৰা হাদিছ শ শ ছাত্ৰৰ মাজত সকলোৱেই স্পষ্ট শুনিবলৈ পোৱাৰ সুযোগ পোৱা নাছিল। সেয়ে স্পষ্ট – অস্পষ্ট যি শুনিছিল সেইদৰেই লিখিছিল। আকৌ শ শ ছাত্ৰৰ মাজত হাদিছৰ ক্লাছত বক্তিগত সমস্যাৰ কাৰণে সকলোৰে পক্ষত প্ৰতিদিনত উপস্থিত হৈ হাদিছ কপি কৰা সম্ভৱপৰ নাছিল। কেতিয়াবা শুনাৰ ভূলত, কেতিয়াবা অনুপস্থিত থকাৰ কাৰণত শশ ছাত্ৰৰ বুখাৰী চৰিফৰ শুনি শুনি নিজৰ কাগজত/বহীত কপি কৰা হাদিছবিলাক- ইমাম বুখাৰী ৰহ: ৰ সংকলিত হাদিছৰ কিতাপৰ হুবহু কপি নহৈ তেতিয়াই গড়মিল হৈ যায়। 💥ইমাম বুখাৰী ৰহ : এ একেলেথাৰিয়ে আঠ বছৰ ছাত্ৰসকলক হাদিছৰ শিক্ষা দিছিল। কোনো ছাত্ৰয়েই ক্লাছত ইমাম বুখাৰী ৰহ: ৰ মুখত এটা হাদিছ দুইবাৰ শুনা নাছিল #আল_ফিৰাব্ৰিৰ বাহিৰে।🔴 ইমাম বুখাৰী ৰহ : ৰ শশ ছাত্ৰৰ মাজত পৰৱৰ্তী শিক্ষাৰ প্ৰজন্মত কেৱলমাত্ৰ পাঁচজন ছাত্ৰই এই কামত সফল হৈছিল। সিহঁত হ'ল---- 1♨️ আল ফিৰাব্ৰি । 2♨️ইব্রাহিম বিন মাকাল। 3♨️হাম্মাম বিন শাকিৰ। 4♨️আবু তালহা মনছুৰ। 5♨️হুছেইন বিন ইছমাইল।

⚠️এই পাঁচজনৰ বুখাৰী চৰিফৰ কপি কৰা কিতাপবিলাকো হেৰাই গৈছে, কতো সংৰক্ষিত নাই।
🚫আকৌ এই পাঁচজনৰ ভিতৰত আল ফিৰাব্ৰিৰ মুখত শুনি শুনি নিজৰ নিজৰ বহীত কপি কৰিছিল। আল ফিৰাব্ৰিৰ সকলোতকৈ বিখ্যাত ছাত্ৰ জনৰ নাম আছিল #আলখুশায়মানি । এই আল খুশাইমানিসহ আল ফিৰাব্ৰিৰ অন্যান্য কিছু ছাত্ৰৰ নিজ হাতে লিখা বুখাৰী চৰিফৰ মেনাসক্ৰিপট বৰ্তমান সংৰক্ষিত আছে। আল ফিৰাব্ৰিৰ বাহিৰেও ইমাম বুখাৰী ৰহ : ৰ বাকি চাৰিজন ছাত্ৰৰ পৰৱৰ্তী শিষ্য সকলৰ কিছু মেনাসক্ৰিপট বৰ্তমানে সংৰক্ষিত আছে যদিও আল ফিৰাব্ৰিৰ ছাত্ৰ সকলৰ কিতাপবিলাকৰ তুলনাত বাকি সকলৰ কিতাপৰ কদৰ কম। কিন্তু আল ফিৰাব্ৰিৰ ছাত্ৰসকলৰ কিতাপ বিলাকো নিৰ্দিষ্ট ভাবে সুস্পষ্ট কিতাপ নাছিল। কপি কৰা কিতাপবোৰ বিশাল আছিল যাৰ বাবে পাৰ্ট বাই পাৰ্ট ইফালে-সিফালে সিচঁৰিত হৈ আছিল। হাদিছ বিলাক বুজিবৰ বাবে একেলগে সংকলনৰ উদ্দেশ্যত আৰু পাচশত বছৰ পিছত আল খুশাইমানি , ইউনানিসহ আল ফিৰাব্ৰিৰ প্ৰায় এডোজন ছাত্ৰৰ লিখা বুখাৰী চৰিফৰ ওপৰত ভিত্তি কৰি সত্তৰৰৰো 70 বেছি বুখাৰী চৰিফৰ হাদিছৰ বাখ্যাৰ কিতাপ (শাৰহ বা তাফছীৰ) লিখা হৈছিল। ⚠️এই বাখ্যা বিলাকেই আধুনিক বুখাৰী চৰিফৰ ভিত্তিমূল। এইবিলাকৰ ভিতৰত ইমাম ইবনে #হাজৰআছকালানৰ লিখা –“#ফাথউলবাৰী ” বাখ্যাৰ কিতাপটোয়েই আলেমসকলৰ সৰ্বাধিক স্বীকৃত আৰু শুদ্ধ বুলি পৰিচয় পাইছে। ইমাম আল-আছকলানীয়ে কৈছে যে আল-ফিৰাব্ৰিয়ে ইমাম আল-বুখাৰী ৰহ: ৰ সন্মুখত দুবাৰকৈ বুখাৰী আল-শ্বৰীফৰ কথা শুনিছিল কাৰণ তেওঁ আল-ফিৰাব্ৰিৰ ছাত্ৰ আল-খুছাইমানীৰ মূল স্ট্যান্ডার্ড গ্ৰন্থ হিচাপে লৈছিল আৰু ইমাম আছকালানীয়ে তেওঁৰ "ফাথ উল বাৰী" নামৰ কিতাপখনত আল ফিৰাব্ৰিৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰীসকলে লিখা বুখাৰী কিতাপৰ মাজৰ পাৰ্থক্যও লক্ষ্য কৰিছে। ইয়াত মন কৰিবলগীয়া যে ইমাম আছকালানীয়ে আল-খুছাইমানীৰ কিতাপখনক মানদণ্ড হিচাপে লৈছিল, আনহাতে তেওঁলোকৰ জীৱনকালৰ মাজত পাৰ্থক্য আছিল প্ৰায় পাঁচশ বছৰ। এই পাঁচশ বছৰত আল-খুছাইমানীৰ গ্ৰন্থখনৰ হাত সলনি হৈছে, আৰু এই পাঁচশ বছৰৰ ভিতৰত কোনেও ইচ্ছাকৃতভাৱে বা অনিচ্ছাকৃতভাৱে ইয়াক যোগ কৰা নাই বুলি নিশ্চিতভাৱে ক’ব নোৱাৰি।

আল ফিৰাব্ৰিৰ ছাত্ৰ

কিছু সম্পাদনাৰ প্ৰমাণ মুস্তামালিৰ নিজৰ স্বীকাৰোক্তিত পোৱা যায়। কিন্তু আধুনিক বুখাৰী শ্বৰীফৰ ৯০% ইমাম আছকালানীয়ে ৰচনা কৰা “ফাথ উল বাৰী” গ্ৰন্থখনৰ স্ট্যান্ডার্ড টেক্সটৰ পৰা লোৱা হৈছে।

ইমাম বুখাৰী (ৰহ:) আৰু তেওঁৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰীৰ কিতাপবোৰো চিৰদিনৰ বাবে হেৰাই গৈছে। ইমাম বুখাৰীৰ পৰা তেওঁৰ ছাত্ৰ আল ফিৰাব্ৰিৰ বুখাৰী শ্বৰীফৰ কপি আৰু আল ফিৰাব্ৰিৰ পৰা তেওঁলোকৰ ছাত্ৰ আল খুছাইমানীলৈ বুখাৰী শ্বৰীফৰ কপি কৰাৰ সময়ত কিমান পৰিৱৰ্তন হৈছে সকলো কিতাপ যে চিৰদিনৰ বাবে হেৰাই গৈছে সেইটো পৰীক্ষা কৰাৰ কোনো উপায় নাই। যদিও ইমাম বুখাৰীৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰীসকলে পৰৱৰ্তী প্ৰজন্মৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰীৰ বাবে লিখা কিতাপৰ কপি আছে, তথাপিও সেই কপি কৰা কিতাপবোৰৰ মাজত বহুত পাৰ্থক্য আছে। আৰু আধুনিক বোখাৰী শ্বৰীফ সেই কিতাপবোৰৰ আধাৰত সংকলিত কৰা হৈছে যিবোৰ বহুত বেলেগ। তেতিয়াও সেই কিতাপবোৰ লিখাৰ প্ৰায় পাঁচশ বছৰৰ পাছত। সেই যুগবোৰত মাইক বা চাউণ্ড বক্স নথকাত

একে সময়তে এইটোও নিশ্চিতভাৱে ক’ব নোৱাৰি যে একে সময়তে শতাধিক ছাত্ৰ-ছাত্ৰীৰ সন্মুখত বর্ণিত হাদীছটো সকলোৱে স্পষ্টকৈ শুনিছে৷ যিহেতু হাদীছ এটা মাত্ৰ এবাৰহে বর্ণিত হৈছিল, কোনোবাই ভুল কৰিলে বা অস্পষ্টভাৱে শুনিলে দ্বিতীয়বাৰ শুনিবলৈ কোনো সুযোগ নাথাকিল। তদুপৰি ব্যক্তিগত সমস্যাৰ বাবে শতাধিক ছাত্ৰ-ছাত্ৰীয়ে দৈনিক হাদীছৰ ক্লাছত উপস্থিত নোহোৱাৰ বাবে হাদীছ নকল কৰা ছাত্ৰ-ছাত্ৰীৰ ক্ৰমিক নম্বৰত পাৰ্থক্য দেখা গৈছিল। মাইক আৰু শব্দ বক্সবিহীন যুগত শতাধিক ছাত্ৰই ইমাম বুখাৰী (ৰাঃ)ৰ মুখত এটা হাদীছ খালী ডিঙি নকল কৰাটো স্বাভাৱিক। আকৌ আল-ফিৰাবৰিৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰী সকলে ইমাম বুখাৰী (ৰাঃ) ৰ ছাত্ৰ-ছাত্ৰী সকলে তেওঁলোকৰ গুৰুসকলে বর্ণিত হাদীছ শুনি নকল কৰা নাছিল নেকি?

ইমাম বুখাৰী (ৰহ) ৰ দ্বাৰা 1800 হাদীছৰ বর্ণনাকৰ চৰিত্ৰৰ ওপৰত এখন সুকীয়া গ্রন্থ ৰচনা আছে। সেই গ্ৰন্থখনত ইমাম বুখাৰীয়ে (ৰহ:) নিজেই প্ৰায় এক ডজন হাদীছৰ বর্ণনাকক অবিশ্বাস্য আৰু অসত্য বুলি ঘোষণা কৰিছে। কিন্তু আধুনিক বোখাৰী শ্বৰীফত প্ৰত্যেকটো অবিশ্বাস্য আৰু অপ্ৰামাণ্য ৰাবীয়ে বর্ণনা কৰা হাদীছটো কোনো পৰীক্ষণ নোহোৱাকৈ গ্রন্থখনত সংকলিত কৰা হৈছে। আধুনিক বুখাৰী শ্বৰীফৰ হাদীছবোৰ যে মূল বুখাৰী শ্বৰীফৰ বিকৃতি, তাৰেই আটাইতকৈ ডাঙৰ প্ৰমাণ।
বুখাৰী শ্বৰীফ আৰু মুছলিম শ্বৰীফৰ হাদীছৰ কিতাপত পণ্ডিতসকলৰ অপপ্ৰচাৰৰ বাবে কোনো ভুৱা হাদীছ নাই বুলি আমাক বুজায়! বোখাৰী শ্বৰীফ আৰু মুছলিম শ্বৰীফক লৈ পণ্ডিতসকলৰ অপপ্ৰচাৰ এনেধৰণৰ-⚡⚡

১ / ইমাম বুখাৰী আৰু ইমাম মুছলিমে কেতিয়াও দুৰ্বল ৰবীৰ পৰা কোনো হাদীছ সংগ্ৰহ কৰা নাছিল।

২ / কোনো হাদীছৰ পণ্ডিতে কেতিয়াও বুখাৰী শ্বৰীফ আৰু মুছলিম শ্বৰীফৰ হাদীছৰ বিষয়ে অভিযোগ কৰা নাই।

৩ / ইমাম বুখাৰী আৰু ইমাম মুছলিম (ৰাঃ) য়ে কোনো ভুল কৰিছে বুলি কোনো ইছলামিক পণ্ডিতে অভিযোগ কৰা নাই।

ইমাম শ্বাখাবী তেওঁৰ “ফাথ উল মুগীছ” নামৰ কিতাপখনৰ “ইমাম” বুখাৰী আৰু ইমাম মুছলিমে অধ্যায়টোত লিখিছে যে বুখাৰী শ্বৰীফৰ ৪৩৫ গৰাকী বক্তাৰ ভিতৰত 80 গৰাকী দুৰ্বল বক্তা আৰু মুছলিম শ্বৰীফৰ 620 গৰাকী বক্তাৰ ভিতৰত ১৬০ গৰাকী দুৰ্বল বক্তা আজি আমি দেখা বুখাৰী শ্বৰীফৰ আধুনিক ১০টা খণ্ড মূলতঃ এই কিতাপ “ফাথ উল বাৰী”ৰ পৰা সংকলিত কৰা হৈছিল।ইমাম আছকালানী ইমাম বুখাৰী (ৰহ) নহয়। বুখাৰী শ্বৰীফৰ কিছুমান হাদীছৰ ওপৰত ইমাম আছকালানীয়ে কি ধাৰাভাষ্য আগবঢ়াইছিল সেই বিষয়ে পাঠকৰ বাবে জনাটো সম্ভৱ নহয়।ইমাম আছকালানীৰ বাহিৰেও আন বহুতো বিশিষ্ট পণ্ডিত বুখাৰীয়ে শ্বৰীফৰ হাদীছক সমালোচনা কৰে। আনকি ইমাম গজ্জালী (ৰঃ) আৰু বুখাৰীয়ে শ্বৰীফৰ হাদীছক সমালোচনা কৰিছে।
গতিকে বুখাৰী শ্বৰীফ আৰু মুছলিম শ্বৰীফৰ হাদীছৰ শুদ্ধতা সন্দৰ্ভত পণ্ডিতসকলে যি মিছা দাবী কৰিছে সেয়া শুদ্ধ নহয়। আধুনিক বুখাৰী শ্বৰীফত ইমাম আছকালানীৰ সকলো ব্যাখ্যা বাদ দি আধুনিক বুখাৰী শ্বৰীফ সংকলিত কৰা হৈছে, যিটো বুখাৰী শ্বৰীফৰ হাদীছৰ ব্যাখ্যাত ইমাম আছকালানীয়ে সন্দেহৰ সৈতে সমালোচনা কৰিছে। যদিও বৰ্তমানৰ বোখাৰী শ্বৰীফ ইমাম বুখাৰী (ৰহ)ৰ নামেৰে নামাকৰণ কৰা হৈছে, তথাপিও ইমাম বুখাৰী (ৰহ) য়ে সংগ্ৰহ কৰা হাদীছ পুথিৰ পৰা ইয়াক পোনপটীয়াকৈ সংকলিত কৰা হোৱা নাই।

ৰাছুলুল্লাহ চাল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লামৰ সময়ত হাদীছ লিখা নিষিদ্ধ আছিল।ইমাম বুখাৰীয়ে মৃত্যুৰ ২৫০ বছৰৰ পিছত হাদীছ সংগ্ৰহ কৰিছিল।সেই সময়ত মাতৃ আয়েছা জীয়াই নাছিল।
ইমাম বুখাৰীয়ে নিজেই হাদীছ সমূহৰ সত্যতা সম্পৰ্কে সন্দেহ কৰিছিল।
ইমাম হুছেইন আ: শ্বহীদ হোৱাৰ পিছত ইজিদে তেওঁৰ অনুগামীসকলৰ সৈতে নবীজীৰ নামত মিছা হাদীছ লিপিবদ্ধ কৰে। প্ৰতিবাদ কৰাসকলক গোপনে হত্যা কৰা হৈছিল।
🔴🔴🔴
💥💥💥⚠️⚠️⚠️
ইমাম বুখারী
পুরো ভিডিওটা দেখে ইমাম বুখারী এর ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ইমাম বুখারী (জন্মঃ ১৯৪ হিঃ-মৃত্যুঃ ২৫৬ হিঃ ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরো নাম হলো মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ (আরবি/ফার্সি ভাষায়: محمد بن اسماعيل بن ابراهيم بن مغيره بن بردزبه بخاری), একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি “বুখারী শরীফ” নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়। তার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস তার উপাধি। বুখারা তার জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়। তিনি স্বপ্নযোগে রাসুলুল্লাহ (স.) সাথে দেখা করে হাদিসের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন (১ মিনিটের ভিডিও ক্লিপ দেখে নিন)।
তার নাম উপনাম জেনে তো আমি হা হয়ে গেলাম। আমাদের রাসুলুল্লাহ (স.) নামের সাথে পুরোই মিল। পূর্বপুরুষদের নামেও চমক দেখলাম। ইশশশ… কুর’আনে আল্লাহ কেন যে রাসুলুল্লাহ (স.) কে শেষ নবী বললেন! তা না হলে তো আমরা আরেকজন নবী পেয়ে যেতাম (নাউযুবিল্লাহ)।

By সত্যৰ সন্ধান fb

আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহর পুরুষ্কার লাভের আশায় আমরা কত জিকির, নফল নামাজ,কত বই বা বক্তার থেকে আমল করে থাকি কিন্তু আল্লাহর বই খুলে দেখি না আল্লাহ কোন কাজের জন্য কাকে পুরুষ্কার দিবেন।

খোটা না দিয়ে আল্লাহর বলা পথে ব্যয়কারীকে আল্লাহ পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা,আয়ত ২৬২)আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহ ব্যক্তিকে দান করতে বলছেন,কোন মাধ্যমকে নয়।এই লিস্টের প্রথমে হল পিতা-মাতা,দ্বিতীয় হল আত্মীয়- স্বজন,তৃতীয় এতিম,এরপর অভাবগ্রস্ত ও শেষ মুসাফির দের জন্য।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৫)ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তি ও দাসমুক্তির জন্য।(সুরা ৯ আয়াত ৬০)এর বাইরের অন্য কোন কোন পথে ব্যয় করাকে কেউ যদি আল্লাহর পথে ব্যয় বলে তা কি আল্লাহর পথে হবে?

আপনার পিতা মাতা ও আত্নীয় স্বজনই অভাবগ্রস্থ ও এতিম হতে পারে মানে প্রথম ও দ্বীতিয় লিষ্টের ব্যক্তিরাই ৩য় ও ৪র্থ লিষ্ট কাভার করে।জিবনে কখোন কোন ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তির ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন?কোথাও লোন না পেয়ে সুদে ঋণনেয়া মানুষগুলো যে দাসত্বের জীবনে যাপন করছে,কখোন তাদের তাদের এ দাসমুক্তির চেষ্টা করেছেন?নাকি শুধু মসজিদ -মাদ্রাসায় দান করে নিজের গুনাহ মাফের চিন্তা করে চোখ ভিজিয়েছেন?কখনো কি ভেবে দেখেছেন এ পথ ব্যায়ে আল্লাহ গুনাহ মাফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিনা?

পিতা-মাতা,আত্নীয়-স্বজন,এতিম,অভাবী,ঋণগ্রস্থ,
দাসমুক্তি,মুসাফির উনাদের জন্য ব্যয় করতে হবে খোটা দেয়া ছাড়া।জ্বি এটাই আল্লাহর পথে ব্যয়।মসজিদ, মাদ্রাসায় দানের কথা কুরআনে কোথাও বলা নেই।এর বাইরে আল্লাহর নামে কেউ টাকা উত্তলন করলে আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি অভাবমুক্ত।(সুরা বাকারা আয়াত ২৬৩)

এই পথে যারা ব্যয় করে আল্লাহ তাদের প্রাচুর্য বাড়িয়ে দেন।কিন্তু আমরা এগুলো না শুনে শুনেছি মসজিদ মাদ্রাসায় দান করলে ৭০ গুন সোওয়াব।ধর্ম ব্যবসায়ীরাও মাদ্রাসার ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে মসজিদ মাদ্রাসার নামে হ্যান্ড মাইক দিয়ে ওয়াজের সুরে দলে দলে এসে টাকা তুলে এবং এমনভাবে দানের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করে,মানুষ দিতে বাধ্য হয়,যেহেতু জীবনের গুনাহ মাপ, কবরের আজাব মাফ,চৌদ্দগুষ্টির জান্নাতের গ্যারান্টি ইত্যাদি।সমস্ত জীবন এসব রাস্তায় ব্যয় করে দারিদ্র্যতা, বেকারত্ব দূর করতে পেরেছেন?হয়নি কেননা এটা আল্লাহর বলা পথ নয়।

তো কেমন বা কি পরিমান ব্যয় করতে হবে?কখন ব্যয় করতে হবে?

আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আল্লাহ ব্যয় করতে বলে ছেন,বছরের কোন নিদিষ্ট সময়ে ব্যয় করতে বলেননি, সবসময় ই বলছেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৯)কিন্তু আমরা বছরের একটা নিদিষ্ট সময়,নিদিষ্ট পরিমান ব্যয় করি বাকিটা সঞ্চয় করি।

আর আল্লাহ বলেন,জাহান্নাম তাদের ডাকছে যারা সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখে।আর আমরা চিন্তা করি বৃদ্ধ অবস্থায় বা ভবিষৎতে কি হবে।আর আল্লাহ বলেন তাদের কোন ভয় নেই,চিন্তা ও নেই যারা দিনে রাতে প্রকাশ্যে ও গোপনে তাদের সম্পদ ব্যয় করে।আল্লাহ তাদের পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২৭৪)আল্লাহর এ পুরুষ্কার মোল্লারা নিজেদের স্বার্থে ঢেকে দিয়ে শয়তানি পথে ব্যয় করিয়ে আমাদের জাহান্নামী করছে,আমাদের অজ্ঞতার কারণে।

আল্লাহ বারবার আত্নীয় স্বজনে,অভাবী ও মুসাফিরকে তার হক দান করতে বলেছেন আর অপব্যায় করতে নিষেধ করছেন।(সুরা বনী ইসরাঈল আয়াত ২৬)এতিমদেরকে তাদের সম্পদ দাও।(সুরা ৪,আয়াত ২)কঠোরভাবে হুশিয়ারি দেয়া তোমরা এতিমের সম্পদের নিকট যেয়ো না।আমরা আমাদের কৃত কর্মের বা অন্যের প্রাপ্য না দেওয়ার জন্য অনুশোচনা করে মসজিদ,মাদ্রাসায় দান করে কাঁদি অথবা হজ্ব,নামাজ পড়ে মুক্তির পথ খুজি।এতে যেই ব্যক্তিকে ঠকানো হয়েছে সে নিরবে কাঁদে।

যে জাতি কোরান নিজ মাতৃভাষায় অর্থ বুঝে পাঠ করে না এবং তা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করে না,তারা এভাবেই মানব রচিত ধর্মের অনুসারী হয়ে আল্লাহর রাস্তা বাদ দিয়ে শয়তানের রাস্তায় অর্থ ব্যয় করবে।কেননা মোল্লারা কোরআন থেকে কোন বিচার ফায়সালা করে না, তারা শুধু মুখুস্থ পড়ে টাকা ইনকাম করে।আল্লাহ বলেন কোরআন অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না,তারাই কাফির।

আল্লাহ বলছেন আমি রাসূলকে এই কোরআন দ্বারা কবিতা রচনা বা কারিয়ানা শিখাইনি,বরং এ কুরআন তো মানুষের জন্যে পথ-নির্দেশ বা দিকনির্দেশনা।(সূরা ইয়াসীন – আয়াত ৬৯)

Fb-sourse:

Meaning of Salat fb bn

সালাত শব্দের 100% সঠিক বিশ্লেষণ (তথ্যসূত্র , Lughat- ul- Quran, Dictionary of Quran. Volume 1,2,3,4): “সালাত” শব্দটির আদি মূল (Prime Root) হচ্ছে “সল” (সোয়াদ-লাম), আর ত্রিআক্ষরিক মূল (Triliteral Root) হচ্ছে “সল্লি” (সোয়াদ-লাম-লাম)/(صَلِّ) যার অর্থ “অনুসরণ করা/Follow, সংলগ্ন থাকা/Adhere, সংযুক্ত করা/Link/
Connect/Attach, সম্পর্কিত কারা/Relate, নিজের মতে মত করানো/Persuade, দেখভাল করা/আলোচনা করা/Deal, সাক্ষাৎ করা/Meet, নিকটে এগিয়ে যাওয়া/Approach, সহায়তা করা/Support. যত বড় Word Engineering করেন না কেন, যত নতুন নতুন শব্দের প্রয়োজন হোক না কেন, মূলের (Root) এই অর্থের সাথেই আপনাকে সংলগ্ন থাকতে হবে।

উদাহরণসহ একটু বুঝিয়ে বলি। যেমন, “রিবা” শব্দের আদিমূল (Proto Root) (র-বা) এর অর্থ “শ্বাসরোধ/শ্বাসকষ্ট/Strangulation/Asthma”, “অতিমূল্যায়ন/Overcharging”. এখন, Medical Science এর অগ্রগতির ফলে Bronchial Asthma কে একটু আলাদাভাবে চিহ্নিত করার দরকার হলো। তো সেটিকে বলা হলো, “আর-রাবু”। মূল (Root) “রিবা” অর্থ “শ্বাসরোধ বা শ্বাসকষ্ট” থাকার কারণে এই নতুন শব্দ উৎপন্ন করা হয়েছে “মূল (Root)” এর সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে। আরবি ভাষায়, মূল অর্থ থেকে সরে গিয়ে ইচ্ছামত “নতুন শব্দ” গঠন করা যায় না। কারণ আরবী Semitic Language, আর এই Language এর Natural Feature হচ্ছে, এর সমস্ত শব্দ, তার মূল (Root) থেকেই উৎসারিত।

এবার আসল কথায় আসি। “মুসল্লী” হচ্ছে সালাত সম্পাদনকারী/Salaat Performer. এখানে, Create থেকে যেমন Creator শব্দটি উৎপন্ন হয়,, ঠিক তেমনি সলা থেকে মুসল্লী (Follow-Follower). “মুসল্লী” হচ্ছে রেসের সেই ঘোড়া, যে ঘোড়া, সাবিক/মুযাল্লী/Champion ঘোড়ার পদচিহ্ন (Footsteps/signs) কে অনুসরণ করে (Follow). তো মানুষ রূপ মুসল্লীর Lead এ আছেন আল্লাহ। অতএব, আল্লাহর Footsteps/Signs/আয়াত, যা প্রকৃতিতে (ফি’লী হাদীস হিসেবে), আর কোরআনে (ক্বওলী ও তাক্বরীরি হাদীস হিসেবে) বিদ্যমান, তাকে অনুসরণ করতে হবে।

74/42-43 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন রিযিকদাতা, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) অভাবীকে আহার দান করেন।

70/34-35 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন সমস্ত সম্পদের মালিক, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) মালিক হওয়া সত্ত্বেও সে সম্পদে অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, অর্থাৎ অন্যের অধিকার আছে বলে মনে করে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে।

প্রত্যেকটি আয়াতের আগে-পিছে পড়লে বিষয়টি Clear হবে। “মুসল্লী” শব্দটাকে ভালোভাবে না বোঝা পর্যন্ত “সালাত” জিনিসটাকে বুঝা যাবে না, কারণ মুসল্লী হচ্ছে আসল “সালাত সম্পাদনকারী” (Actual Salaat Performer)।
আরব বিশ্বে ব্যবহারিক জীবনে এখনো পর্যন্ত “সালাত” শব্দের আদিমূল (Prime Root) “সল” (পেশ/যের/যবর বিহীন সোয়াদ-লাম) দ্বারা তৈরি প্রথম শব্দ “সল” (সোয়াদ-যবর-লাম), যার অর্থ দরোজার কব্জা (Door Hinge), যেটা দরোজার Movement কে “অনুসরণ করে”, দরোজার সাথে দরোজার ফ্রেম এর “সংযোগ/সংযুক্তি/সাক্ষাৎ (Link/Attachment/Meet) ঘটায়”, “সম্পর্ক তৈরি করে” (make Relationship), দরোজা ও দরোজার ফ্রেমকে সহায়তা করে (Support), দরোজা ও দরোজার ফ্রেম এর সাথে সংলগ্ন থাকে (Adhere).

সুতরাং কোরআনের কোন আয়াত, তার পূর্বের ও পরের আয়াতগুলো দ্বারা সৃষ্ট যে “প্রেক্ষাপটে রচিত” (অর্থাৎ মুতাশাবিহাত 3:7), সেই প্রেক্ষাপটে বলে দেওয়া আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অনুসরণের “কর্তব্য” (Duty) এর সাথে “সংলগ্নতা/সংযুক্তি/সম্পর্ক/যোগাযোগ” তৈরি করাই সালাত। বলে রাখা ভালো, সলাতের পরোক্ষ অর্থ “কর্তব্য” (পেক্ষাপট অনুযায়ী), যা কোরআনের প্রত্যেকটা আয়াত এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সালাত মানে কুরআনের নিরবিচ্ছিন্ন অনুসরণ Close Following Quran .

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহর হুকুম আহকাম বা নির্দেশনাবলীকে (Orders) এক শব্দে ‘সালাত’ বলা হয়। অন্যান্য সকল নবী রাসুলদের সময়ও সালাত প্রচলিত ছিল।

সুরা হুদে দেখুন সালাতের সংজ্ঞা:(১১:৮৪-৯৫) আর আমি মাদইয়ান বাসীদের কাছে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়,তোামরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম দিও না, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কল্যাণের মধ্যে দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের উপর আশংকা করছি এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তি। হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে মাপো ও ওজন করে দিও, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তবে আল্লাহ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই। তারা বলল, হে শু’আইব! তোমার সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) কি তোমাকে নির্দেশ দেয়, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু ও ভালো। তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি তাঁর কাছ থেকে আমাকে উৎকৃষ্ট রিযিক দান করে থাকেন (তবে কি করে আমি আমার কর্তব্য হতে বিরত থাকব?) আর আমি তোমাদেরকে যা নিষেধ করি আমি নিজে তার বিপরীত করতে ইচ্ছে করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করতে চাই আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে, আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং তারই অভিমুখী। আর হে আমার সম্প্রদায়,আমার সাথে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যার ফলে তোমাদের উপর তার অনুরূপ বিপদ আপতিত হবে যা আপতিত হয়েছিল নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হুদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালেহের সম্প্রদায়ের উপর, আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে দূরে নয়। তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তার দিকে ফিরে আস, আমার রব তো পরম দয়ালু, অতি স্নেহময়। তারা বলল, হে শুআইব তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম, আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমাদের কাছে কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহর চেয়ে বেশী শক্তিশালী? আর তোমরা তাকে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে রেখেছ। তোমরা যা কর আমার রব নিশ্চয় তা পরিবেষ্টন করে আছেন। আর হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি। আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমি শুআইব ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা সীমালংঘন করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল, যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদইয়ানবাসীর পরিণাম, যেভাবে ধ্বংস হয়েছিল সামূদ সম্প্রদায়।(১১:৮৪-৯৫) তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও এবং সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) বাস্তবায়ন কর। নিশ্চয় সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব¡-কর্তব্য সমূহ) অশ্লীল, অনৈতিক ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর যিকির (নির্দেশনাই) তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। (২৯:৪৫) আর তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার নিকট যে ওহী করা হয়, তুমি তা পাঠ করে শুনাও। তার বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই এবং তিনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল তুমি পাবে না।(১৮:২৭) এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট পাঠ করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি।(১৩:৩০) আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন পাঠ করে শোনাইতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলও, আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।(২৭:৯২)আল কুরআনে বর্নিত প্রতিটা আদেশ নির্দেশনাই হচ্ছে সালাত ৷বিশ্বাসীগণ সর্বদাই সালাতে (আল্লাহর আদেশ নির্দেশ পালনে) দন্ডাায়মান থাকে (৭০:২৪)

সুরা হুদে দেখা যায়: এখানে আল্লাহর নবী শুয়াইব মাদায়েনের অধিবাসীদেরকে আল্লাহর সামাজিক হুকুম-নিয়ম-বিধান জানিয়ে দিচ্ছিলেন। জবাবে, তারা বলেছিল-হে শুয়াইব! তোমার ‘সালাত’ কি তোমাকে এই নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পূর্বপুরুষ যার ইবাদত করতো- আমরা তা ছেড়ে দেই? অথবা, আমাদের ধন-সম্পদ দিয়ে যা ইচ্ছা তাই না-করি? নিশ্চয়ই তুমি ধৈর্যশীল সৎ মানুষ। (১১:৮৭)

এই কয়েকটি আয়াতে দেখা যাচ্ছে- নবী ও রসুল শোয়াইব তাঁর জাতির লোকদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে হুকুম-নিয়ম-রীতি জানাচ্ছেন। আর সেসব নিয়ম-কানুন-হুকুম-গুলোকে তাঁর জাতির লোকজন একশব্দে ‘সালাত’ বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আর সেই ‘সালাত’ শব্দটি আল্লাহপাক কুর’আনে উল্লেখ করে জানিয়ে দিলেন। অর্থাৎ, আল্লাহ তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন ‘সালাত’ কি?

সালাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ-নিষেধ। আকিমুস সালাহ” অর্থ আল্লাহর সেই বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধকে ব্যক্তি থেকে বৈশ্বিক সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা।”যাকাহ” অর্থ পরিশুদ্ধতা অর্জন। আকিমুস সালাহ ওয়া আতুজ যাকাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা অর্জন করা। মুসল্লী” অর্থ যিনি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠাকারী। জান্নাতীগণ অপরাধীগণকে জিজ্ঞাসা করবেন- কিসে তোমাদের ‘সাকার’ এ নিক্ষেপ করলো? তারা বলবে- আমরা মুসল্লী বা আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধের অনুগামী ছিলাম না! আমরা অভাবীদের দান করতাম না! যারা অহেতুক আলোচনা করতো তাদের আলোচনায় যোগ দিতাম! আমরা কর্মফল দিবসে অস্বীকার করেছি, আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত, ফলে সুপারিশকারীদের কোন সুপারিশ কাজে আসবে না।(৭৪:৪০-৪৮) কাজেই,সবাই সাবধান হই! বেঁচে থাকতেই মৃত্যু অবধি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে পরিশুদ্ধতা অর্জন-ই জাহান্নাম থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্যগুলো জানার জন্য দেখে নিতে পারেন। (৭৪:৪২-৪৬)(১০৭:১-৭)(৭০:১৭-৩৫)(২৩:১-১১)(২৫:৬৩-৭৩)

Sourse fb https://bit.ly/3Ht99fW